Incredible India monthly contest of March #1| What's the definition of a balanced lifestyle?
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে ভাল আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আমি এই প্লাটফর্মে একটি কনটেস্টের সম্পর্কে জানতে পারি। এই মাসে আমাদের কমিউনিটিতে আয়োজিত কনটেস্টের বিষয় হলো "what's the definition of a balance lifestyle?" আমার এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আজকে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে চলেছি। প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই অ্যাডমিন দিদিকে , যিনি এই কনটেস্ট টি আয়োজন করেছেন। পূর্বে আমি বেশ কয়েকটি কন্টেস্ট অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং বিভিন্ন কারণবশত অনেকগুলি কনটেস্ট এই অংশগ্রহণ করতেও পারিনি। তবে আজকের কনটেস্টের বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই আমি এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে ভীষণভাবে আগ্রহী। চলুন তাহলে এই কনটেস্টে মূল বিষয় সংক্রান্ত যে প্রশ্নগুলো করা হয়েছিল একে একে তার উত্তর দেওয়া যাক।
According to you, what's the definition of a balanced lifestyle? |
|---|
শৈশবে পিতৃহারা হওয়ার ফলে জীবনটা খুব একটা বেশি সহজ ছিল না । ছোট থেকেই অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে আমাদের বড় হতে হয়েছে। ছোট থেকেই সংসারে "নুন আনতে পান্তা ফুরোয়"----এইরকম অবস্থা দেখে বড় হয়েছি। তাই জীবনটাকে একটা ছকে বেঁধেই চলতে হয়েছে। আর এই ছক বাঁধা জীবন যে একেবারেই ভারসাম্যহীন নয় তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। সকালে চোখ খোলা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত জীবনটা একটা রুটিনের মধ্যেই রাখতে হয়েছে। তাই দৈনন্দিন জীবনে ভারসাম্য রক্ষা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমি নিজের জীবনে প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করেছি।
তাই আমার মনে হয় দৈনন্দিন জীবনে ভারসাম্য রক্ষার অর্থ হল সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানো এবং সেই সাথে যে কাজে সময় টি ব্যয় করবেন, সেই কাজটিও যেন ফলপ্রসূ হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত জীবনটাকে একটা সুন্দর ছকে বেঁধে নিতে হবে। এর মানে এই নয় যে ছকে বাধা জীবন থেকে নিজেকে বার করা যাবে না। প্রয়োজনে সেটাও করতে হবে । তবে আমার মনে হয় কোন কাজ করার পূর্বে আমরা যদি তার পরিকল্পনা করি তাহলে সে কাজটি অনেক বেশি সহজ এবং সুশৃংখলবদ্ধভাবে সম্পন্ন হয়। যেমন ধরুন, আপনি যদি ভাবেন আগামীকাল আপনি কলকাতায় যাবেন। তাহলে আপনাকে ভাবতে হবে বাড়ি থেকে স্টেশন পর্যন্ত কিভাবে যাবেন, তারপর কোন ট্রেনে উঠবেন, কোথায় নামবেন, কি কি কাজ করবেন, আবার কখন ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরবেন ইত্যাদি। তাহলে দেখুন তো আপনাকে তো পরপর ভাবতেই হচ্ছে, তাই না? তাই কোন কাজ করার পূর্বে আমাদের অবশ্যই তার পরিকল্পনা করতে হবে।
এই সময়ের সদ্ব্যবহার প্রসঙ্গে আরও একটা কথা না বললেই নয়। আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে সময়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সকলে প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা করে সময় পাই। তাই তো? কিন্তু সত্যিই কি প্রত্যেকে সমান সময় পায়? যেমন ধরুন কেউ সকাল ছটার সময় ঘুম থেকে ওঠে। আবার কেউ ঘুম থেকে উঠে সকাল দশটার সময়। তাহলে যে মানুষটা সকাল ছয়টার সময় ঘুম থেকে উঠলো সে কিন্তু অন্য জনের তুলনায় চার ঘন্টা অতিরিক্ত সময় পেল। এইতো গেল একদিনের হিসেব। এটাই আপনি সারা মাসের হিসাব করুন তো তাহলে দেখবেন যে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠছে সে কিন্তু অন্য মানুষের তুলনায় অনেক গুণ বেশি সময় পাচ্ছে। তাই আমাদেরকে অলসতা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে হবে। অলসতা দূর করতে পারলেই আমরা একটি ভারসাম্য যুক্ত জীবনযাপন করতে পারব।
How do you balance your daily day? Explain. |
|---|
এই প্রশ্নটা আমার জন্য খুবই সহজ। আমি পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজ শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে একেবারেই করতে পারি না। তাই আমার যতদূর মনে পড়ে, ছোটবেলা থেকেই আমি একটা রুটিন তৈরি করে রাখতাম। বছরে ৩৬৫ দিন সেই রুটিন ফলো করতে না পারলেও অন্তত ৩০০ দিন তো সেই রুটিন অবশ্যই ভালো করতাম। বড় হওয়ার সাথে সাথে অনেক অভ্যাস পরিবর্তন হলেও এটা কিন্তু এখনো হয়নি। আজও আমি সেই একই রকম ভাবে নিজের জন্য একটা রুটিন তৈরি করে রেখেছি। মাঝে মাঝে তুমি একদিন রুটিন এর বাইরে গিয়ে কাজ করলেও বেশিরভাগ দিন কিন্তু সেই রুটিনটাই ফলো করি। চলুন তাহলে আপনাদের সাথে শেয়ার করি আমি আমার দৈনন্দিন জীবনে কিভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে চলি--
সকালের শুভারম্ভ:
ছোট থেকেই আমার সকালবেলায় তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস। আগে যখন স্কুলে পড়তাম তখন তো সকালে পড়া থাকতো এজন্য তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হতো। তবে এখন আমার প্রত্যেক দিন সকাল বেলায় সাড়ে ছটায় কিংবা সাত টায় পড়ানো থাকে। তাই আমাকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হয়। সব স্টুডেন্টদের বাড়িতে যেহেতু আমার বাড়ির কাছাকাছি নয় তাই সঠিক সময়ে পৌঁছানোর জন্য আমাকে প্রত্যেকদিনই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হয়।
পড়াতে যাওয়া:
প্রতিদিন সকালেই ৯ টা কিংবা ১০ টা পর্যন্ত পড়ানো থাকে। শরীরচর্চা বিশেষ করার সময় পায় না বটে। তবে প্রত্যেকদিন কম-বেশি প্রায় ৯/১০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করি।
কলেজ যাওয়া:
পড়িয়ে বাড়ি এসে, স্নান, খাওয়া-দাওয়া করে ১১.৩০ এর মধ্যে কলেজে চলে যাই। সেখানে একের পর এক ক্লাস চলে। পড়াশোনা, হাসি- মজা- আড্ডা সবকিছুই চলে। কলেজ ছুটি হতে হতে বেজে যায় ৩.৩০। তারপর বাস ধরে বাড়ি আসতে সময় হয়ে যায় প্রায় ৪টে।
আর যেদিন কলেজ থাকে না সেদিন আমি বাড়িতে বৌদিকে রান্নার কাজে এবং বাড়ির নানা রকম কাজে সাহায্য করে থাকি। তবে কলেজ থাকলে সেই সময়টা কলেজে থাকার কারণে বাড়ির কাজে বেশি হেল্প করতে পারি না।
বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পড়ানো:
বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত পড়ানো চলে। সপ্তাহে কোন কোন দিন দশটা) সাড়ে দশটা পর্যন্তও পড়ানো থাকে। পড়িয়ে বাড়ি আসতে আসতে বেশ রাত হয়ে যায়।
পরিবার ও কাছের মানুষ দের সময় দেওয়া:
এই সকল কাজের মধ্যে কিন্তু পরিবার এবং নিজের পছন্দের মানুষজনকে সময় দেওয়াটাও জরুরী। তাই সকল কাজের মধ্যেও কিছুটা সময় বের করতে হয় তাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য। এছাড়াও বিভিন্ন রকম ফ্যামিলি ফাংশন হোক কিংবা বন্ধুবান্ধবের আয়োজিত অনুষ্ঠান হোক সেখানেও অংশগ্রহণ করতে হয়। তাই সমস্ত কাজের মধ্যে মাঝে মাঝে সেইসবের জন্যেও একটা সময় বের করতে হয়।
মাঝের খাওয়া- দাওয়া -ঘুম এইগুলো তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বেশিরভাগ দিনেই আমার রুটিন টা এইরকমই থাকে। এছাড়াও সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে নিজের আনুষঙ্গিক কাজকর্মগুলো নিজেকেই পড়ে রেখে যেতে হয়। এই আনুষঙ্গিক কাজকর্মের মধ্যে নিজের ঘর গোছানো, বাসন মাজা, ঘর মোছা ইত্যাদি তো রয়েছেই।
তাছাড়া কোন কাজে কোথাও যেতে হলে সেটা নিজেকেই যেতে হয়। বাড়ির প্রত্যেকটি সদস্যের নিজস্ব কিছু কাজ কর্ম থাকার ফলে ব্যাংকের কাজ করা থেকে শুরু করে পরীক্ষা দিতে যাওয়া পর্যন্ত সবই নিজেকেই করতে হয়। তাই জীবনে ভারসাম্য থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারসাম্যহীন জীবন কোনভাবেই সুখী জীবন হতে পারে না।
Do you think to balance lifestyle; Do we require equal participation of our family members? How? |
|---|
এই প্রশ্নের উত্তর আমি বলতে চাইব, অবশ্যই আমি একটি ভারসাম্য যুক্ত জীবনযাপনেই বিশ্বাসী। ভারসাম্যহীন জীবনযাপন কখনোই একটি মানুষকে সুপথে পরিচালিত করতে পারে না। এটা একান্তই আমার নিজস্ব মতামত। দৈহিক ভারসাম্য না থাকলে আমরা যেমন দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারি না ঠিক তেমনি জীবনে ভারসাম্য না থাকলে আমরা কিন্তু সু-ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারি না। আমি প্রত্যক্ষভাবে নিজের জীবনে এই ভারসাম্যটাকে বজায় রাখার চেষ্টা করি তাই আমি এর সুফল পেয়েছি।
তাই আমি অবশ্যই চাইবো আমার পাশাপাশি আমার ফ্যামিলি মেম্বার চাও এই ভারসাম্যটাকে নিজের জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করুক। এটা করতে পারলে জীবনটা অনেক বেশি সুশৃংখলাবদ্ধ ভাবে পরিচালিত হবে। আর আমাদের সুষ্ঠ সমাজ গড়ে তোলার জন্য সুশৃঙ্খলাবদ্ধ ও ভারসাম্য যুক্ত জীবন যাপনই একান্তভাবে কাম্য।
বাড়ির সদস্যদের মধ্যে যেভাবে এই ভারসাম্য আনা সম্ভব:
বাড়ির সদস্যদের মধ্যে এই ভারসাম্য আনতে হলে আমাদের একদম গোঁড়ার দিক থেকে শুরু করতে হবে। একটা শিশু যখন বেড়ে উঠছে, তখন থেকেই তাকে এই বিষয়টিতে অভ্যস্ত করতে হবে।
সে ছোট থেকে যা দেখবে তাই শিখবে। তাই তাকে অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করা শেখাতে হবে। এটা একদিনে সম্ভব নয়। তাই অল্প অল্প করে বাড়ির বড়দের এই কাজে দায়িত্ব নিতে হবে। যাতে তারা স্বাধীনচেতা মানুষ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
ছোটরা এক ্ই কাজ বারবার করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন তাদের সেটা আর অতিরিক্ত বোঝা মনে হয় না। তাই ছোট থেকেই তাদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে শেখাতে হবে।
কনটেস্টের নিয়ম অনুযায়ী এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ করার জন্য আমি আমার বেশ কিছু বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি--@isha.ish, @sampabiswas didi @mou.sumi didi কে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।





প্রথমেই বলব আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সেই সাথে আপনি আপনার জীবনের ধারাবাহিকতা আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন আসলে একটা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি কিংবা পিতাহারা পরিবারের সন্তানগুলো কিভাবে বড় হয় সেটা আমি নিজের চোখে বেশ ভালোভাবেই দেখেছি প্রতিনিয়ত একটা রুটিন তৈরি করে নেয়াটা তাদের বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।
সেই রুটিন অনুযায়ী চলতে হয় প্রতিনিয়ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে কাজগুলো করবে সেগুলো তাদেরকে প্রতিনিয়ত পালন করতে হয় আর একটা পরিবার বা একটা পরিবারের থেকে সেই রুটিন অনুযায়ী চলা অনেকটা কষ্টসাধ্য বলা যেতে পারে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিযোগিতার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।।
Cured by @damithudaya