মায়া মাছের দারুণ রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। সকলের সুস্থতা কামনা করে আমি আমার আজকের ব্লগটি শুরু করছি। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে। প্রতিদিন নতুন নতুন গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করে আমারও বেশ ভালো লাগে।
আজ আমি আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করবো। সেটি হলো সবজি দিয়ে মায়া মাছের ঝালের রেসিপি। বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় খাবার হল মাছ। তাইতো আমরা বলি ---"মাছে ভাতে বাঙালি।" দুপুরের খাবার মেনুতে আমাদের মাছ না হলে চলে? ব্যক্তিগতভাবে আমি মাছ খেতে ভীষণ ভালোবাসি। মাছের টেস্টের কাছে মাংসও হার মানবে। অনেকের এ বিষয়ে দ্বিমত থাকতেই পারে। তবে আমি মাংসের চেয়ে মাছ খেতে বেশি ভালোবাসি। আমাকে পরপর দু- তিন দিন মাংস দিলে আমার হয়তো মাংস খাওয়ার রুচি থাকবে না। তবে মাছের ক্ষেত্রে কিন্তু আমার একটুও একঘেয়েমি লাগে না। আমি মাছ খেতে ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি। হ্যাঁ, তার জন্য অবশ্যই রান্নাটা টেস্টি হতে হবে। আমাদের বাড়িতে তৈরি সমস্ত মাছের রেসিপি গুলোই আমার খুব টেস্টি লাগে।
আমার রেসিপি পোস্টগুলোতে অনেকেই মন্তব্য করেছেন আমাদের বাড়িতে বোধ হয় সবজিটাই বেশি খাওয়া হয়। তবে সেটা পুরোপুরি সঠিক নয়। আমি মূলত যে রেসিপিগুলো সচরাচর প্রতিদিনের রুটিনে আমরা রাখিনা সেগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করি। তবে মাছ মাংসের চলও আমাদের বাড়িতে রয়েছে। বিশেষত আমি যেহেতু মাছ খেতে ভীষণ ভালোবাসি তাই মাছটা আমাদের বাড়িতে সপ্তাহে তিন চার দিন হয়। আর সবজি খেতে আমার বিশেষ ভালো লাগে না। তবে বাড়ির সকলের চাপে আমাকে খেতেই হয়। আর তাছাড়া আমার বৌদির পাশাপাশি আমার মাও সবজি খেতে ভীষণ ভালোবাসে। তাই ছোটো থেকে একপ্রকার জোর করে মা আমাদের সবজি খাওয়াত। সেই থেকে ধীরে ধীরে সবজির প্রতি ভালোবাসা আনতেই হয়েছে।
মাছের ক্ষেত্রে আবার আমাদের বাড়িতে বিভিন্নতা রয়েছে। প্রত্যেকে আবার সব মাছ খাই না। বিশেষ করে আমার বৌদি, ওনার সবজি হলেই চলে। সব মাছ বৌদি খাই না। আমার আবার সেই সব ঝামেলা নেই। ভালো করে রান্না করে দিলেই আমি খুশি। যেটা আমার মুখে স্বাদ লাগে আমি সেই মাছ ই খাই। সব মাছ আমি চিনি না, নাম ও জানি না। তবে রান্নার পর খেতে ভালো লাগলে খেয়ে নিই। আজ যে মাছের রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি সেটা কিন্তু আমার ভীষণ পছন্দের। প্রতিদিন মসলা পাতি খেতে কি ভালো লাগে! তাই মাঝে মাঝে এইভাবে ও আমাদের বাড়িতে রান্না হয়। রেসিপিটা ভালো লাগলে আপনারাও আপনাদের বাড়িতে এইভাবে রান্না করতে পারেন।।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে এই মাছের রেসিপি টা বানিয়েছিলাম।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | মায়া মাছ | ৩০০ গ্রাম |
২ | নুন | পরিমাণ মতো |
৩ | হলুদ | পরিমাণ মত |
৪ | কাঁচা লঙ্কা | ৬টা |
৫ | শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো | ১ চামচ |
৬ | সর্ষের তেল | ১০০গ্রাম |
৭ | জল | পরিমান মতো |
৮ | কালো জিরা | ১ চামচ |
৯ | আলু | ছোটো সাইজের দুটো |
১০ | পটল | ২ টো |
১১ | শিম | ৬ টা |
১২ | টম্যাটো | ১ টা |
১৩ | পেঁয়াজ | ২ টো |
১৪ | বেগুন | ১ টা |
ধাপ ১ :
প্রথমে আলু, পেঁয়াজ , লঙ্কা, বেগুন, শিম, পটল, টম্যাটো ভালোভাবে কেটে ধুয়ে নিয়েছিলাম নিয়েছিলাম।
ধাপ ২ :
এরপর মাছগুলোকে ভালোভাবে কেটে ধুয়ে লবণ ও হলুদ মাখিয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৩ :
এরপর ওভেনে কড়াই বসিয়ে দিয়েছিলাম এবং কড়াই গরম হয়ে গেলে তাতে সরষের তেল ঢেলে দিয়েছিলাম। তেল গরম হয়ে এলে তাতে খানিকটা লবণ দিয়ে দিয়েছিলাম। গরম তেলে লবণ দিয়ে দিলে মাছগুলো কড়াইয়ের সাথে আর লেগে যায় না। এটা আমি মায়ের কাছ থেকে শিখেছিলাম।এরপর তাতে দিয়ে দিয়েছিলাম লবণ, হলুদ মাখিয়ে রাখা মাছগুলিকে।
ধাপ ৪:
এরপর মাছগুলোকে ভালোভাবে এপিঠ ওপিঠ ভেজে তুলে রেখেছিলাম।
ধাপ ৫:
এরপর মাছ ভাজা তেলের মধ্যেই কালো জিরে, কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিয়েছিলাম।
ধাপ ৬:
পেঁয়াজ ও লঙ্কাগুলো হালকা ভাজা হয়ে গেলে তার মধ্যে কেটে রাখা আলু গুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরিমাণ মত লবণ দিয়ে দিয়েছিলাম।
ধাপ ৭:
আলুটা একটু ভাজা হয়ে এলে তার মধ্যে বাকি কেটে রাখা সবজিগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখেছিলাম।
ধাপ ৮:
এইভাবে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলে সবজি থেকে কিছুটা জল বেড়িয়ে আসবে। ঢেকে ঢেকে রান্না করে সেই জলটা শুকিয়ে ফেলতে হবে এবং সেই জলেই সবজিগুলো খানিক মজে যাবে।
ধাপ ৯:
এরপর সবজিগুলো আরও কিছুটা সিদ্ধ হয়ে গেলে তার মধ্যে হলুদ ও কিছুটা লঙ্কার গুঁড়ো মিশিয়ে দেব। এরপর আরো কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে রান্না করে নেব।
ধাপ ১০:
এরপর তাতে পরিমাণ মতো জল দিয়ে দেব এবং ভালোভাবে ফুটিয়ে নেব।
ধাপ ১১:
সব সবজি গুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে এলে তার মধ্যে বেঁচে রাখা মাছগুলো দিয়ে একটু হালকা নাড়াচাড়া করে নেব।
তাহলে রেডি হয়ে যাবে আমাদের মায়া মাছের রেসিপি।
ফাইনাল লুক-----
তাহলে আজকে আমার পোস্টটি আমি এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আপনারা সকলে ভালো থাকবেন আর অবশ্যই জানাবেন আমার এই রেসিপিটি আপনাদের কেমন লাগলো।