বাসার পাশের মাদ্রাসায় হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ী প্রদান ও মাহফিল অনুষ্ঠান উপভোগ
সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি।
শীতের মৌসুম চলছে। আমাদের বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান একটি দেশ। শীত আসার সাথে সাথে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য ইসলামিক মাহফিলের আয়োজন শুরু হয়। কয়েকদিন আগের ডায়েরি তে তেমন ই একটি মাহফিল ও পাগড়ী প্রদান অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলেছিলাম, এবং এই অনুষ্ঠান নিয়ে আলাদা একটি ব্লগ লিখবো বলে কথা দিয়েছিলাম। আজকের ব্লগে এই মাহফিল নিয়ে বিস্তারিত আপনাদের জন্য তুলে ধরবো।
আমার বাসার পাশে গতবছর ডিসেম্বরে একটি মাদ্রাসার উদ্বোধন হয়, মূলত মসজিদের ইমাম এই মাদ্রাসার দায়িত্ব নেন। আমার একবার সুযোগ হয়েছিল এই মাদ্রাসাতে যাবার, মসজিদের ইমামের গ্রামের বাড়ি আমার গ্রামের পাশে হওয়ায় প্রায়ই যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রেই উক্ত পাগড়ী প্রদান অনুষ্ঠান ও মাহফিলে আমন্ত্রণ পাই।
গত ২০ ডিসেম্বর, রোজ শুক্রবার বাদ আছর এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। আমি অনুষ্টালনে গিয়ে রীতিমতো অবাক হয়ে যাই। কোরআনের পাখি গুলো কি সুন্দর সুমধুর সুরে তেলোয়াত শুনাচ্ছে তাও আবার মঞ্চে ঊঠে।
সুমধুর সুরে মঞ্চ মাতাচ্ছেন কোরআনের পাখি
বয়স আর কতই হবে,৫-১২ বছরের মধ্যে সবাই। এক বছর আগে পথ চলা শুরু করা প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মাদ্রাসার নাম নবী হোসেন সালাফিয়া মাদ্রাসা
প্রথম অধিবেশনে পাগড়ি প্রদান করা হয় যারা কোরআন এর দুইজন হাফেজ শিশুকে। এত কম বয়সে পুরো কোরআন তারা মুখস্ত করে ফেলেছে, এর থেকে বর সম্পদ আর কি হতে পারে একজন মুসলিমের জন্য?
প্রথম অধিবেশন শেষ হলে মাগরীবের নামাজের বিরতি শুরু হয়, এই ফাকে আমি মেয়েকে স্টেজে তুলে কিছু ছবি ক্যাপচার করি। মেয়ে বার বার চাইছিল মাইকে কবিতা বলতে। তার মঞ্চে পারফর্ম করার ইচ্ছে দেখে তাকে সান্ত্বনা দিতেই আমি মঞ্চে বসিয়ে দেই।
মেয়ের ইচ্ছের কিছুটা পূরণ করতে পেরেছি
ইসলামিক নাটক মঞ্চস্ত করছে শিশুরা
মাগরীবের নামাজ শেষে দ্বিতীয় পর্বে ইসলামিক নাটক মঞ্চস্ত হয়। ছোট বাচ্চারা খুব সুন্দর ভাবে তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে দারুণ শীক্ষণিয় একটি বিষয় ফুটিয়ে তুলে।
.৩য় পর্ব শুরু হতে রাত ৯ টা বাজবে দেখে আমি মেয়েকে নিয়ে মাহফিলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ভ্রাম্যমান দোকান গুলতে গেলাম। মেয়ে খুব মজা করে বিভিন্ন খেলনা দোকান ঘুরছে, আমি তাকে খেলনা কিনে দিলাম।
মাহফিল কে কেন্দ্র করে বসা ভ্রাম্যমান দোকান
টুপি,তসবীহ ও আতরের দোকান
মিষ্টান্নের দোকান থেকে বাতাসা নেয়া
এখানে খেলনা দোকান ছাড়াও বিভিন্ন খাবারের দোকান, চটপটি, ফুচকার দোকান বসেছে। আরো আছে নানা ধরণের মিষ্টান্ন দোকান।
সব শেষে মেয়ে একটা টুপির দোকানে গিয়ে তসবি হাতে নিয়ে বললো, সেই এই মালাটা নিতে চায়। আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম এটা তাসবিহ, এর মাধ্যমে আমরা জিকির ও ইবাদাত করি। পরে তাকে আমি একটা তাসবীহ কিনে দিলাম।
বাসায় ফেরার পথে, গিন্নীর জন্য বাতাসা, চানাচুর আর জিলাপি কিনে বাসায় ফিরলাম।
সব মিলিয়ে খুব সুন্দর কিছু মূহর্তের সাক্ষী হতে পারলাম । মেয়ে বাসায় আসার সময় বার বার বলছে সেও এই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে চায়। তার মাথায় এখন একটাই চিন্তা ঘুরছে কবে সে মাইকে কবিতা বা কোরান তেলাওয়াত করবে। আমি মেয়েকে পড়ালেখার ব্যাপারে এখনই স্কুল বা মাদ্রাসায় দেবার চিন্তাও করি নি। অন্তত ৫ বছর হলে তার পরে ভেবে দেখব। তবে তার এই ইচ্ছা আমাকে নতুন করে ভাবাচ্ছে। মনে হচ্ছে স্কুল বা মাদ্রাসার সাংস্কৃতিক অনুষ্টানগুলোতে মেয়েকে সব সময় নিয়ে যাওয়া উচিৎ।
আজকে আর বেশি কিছু লিখছি না। আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকবো। ভালো থাকবেন সবাই।
Sort: Trending
Loading...