বেগুন চাষের পদ্ধতি ১ @mdarazzak

মাটি প্রস্তুত করণ

ব্যবহারিকভাবে হালকা বালি থেকে ঘন পলিমাটি পর্যন্ত, যেকোনো ধরনের মাটিই বেগুন জন্মাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। হালকা বেলে মাটিতে আগাম বেগুনের চাষ চমৎকার। এই ধরনের মাটিতে বেগুন জন্মানোর জন্য, অন্যান্য সার এবং জৈব সারগুলির ব্যাপক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়।

pexels

পলিযুক্ত দোআঁশ ও এটেঁল দোআঁশ মাটির জন্য বেগুনের চাষ উৎকৃষ্ট এবং এসব মাটিতে বেগুনের ফলন ভালো হয়। বেগুন জন্মানোর সময় গভীর, উর্বর এবং সুনিষ্কাশিত মাটি ব্যবহার করতে হবে।

বেগুনের বিভিন্ন জাত

ভাল ফলন পাওয়ার জন্য, সঠিক ধরনের জাত নির্বাচন করা আবশ্যক। বাংলাদেশে, বেগুন বিভিন্ন ধরণের পাওয়া যায়। একটি থেকে অন্য, উদ্ভিদের প্রকৃতি, ফলের রঙ, আকার, আকৃতি ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে তিনটি জাতের বেগুন জন্মে: লম্বা ফল, গোলাকার ফল এবং গোলাকার।

pexels

ঋতুর উপর নির্ভর করে, সমস্ত ধরণের শীতকালীন বেগুন বা বহুবর্ষজীবী বেগুন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। শীতকালীন বেগুন রবি মৌসুমে চাষ করা হয় কারণ এটি কেবল রবি মৌসুমে ফল দেয়। বহুবর্ষজীবী বেগুনও সারা বছর চাষ করা যায়। নিম্নলিখিত উল্লেখযোগ্য জাতগুলির কিছু নাম দেয়া হলোঃ-
শুকতারা, মুক্তকেশী, ডিম বেগুন, ঝুমকো, শিংনাথ, কেজি বেগুন-, চমক এফ 1, বিজয়, নয়নতারা (বারি বেগুন 5), কাজলা (বারি বেগুন 4), তারাপুরি (বারি বেগুন 2), এবং নয়ন কাজল সবই বারি বেগুন। সবচেয়ে সাধারণ জাত হল তাল বা তল্লা বেগুন, উত্তরা (বারি বেগুন 1), ঈশ্বরদী 1, লাফা এবং খটখাটিয়া।

চারা প্রস্তুত করুণ

বীজতলায় এবং মূল জমিতে চারা রোপণ বেগুন চাষের পূর্বশর্ত। বীজতলা এমন জায়গায় তৈরি করা দরকার যেখানে বৃষ্টির জল জমা হবে না, যার মানে এটি ভালভাবে নিষ্কাশন করা দরকার। এটি সর্বদা আলো এবং বাতাস গ্রহণ করতে হবে, যার অর্থ এটি ছায়া থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। বীজতলা প্রস্তুত করতে, মাটি গভীরভাবে চাষ করা উচিত (অন্তত 20 সেমি)। এটি উর্বর মাটি থাকা উচিত। উর্বরতা কম হলে অল্প মাত্রায় জৈব সার এবং ফসফেট সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজতলার প্রতিটি বর্গমিটারে 0.10 ঘনমিটার পচা গোবর এবং 30 গ্রাম টিএসপি সার ব্যবহার করা যেতে পারে। জমির পুরো প্লটটি চাষের পরে একাধিক ক্ষুদ্র বীজতলায় বিভক্ত করা উচিত। 3-5 ঘনমিটার, 1 মিটার, এবং 15 সেমি প্রতিটি বীজতলা তৈরি করা উচিত। উপরন্তু, দুটি বীজতলার মধ্যে 50-60 সেমি দূরত্ব থাকতে হবে।

pixabay

এই খালি জায়গার মাটি অপসারণ করতে হবে, এবং বীজতলা বাড়াতে হবে। কয়েকটি চারার জন্য কাঠের বাক্স, প্লাস্টিকের ট্রে বা বড় টব বীজতলা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেগুন চাষের জন্য প্রতি হেক্টরে 250-300 গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। একটি 3 মিমি 1 মিটার বীজতলার জন্য 14-16 গ্রাম বীজ প্রয়োজন। তাই 250-300 গ্রাম বীজ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আকারের 16-20টি বীজের শুঁটি প্রয়োজন হবে। বেগুন বীজের প্রতি গ্রাম প্রায় 200-250 বীজ, যার মধ্যে 75-80% অঙ্কুরিত হয়। বীজ বপনের জন্য সারি বা বীজতলা ব্যবহার করা যেতে পারে। সারিগুলির মধ্যে 5 সেমি, আপনাকে অবশ্যই প্রদান করতে হবে বীজ বপনের পরে বীজতলার মাটি হালকাভাবে সংকুচিত করা উচিত। বীজতলায় প্রতিটি চারার মধ্যে 2-3 সেন্টিমিটার ফাঁকা থাকে। গাছের বৃদ্ধি স্বাস্থ্যকর। রোপণের পরে, একটি চালনি দিয়ে হালকা মিস্টিং জল দিয়ে বীজগুলিকে জল দিতে হবে। প্রয়োজনে বীজতলা ঢেকে রাখার জন্য শুকনো খড়, একটি পলিথিন শিট বা একটি বস্তা ব্যবহার করা যেতে পারে। গ্রীষ্মকালে সকাল এবং সন্ধ্যায় হালকা সেচের প্রয়োজন হয়। অঙ্কুরিত হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর হালকা সেচ দিতে হবে।