জেঠিনদের বাড়ি খাওয়া দাওয়া

in Incredible India18 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল যেখানে থেমেছিলাম।ঘুরতে যাওয়া তো হলোই না। বাড়িতে বসে আছি প্রায় অনেকদিন হলো। এমন সময় দিদি আর আমি একদিন ফোনে কথা বলছিলাম। আমার বাড়ি থেকে দিদির বাড়ি হাঁটা পথে পাঁচ দশ মিনিট।

IMG-20241029-WA0007.jpg

তারপর দুজন মিলে ঠিক করলাম ,একদিন ওদের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া হবে ,আর একদিন আমাদের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া হবে। এই কথাটা যখন আমরা আমাদের পরিবারকে শেয়ার করলাম এবং আমি আমার ভদ্রলোককে শেয়ার করলাম ।রীতিমতো সবাই হাসাহাসি করতে শুরু করলো।। প্রথমে দার্জিলিং ,তারপরে মন্দারমনি, তারপরে শান্তিনিকেতন ,তারপরে মায়াপুর ঘুরে তোরা অবশেষে বাড়ি এলি। সবাই এই কথায় বলতে লাগলো।

20241201_184127.jpg

20241025_154822.jpg

সবাই আমাদের এই হতাশজনক মুহূর্তটাকে নিয়ে মজা করতে লাগল। যাইহোক প্রথমে আমরা সহেলি দির বাড়িতেই একটা খাওয়া দাওয়ার প্ল্যান করলাম।

আপনার দেখতেই পাচ্ছেন জেঠিন আর দিদি মিলে নিজের হাতে কত কত রান্না করেছিল সেদিন।
সকাল সকাল চলে গিয়েছিলাম জেঠিনদের বাড়িতে। জেঠিন আর দিদির সাথে অনেক রকম আড্ডা আর অনেক রকম গল্প। সবাই মিলে অনেক অনেক মজা করলাম । আর জম্পেশ খাওয়া দাওয়া হল। সেদিন কত কিছু রান্না করেছিল। রান্না হয়েছিল ভেজ ডাল ,পনিরের নবরত্ন ,তিন রকমের মাছ -কাতলা মাছের কালিয়া ,চিংড়ি মাছের মালাইকারি ,আর পমফ্রেট মাছ। এর সাথে ছিল চাটনি পাঁপড়।

20241025_134347.jpg

ও আর একটা কথা তো বলাই হয়নি। প্রথমবার জেঠিনদের বাড়িতে গিয়ে আমি সেদিনকে ভেটকি মাছের ফিস ফ্রাই করা শিখলাম। জেঠিন যে কি দারুন পদ্ধতিতে ভেটকি মাছের ফিস ফ্রাই করেছিল, তা আপনাদের সাথে কোন একদিন রেসিপি পোস্ট শেয়ার করব। গরম গরম ফিস ফ্রাই সস দিয়ে যা লাগছিল! যে কোন রেস্টুরেন্ট কে ফেল করে দেবে।

20241025_134405.jpg

20241025_134325.jpg

তারপরে বিকেল বেলায় অন্য প্ল্যান ছিল, তাই আমরা দুপুরবেলায় রেস্ট করে নিলাম দিদির বাড়িতেই। দিদির বাড়িতে দুটো কুকুর আছে।। একটার নাম ভুল্টু আর একটার নাম গোলু। গোলুকে যাওবা একটু আদর করা যায়। ভুল্টুর গায়ে হাত দেয়া যায় না। ও এতটা আগ্রেসিভ। ঈশানকে দেখলে তো রীতিমতো আরো চেঁচামেচি শুরু করে। গোলুকে নিয়ে আমরা খুব আদর করেছি আর ওর সাথে অনেক খেলাধুলা করেছি।

20241207_205240.jpg

যখন বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যে লাগলো ,তখন আমি আর দিদি যেমনটা ঠিক করেছিলাম ,ঠিক সেরকমভাবে আমি পোলাও রান্না করলাম ,আর দিদি মটন কষা রান্না করলো।। তারপরে বাবা বেরিয়ে সরপুরিয়া এবং কোলড্রিংস নিয়ে আসলো। এবং রাতের খাওয়া দাওয়া এসব দিয়েই শেষ হলো।

20241201_184059.jpg

20241025_203825.jpg

সত্যি বলতে সেদিনকে যা খাওয়া দাওয়া করেছি ,যে কোন বিয়ে বাড়ি বা অনুষ্ঠান বাড়ি ফেল। আমার মা এবং জেঠিন দিদি ,আমি সবাই খুব ভালো রান্না করতে পারি। আর এ কারণেই সেদিনকে রান্না গুলো এত সুন্দর হয়েছিল, যে বলে বোঝাবার নয়।

IMG-20241029-WA0010.jpg

20241025_203830.jpg

কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত সরপুরিয়া খাবারের শেষে না খেলে হয়তো এই পুরো খাওয়া-দাওয়া টা পূর্ণতা পেত না ।আর তারপরে বাবা থামসাপ দিয়ে এবং জলজিরা দিয়ে বানিয়ে ফেললো মাশালা কোক। সবাই এক একটা বড় বড় রাধুনী। আমি যে মেয়েটা মাছ খেতে ভালবাসি না ,ওদের বাড়িতে সেদিনকে তিন প্রকারের মাছ খেয়েছি। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরে পেট তো মনে হচ্ছিল ফেটে যাবে। তবে সেদিনকে সত্যিই অনেক অনেক আনন্দ হয়েছিল।

20241025_210155.jpg

IMG-20241029-WA0003.jpg

জানিনা কবে ঘুরতে যেতে পারবো। তবে বাবা মা যদি ঘুরতে না নিয়ে যায় তাহলে হয়তো দিদির বাড়িতে আমি ,আর আমার বাড়িতে দিদি ,এই করেই আমাদের পুরো বছরটা আবার কাটিয়ে দিতে হবে।। এখন ভগবান ২০২৫ এ কি লিখে রেখেছে, ভগবানই জানেন। আজকে আপনাদের সাথে কথা এখানেই শেষ করছি। সকলে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...
Loading...

🎨 Hi @isha.ish! Your creation is fantastic! 🌈

image

 17 days ago 
  • ঘুরতে যেতে না পারার আক্ষেপ যদি এতো সুন্দর খাবার দিয়ে মেটানো যায়, তাহলে এমন আক্ষেপ মাঝেমধ্যে হওয়া ভালো বলেই আমার মনে হয়।রান্না গুলো দেখেই মনে হচ্ছে অসম্ভব সুস্বাদু হয়েছিলো। আর যেমন বিবরণ আপনি পোস্ট লিখেছেন, তাতে আরো নিশ্চিত হলাম।

  • ভেটকি মাছ দিয়ে কিভাবে আপনার জেঠিন ফিস ফ্রাই বানিয়েছিলেন অবশ্যই একবার শেয়ার করবেন। যদিও আমি একেবারেই পছন্দ করি না, তবে আমার হাজব্যান্ড খুব ভালো খায়। আপনার রেসিপিটা দেখে ওকে একবার করে খাওয়াবো।

  • যাইহোক সবকিছু মিলিয়ে সুন্দর একটা দিন কাটিয়েছেন সকলে মিলে। আশা করছি ২০২৫ এ আপনার বাবা-মা নিশ্চয়ই ঘুরতে যাওয়ার পারমিশন দেবেন বা সাথে করে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। নতুন বছরে আপনার সব ভালো হোক, সব মনস্কামনা পূরণ হোক, এই কামনা রইলো। ভালো থাকবেন।