হ্যালোইনের ইতিহাস

in Incredible India9 months ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই খুব ভালো আছেন। আজ আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু গল্প শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

সামনেই আমার স্টুডেন্টদের ফার্স্ট সামিটিভ এক্সাম শুরু হবে। তাই এখন সকলকে প্রত্যেক দিনই এক্সাম দিচ্ছি তাদের কতটা preparation হয়েছে তা বোঝার জন্য। ঠিক তেমনভাবেই আজকেও বেশ কিছু স্টুডেন্টদের এক্সাম নিয়েছি। সন্ধ্যেবেলায় যাদের পড়ানো ছিল তাদের এক্সামের প্রশ্নপত্র দিয়ে দেওয়ার পর পরবর্তী দেড় ঘন্টা আমার বসে থাকা ছাড়া আর কোন কাজ ছিল না। আর এরকম ভাবে কোন কাজ ছাড়া বসে থাকতে আমার মোটেই ভালো লাগে না। আর পড়াতে গিয়ে অকারণে মোবাইল ঘাটা আমার মোটেও পছন্দ নয়। তাই ওই দেড় ঘন্টা কি করব ভাবতে ভাবতে স্টুডেন্ট এর ঘরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চোখ বোলাতেই চোখে পড়ল এক ভুতুড়ে গল্পের বইয়ের।

যদিও আমি ভূতের সিনেমা দেখা হোক কিংবা ভূতের গল্প পড়া হোক---এইসব বিষয় থেকে একটু দূরেই থাকি, কারণ আমি এত বড়ো হয়ে যাওয়ার পরেও ভূত বিষয়টাই ভীষণ ভয় পাই। তবুও যেহেতু করার মতো তেমন কোন কাজ সেই মুহূর্তে আমার ছিল না তাই ভাবলাম বইটা নিয়ে একটু উল্টেপাল্টে দেখা যাক। সেই বইটা উল্টেপাল্টে বেশ কিছু ইউরোপিয়ান দেশগুলির ভুতুড়ে গল্পও আবিষ্কার করেছিলাম। এরমধ্যে একটি ছিল হ্যালোইন সম্পর্কিত। এই গল্পটা পড়ে আমি হ্যালোইন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। যদিও হ্যালোইন সম্পর্কে খুব অল্পস্বল্প জ্ঞান আমার ছিল তবে এই বইটা পড়ে আরো বিস্তারিত জানতে পেরেছি।

1000231997.jpg

Link

তবে সেই বইটির নাম কিংবা লেখক এর নাম কোনটি আমার এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। আর বইটির কোন ছবিও আমি তুলে রাখিনি। তাই বইয়ের নাম কিংবা লেখক এর নাম উল্লেখ করতে না পারার জন্য আমি খুবই দুঃখিত।

হ্যালোইনের ইতিহাস

হ্যালোইন ইউরোপীয় দেশগুলির জনপ্রিয় উৎসবের অন্যতম। হ্যালোইন হলো সেই উৎসব যেখানে ছোট ছোট ভুত ও গবলিন - রা রাস্তায় আসে এবং একে অপরকে ভয় দেখায়, মজা করে ও ক্যান্ডি, চকলেট, লজেন্স ইত্যাদি চায়। এই সময় আগুনের চারপাশে সবাই মিলে বসে ভূতের গল্প করে এবং বিভিন্ন থিয়েটারে ভৌতিক সিনেমা দেখানো হয়।

1000231998.jpg

Link

এই সময় কুমড়ো গুলিকে দক্ষতার সাথে বিভিন্ন মুখাকৃতিতে কাটা হয়ে থাকে। এগুলোকে জ্যাক ও ল্যান্টর্ন (Jack-o'-lantern 🎃)বলা হয়।

এইসব ভুতুড়ে পোশাক, সাজগোজ, মজা ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে হ্যালোইনের পিছনের ইতিহাস কে অনেকেই এড়িয়ে চলে। তবে এই হ্যালোইনের পিছনে কিন্তু একটা সমৃদ্ধশালী ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসটাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

'হ্যালোইন' শব্দটি সম্ভবত ১৭৪৫ সালে খ্রিস্টীয় ধর্ম থেকে এসেছে। এই 'হ্যালোইন' শব্দটির অর্থ হলো পবিত্র সন্ধ্যা। হ্যালোইন আবার 'হ্যালোইন ইভ' নামেও পরিচিত। এটার উল্লেখ আমরা পাই যীশু খ্রীষ্টের জন্মের ২০০০ বছর আগে, যেটা পয়লা নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতো স্যামহেইনের সময়। 'স্যামহেইন' যার অর্থ হল 'গ্রীষ্মের শেষ ও শীতের শুরু'। হ্যালোইন মূলত কেল্টিক ভাষাভাষী মানুষদের মধ্যে প্রচলিত একটি উৎসব ছিল। যা বছরের বার্ষিক ফসল কাটার সময় অর্থাৎ স্যামহেইন এর রাতে অনুষ্ঠিত হতো।

স্যামহেইন(Samhain ) এর অর্থ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে এটি বছরের ফসল উৎপাদনের পর অনুষ্ঠিত হতো। Folklorist জন স্যান্টিনো এর মতে, স্যামহিয়ান হলো সেই সময় যখন মৃত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করার সঠিক সময় হিসেবে গণ্য করা হয়। আরো মনে করা হয় যে এই সময় আত্মারা পৃথিবীতে ঘোরাফেরা করে।

এই Folklorist বা লোকাচারবিদ এর মতে, সেই সময় একটা বিশ্বাস প্রচলিত ছিল যে মৃত ব্যক্তিদের আত্মা পৃথিবীতে বর্তমান থাকে। আর বছরের এই সময়টাই একটু অলৌকিক ব্যাপার গুলো বেশি ঘটে।

হ্যালোইন মৃত ব্যক্তিদের ধারণাকে খেলার ছলে বোঝার একটা দিক। এই সময় সকলের মৃত ব্যক্তিদের মতো অর্থাৎ ভূত বা গবলিন এর মত সাজে। নকল কবরের মতো করে বাড়ির সামনের জমিগুলো সাজানো হয়। এই ধরনের বিষয়গুলো কিন্তু বছরের অন্য সময় দেখা যায় না।

1000231999.jpg

Link

বর্তমানে প্রতিবছর ৩১ শে অক্টোবর ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে হ্যালো ইন হিসেবে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হয়। ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে এই দিনটিতে বাচ্চা থেকে বড় সকলেই খুব আনন্দ করে কাটায় এবং হ্যালোইন উদযাপন করে।

আজ তাহলে এখানেই শেষ করলাম। আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ‌।

Sort:  
Loading...
 9 months ago 

হ্যালো ইন এই বিষয়টা আমি অনেকবার নেটে দেখেছি তবে এই বিষয় সম্পর্কে তেমন একটা ঘাটাঘাটি করার মত মন মানসিকতা ছিল না তবে আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করার পর যতটুকু বুঝতে পারলাম একটা কুমড়ো কেটে বিভিন্ন ধরনের আকৃতি দেওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ভুতুড়ে পোশাক পরা আসলে এটা করা কতটা ঠিক আমার জানা নেই তবে আমার মনে হয় এই কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকাটাই উত্তম কারণ শেষে দেখা যায় কিছু মানুষ ভয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকে যাই হোক অসংখ্য ধন্যবাদ হ্যালো ইন সম্পর্কে আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য এবং এর ইতিহাস আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।