করিম মিয়ার তিনটা বিয়ের গল্প দ্বিতীয় পর্ব ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
শুভ সন্ধ্যা,
সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি এবং সুস্থ আছি।
দিন শেষে এখন লিখতে বসলাম, গত পর্বে আমি বলেছিলাম শিক্ষা নিয়ো কয়েকটি বিষয় রয়েছে। আমি আজকে সেই শিক্ষা নিয়ো ও বিষয়গুলো আলোচনা করব সর্বপ্রথম।
গ্রাম অঞ্চলের মানুষ অল্প শিক্ষিত কারণে , যখন কেউ অসুস্থ হয় তখন সেই বিষয়টি গুরুত্বসহি দেখেনা, গ্রাম অঞ্চলে মানুষ ভাবে যে একটু জ্বর হয়েছে ওটা এমনিতেই সেরে যাবে। কিন্তু জ্বর কোন কারণে হয়েছে তা কেউ বিশ্লেষণ করে না। বলা চলে অনেকটাই অবহেলা করে অসুস্থ কে। এই অবহেলার কারণেই করিম মিয়ার প্রথম স্ত্রী মারা গিয়েছিল। আপনারা এ বিষয়টি অনেকেই জেনেছেন ইতিমধ্য আমার লেখা পড়ে।
দ্বিতীয়ত আরেকটা শিক্ষা নিয়ো বিষয় হলো আমরা নিজেরাই অনেক সময় যদি অসুস্থ হই তাহলে নাপা অথবা গ্যাসের ঔষধ খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনারা নিজেরাই জানেন না যে আমার অসুস্থতার কারণ কি। ডাক্তাররাই ভালো জানে কি কারনে আপনার সমস্যাগুলো হচ্ছে কিন্তু আমরা নিজেরাই ডাক্তার সাজতে গিয়ে অনেক বড় বিপদে পড়ি।
যাই হোক , করিম মিয়া প্রথম স্ত্রী হারানোর পর অনেকটা হতাশ হয়ে পড়ে কেননা তার দুই বছরের একটি সন্তান রয়েছে এই সন্তানের দেখভাল করবে কে। এবং সাংসারিক অনেক কাজ রয়েছে সেগুলো বা করবে কে। অনেকটা টেনশনের মধ্যে কয়েক মাস পার করলো করিম মিয়া।
চার মাস পর দ্বিতীয় বিয়ে করল করিম মিয়া, বিয়ের পর করিম মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রী কে বলল আমার এই সন্তানের মা এখন থেকে তুমি তার সমস্ত দায়িত্ব তোমার উপরে। এভাবে বুঝিয়ে দিল করিম মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীকে।
আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে সৎ মা মানেই দজ্জাল, অন্যের ছেলেকে ভালো চোখে দেখতে পারেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে কিছু কিছু সৎ মা রয়েছে নিজের মায়ের মত করে অন্যের ছেলেকে লালন পালন করে থাকে। ঠিক করিম মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী ভালো একটি মনের মানুষ ছিল সে সব সময় তার সতীনের ছেলেকে খুবই ভালোবাসতো যত্ন করতো নিজের সন্তানের মতো করে সব সময় আগলে রাখত।
এভাবে করিম মিয়ার সংসারটা আবারো আগের মতই সুন্দর হয়ে উঠলো দুই বছর পর করিম মিয়া আবারো আর এক সন্তানের বাবা হল এখন করিম মিয়ার দুই সন্তান দুটোই ছেলে।
বড় ছেলের নাম রেখেছিল রিপন এবং ছোট ছেলের নাম রেখেছে লিটন দুই ভাইয়ের নাম খুব সুন্দর মিল করে রেখেছে খুবই সুখে শান্তিতে দিন করিম মিয়া।
চার বছর অতিবাহিত হয়ে গেল করিম মিয়ার দ্বিতীয় বিবাহ প্রথম ছেলের বয়স ইতিমধ্যেই সাড়ে ছয় বছর এবং ছোট ছেলের বয়স তিন বছর। করিম মিয়ার স্ত্রী একদিন দুপুরে বলল যে অনেকদিন হলো বাবার বাড়ি যাই নাই চলো সবাই মিলে গিয়ে বেড়িয়ে আসি। করিম মিয়া বলল আচ্ছা ঠিক আছে কালকে সকালে আমরা রওনা দেব।
করিম মিয়াও তার দুই সন্তান স্ত্রী সহ শশুর বাড়িতে রওনা দিল। করিম মিয়ার শ্বশুরবাড়ি আবার একটু দূরে যেতে দুই ঘন্টা লাগে। বাড়ি থেকে ভ্যানে ওঠে বাস স্থানে পৌঁছালো ভালোভাবেই। বাসের জন্য অপেক্ষা করছে নির্দিষ্ট স্থানে। এদিকে করিম মিয়া তার স্ত্রীকে বলল তুমি এখানে একটু দাড়াও আমি ওই দোকান থেকে মিষ্টি কিনে নিয়ে আসি। করিম মিয়া তার বড় সন্তানকে নিয়ে দোকানে গেল মিষ্টি নিয়ে আসতে তার স্ত্রী রাস্তার সাইডে দাঁড়িয়ে আছে এমত অবস্থায় একটি ট্রাক ব্রেক ফেল করে খুব দ্রুত গতিতে আসছিল ট্রাকচালক কন্ট্রোল না করতে পেরে করিম মিয়ার স্ত্রীর উপর দিয়ে চালিয়ে দেয় এমতাবস্থায় করিম মিয়ার স্ত্রী জায়গায় মৃত্যুবরণ করে। এবং তার ছোট ছেলে কে ধাক্কা দিয়ে আরেক সাইডে ঠেলে দেয় এজন্য তার ছেলের কোন ক্ষতি হয় নাই । ওই একই ঘটনা স্থলে আরো কয়েকজন জায়গায় মৃত্যুবরণ করে।
খুবই মর্মান্তিক এই ঘটনা। এই ঘটনাটি বাস্তব এবং আমারই পাশের গ্রামে ঘটেছিল অতি বাস্তব জীবনের এই গল্পটি আশা করি তৃতীয় পর্বে আমি শেষ করতে পারবো। আপনারা সবাই সাথে থাকবেন।
তো বন্ধুরা আজকের মত বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে তৃতীয় পর্বে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন অসংখ্য ধন্যবাদ আমার সকল বন্ধুদেরকে।
প্রিয় ভাই, আপনার গল্পটি পড়ে খুব মর্মাহত হলাম। আসলে ভাগ্যের উপর কারোরি হাত থাকে না। করিম মিয়ার ভাগ্য বলতে গেলে সত্যি খারাপ।
অন্য দিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের বিভিন্ন বিষয় সচেতন হওয়া উচিত। আপনি বলেছেন আমরা অনেকসময় না বুঝেই জ্বরের ঔষধ খেয়ে থাকি। আসলে এটি ঠিক নয়। কি কারণে জ্বর হলো কেন হলো ইত্যাদি বিস্তারিত না জেনে কোন ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।
যাই হোক আপনার গল্পটি পড়ে যেমন মর্মাহত হলাম তেমনি নতুন কিছু শিক্ষা পেলাম। ভালো থাকবেন সবসময়।
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য।
আসলে আমরা মানুষ আমাদের জীবনে কি হবে সেটা আমরা আগে থেকে কখনোই নির্ধারণ করতে পারি না! ভাগ্যের উপর আমরা যেমন হাত দিতে পারি না! ঠিক তেমনি সৃষ্টিকর্তা আমাদের কপালে যা রেখেছে,,, আমাদের সাথে ঠিক তাই হয়।
আপনার গল্পের এই পর্ব পড়ে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে,,,,, উনি অনেক আশা করে নিজের বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল! কিন্তু বাবার বাড়িতে যাওয়ার পথে উনি পরকালে চলে গেছেন! যাইহোক আপনার গল্পের পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভাল থাকবেন।
আপু আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।