"রহস্যময় রুটি বানানোর আমার ইতিহাস"
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। কেমন আছেন বন্ধুরা আশা করি ভালো আছেন, সুস্থ আছেন আমি আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে জীবনের প্রথম একটি অভিজ্ঞতা নিয়ে । বিষয় টা হলো জীবনের প্রথম রুটি তৈরি করা। এটা নিয়ে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে এবং শেয়ার করতে চলে আসলাম।
আজকে অফিস থেকেই এসে শুনতে পাই রুটি তৈরি করবে। তাই শরিফুল আমাকে দাওয়াত দেয় রুটি খাওয়ার জন্য, আমি দাওয়াতটি গ্রহণ করি নাই ।
আমার সাথে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে তারা চলে গেল বাজারে আটা কিনতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর আটা কিনে বাসায় চলে আসে। আমি আবার এদিকে ল্যাপটপে মুভি দেখতে ছিলাম। তারপর শরিফুলের একটি গামলা নিয়ে আসে এবং কিছু পানি নিয়ে আসে।
তার সাথে আরেকটি জিনিস ছিল চামচ, গামলাতে আটা দিলে সাথে সমুদ্র মতো পানি ঢেলে দেই ।তারপর হাত দিয়ে না নাড়িয়ে চামচ দিয়ে নাড়াই। আমি প্রথম দেখলাম কেউ আটা হাত দিয়ে না নাড়িয়ে চামচ দিয়ে নাড়াচ্ছে তাও পায়েশের মতন তরল হয়েছে তারপর আর কি করবে আটা সংকটে পড়ে গেছে আবার আটা কিনতে জাকারিয়া বাজারে চলে যাই।
আবারো ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর জাকারিয়া বাজার থেকে আটা কিনে নিয়ে আসে। শরিফুলের হাতে দেয়, তারপর আবার শরিফুল আটার ব্যাগ থেকে অল্প অল্প আটা দিয়ে পায়েস আটাকে একটু শক্ত করে। কিন্তু কাজ হয় না তারপর দিতেই থাকে। এভাবে তিন থেকে চার বার দেওয়ার পর।
কোনরকম ময়দা তৈরি করা হয় রুটি তৈরি করার জন্য গোল আকৃতি প্রদান করে ওইগুলোকে একা একাই কোনরকম রুটি তৈরি করে। একটি প্লেটে রাখে। একটি রুটির উপর আরেকটি রুটি রাখে ,এক জায়গায় সব রাখে তারপর রুটি বানানো শেষ হয়।
তারপর চলে যায় রাইস কুকারের কাছে, রুটিগুলোকে রাইস কুকারে দিতে যাবে, একটি তুলতে গিয়ে দেখতে পাই সবগুলো একত্রে গেছে একটা রুটি তুলতে পারছে না এখন কি করবে তাই জাকারিয়াকে ডাক দেই এবং তার ডাকে সাড়া দিয়ে কাছে গিয়ে দেখে । জিজ্ঞাসা করে কি সমস্যা এবং উনি সমস্যার কথা বলে এবং তারা চিন্তায় পড়ে যায় কি করবে।
সবগুলো একদম আঠালো হয়ে গেছে একটু শক্ত হয়নি। তাই তারা কি করবে বুঝে পাইতেছিল না।
আমি ওগুলো দেখে জাকারিয়া হাত থেকে নিয়ে ভালো করে ময়দা দিয়ে মিক্সার করে নিলাম প্রায় ৫ থেকে ১০ মিনিট উল্টেপাল্টে মিক্সার করার পর জাকারিয়া একটু একটু করে নিয়ে দেখে রুটি তৈরি হচ্ছে কিনা আমি এদিকে মিক্সচার করতেই আছি।
৩০ মিনিটের মত মিক্সার করে কোনরকম শক্ত করা হয় এবং জাকারিয়ার কাছে থেকে বেলানি নিয়ে আসি আমার কাছে এবং আমি জীবনে রুটি তৈরি করার দূরের কথা আমি কখনো রান্না করার জন্য চেষ্টাই করি নাই। মনে আত্মবিশ্বাস রেখে নিয়ে।
তাই ওনার কাছ থেকে জীবনের প্রথম রুটি তৈরি করার। জন্য বেলান দিয়ে রুটি র গোল আকৃতি গুলোকে ডলতে থাকলাম কিন্তু আমার রুটি তৈরি একদমই হইতেছিল না তা দেখে জাকারিয়া আমার কাছ থেকে বেলানি নিয়ে যায়।
নিয়ে যাওয়ার পর আমি আবার জোর করে নিয়ে আসি ।আমি কেন পারব না আমি নিশ্চয়ই পারবো তা বলে আবার বেলানি দিয়ে রুটি ডলতে থাকি এভাবে প্রথমবার ব্যর্থ হয়, দ্বিতীয়বারও ব্যর্থ হই ,তৃতীয় বারের মধ্যে আমি কিছু সফলতার দেখা পাই।
রান্না করা কতটা কষ্টের যে রান্না করে সে বুঝে। আমরা যদি কোন রেস্টুরেন্টে বা কোন হোটেলে যায় তাহলে একটু দেরী হলেই চেঁচামেচি শুরু করে দেই। বিশেষ করে বাড়িতে মা যখন রান্না করে একটু রান্নায় দেরি হলে চিৎকার দিয়ে উঠি।
একটি রুটি প্রায় দশ মিনিট যাবত আমি দলতে থাকি তারপর একটি রুটি হয় সেটি মনে হয় কোন দেশের মানচিত্র হয়ে যায়। একটি রুটি তৈরি করতে ডাবল পরিমাণ আটা নষ্ট করি এবং শরীর ও ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।
এই রুটি কে নিয়ে রাইস কুকারের কাছে যাই এবং রুটি ভাঁজা জন্য রাইস কুকারের দিয় এবং আস্তে ধীরে দুটি পাশে উল্টিয়ে ভাজি। তারপর এই রুটি কে সাথে সাথেই খেয়ে দেখি অনেক মজার হয়েছে আমি এর আগে এরকম রুটির মজা পাওয়া যায় নাই।
কখনো ভাবতে পারি নাই যে আমার রান্না এত সুন্দর হবে। জীবনের প্রথম রান্না করে অনেক সুন্দর অনুভূতি হলো।
এই পোস্টটি এ পর্যন্তই সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সাবধানে থাকবেন আল্লাহ হাফেজ
কোন্ লাইন ছেড়ে কোন্ লাইন তুলে ধরবো বুঝে পেতেই অনেক সময় চলে গেলো।🤣
এটাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাম দিলেও ভুল বলা হবে না, তবে আপনার রুটি তৈরির বিশ্লেষণ পড়তে গিয়ে আমার পেটে খিল ধরে গিয়েছে!
আপনাদের পায়েস থেকে রুটির যে যাত্রা, আর তার বিবরণ পড়তে গিয়ে আমার অবস্থা বেহাল।
অনেকদিন পরে একটা মজার অথচ শিক্ষণীয় লেখা পড়ার সুযোগ করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
চালিয়ে যান, এখন বুঝবেন নিশ্চই গৃহকর্ম মোটেও সহজ কাজ নয়!
দিদি আমি তো ওই সময়ই বেহুঁশ হয়ে পড়েছি যখন দেখলাম রুটি তৈরি করার জন্য পায়েস তৈরি করার মত পানি ঢেলে দিয়েছে 😄
এরপর আবার প্রথম প্রথম রুটি তৈরি করা আর এই রুটির আকার আকৃতিতে কেমন হবে এটা তো বুঝতেই পারছিলাম তবে পায়েস থেকে রুটি তৈরি করার যাত্রাটা বেশ কঠিন ছিল কেননা মাগরিবের আজান থেকে রাত ১০:৩০ পর্যন্ত বেচারা শরিফুল আর জাকারিয়া অনেক পরিশ্রম করেছে। শেষ পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুক্ত হলাম এবং রুটির মানচিত্র আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।
ইতিহাসের মহাযুদ্ধের মানচিত্রময় এমন পায়েস থেকে রুটি তৈরি করার প্রসেস সম্পূর্ণ পড়ে আপনার বেহাল অবস্থা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এটাই আমার কাছে অনেক পাওয়া 🥰
আসলে রুটি বানানো একটু কঠিন কাজ। রুটি গোল করতে অনেকেই পারেনা ।কিন্তু চেষ্টা করলে সবকিছুই পারা যায়। আপনার এই রকম রুটি বানানো এই প্রথমবার দেখলাম। রাইস কুকারের মধ্যে যে রুটি ভাজে এটা আমার জানা ছিল না। তবে জীবনে প্রথম রান্না করার অনুভূতি একদমই আলাদা হয়।
রান্না করা কাজটা আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কঠিন কাজ। আর রুটি বানানোর বলাই যাবে না এত কঠিন। রুটি তৈরি করা তো দূরের কথা আটা কিভাবে মিক্সচার করতে হয়। সেভাবে আমরা যারা প্রথম রান্না করি তা আমরা একদমই জানিনা। শুরু করার জিনিসটা একটু অন্যরকমই হয় যা মানুষ কল্পনা করতে পারে না। আমাদেরও জানা ছিল না যে রাইস কুকারে রুটি হয় তাও একটু এক্সপেরিয়েন্স নেওয়ার জন্য ট্রাই করছিলাম দেখি হয়ে গেছে। জীবনের প্রথম রান্না করার আনন্দটা অন্যরকম যা বলে বুঝানো যাবে না। পৃথিবীতে যতই ভালো খাবার থাক না কেন নিজের হাতে রান্না তার চেয়েও সুস্বাদু হবে কারণ সেটি কষ্ট করে পরিশ্রম দিয়ে নিজের তৈরি করেছে তাই।
ধন্যবাদ দিদি আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি কমেন্ট আমাকে উপহার দেওয়ার জন্য।
আপনার রুটি বানানোর ইতিহাস দেখে খুব মজা পেয়েছি, এই প্রথম দেখলাম রাইস কুকারে রুটি ভাজে, রুটি গোল হোক আর বাকা, রুটি তো রুটি ভাজা হইলে খাওয়া হয়ে যাবে। নিজ হাতে যা কিছুই রান্না করি না কেন সবই অনেক সুস্বাদু লাগে, ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
রুটি যখন তৈরি হয় তখন আমি তো অনেক মজা পেয়েছি হাসতে হাসতে আমার তো বেহুুষ হওয়ার কথা এরকম আনন্দ পেয়েছি। আমিও প্রথম আবিষ্কার করলাম যে আজ কুকারে রুটি তৈরি করা হয়। কথাটি সত্যি বলেছেন প্রতি গোল হোক বা বাঁকা একইতে হবে গুল হলেও পেকে যাবে আঁকাবাঁকা হলেও ওই পেতেই যাবে। কিন্তু এটার একটি সৌন্দর্য আছে এবং কোয়ালিটি ফুল। নিজের হাতে রান্না করে পৃথিবীর সুস্বাদু খাবারের মধ্যে নিজের খাবারটাই প্রথম লিস্টে চলে আসবে সুস্বাদুর মধ্যে। ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি সুন্দর করে পরে চমৎকার কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার রুটি বানানোর ইতিহাস দেখে আমিও হেসেছি, ঠিক তাই রুটি গোল বানানো হয় সুন্দরদের জন্যই যে জিনিস যত সুন্দর দেখা যায় সেই জিনিসের প্রতি মানুষের আকৃষ্ট বেশি থাকে, ধন্যবাদ গুরুত্বের সাথে আমার কমেন্টে রিপ্লাই দেওয়ার জন্য।
পোস্ট পরছিলাম এবং একা একা হাসতে ছিলাম, তবে সবশেষে কিন্তু সফল হয়েছে। রুটি দেখতে যেমনই হোক না কেন, পেট তো গিয়েছে। এটাই শান্তি।
চেষ্টা করলে সবকিছু সম্ভব আপনি অনেক চেষ্টা সাদ্ধ করে।আজ আজ রুটি তৈরি করতে পেরেছেন যদিও পিছনে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তবে পেরেছেন এটাই অনেক।
আপনি পোস্ট করে হাসতে হয়েছে আর আমার চোখের সামনে এই কার্যক্রম গুলো করেছে তাহলে আমার কি রকম হাসি পেয়েছে । কঠোর পরিশ্রম করলে পৃথিবীতে কোন কাজই কঠিন মনে হয় না। ধন্যবাদ আপু আমার পুষ্টি পরে এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য
আসলে মেয়েরাই রুটি বানাতে পারে না সেখানে আপনারা ছেলে হয়ে অনেক সুন্দর করে রুটি বানিয়েছেন, সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে আমাদের রুটি বানানো টা। এবং সেই সাথে সাথে আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাবো আপনি আপনার রহস্যময় রুটি বানানোর বিষয়টি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন।