বিজয় দশমী উদযাপন|| ফটোগ্রাফী
Hello Friends,
আজ দুর্দান্ত একটি দিনের কিছু মূহূর্ত নিয়ে চলে এসেছি আপনাদের মাঝে। ঈশ্বরের দেওয়া প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু এটার পরেও কিছু কিছু দিনকে আমরা নিজেদের মতো করে অতিবাহিত করি।
অনুরূপ, একটি বিশেষ দিন আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। আমাদের গ্রামের বাৎসরিক বাসন্তী পূজা সমাপনী ঠিক ঐ মুহুর্তে কিছু ঘটনা যেটা আমার জন্য স্মরণীয় ও বটে।
ঐদিন আমার সকালটা শুরু হয়েছিল আমার ছোট্ট ভাগ্নির সাথে খুনসুটি করতে করতে। সকালেই যেন কোমল হাতের স্পর্শ পাচ্ছিলাম আমার মুখে। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল আমার মা। আমি চোখ খুলতেই দেখি আমার ভাগ্নি আমার চোখের পাশেই হাত দিয়ে শুয়ে আছে। আমার ওপর রীতিমতো রেগে রয়েছে যেটা দেখে বুঝতে পারলাম।
আমি ব্রাশ করতে করতে উঠোনে গিয়েছিলাম তখনই আমার কাকু ডেকে বলল খাসির মাংস দিয়ে আসতে হবে। পহেলা বৈশাখ থেকেই শুরু হয়েছিল নিরামিষ বাড়িতে তাই আমিষের জন্য একটা আকর্ষণ কাজ করছিল। কোনোরকম হাত-মুখে জল দিয়েই কাকুর সাথে মন্দিরের মাঠে গিয়েছিলাম।
তবে মন্দিরে পৌঁছে দেখলাম বিজয় দশমী সমাপ্ত হয়েছিল এবং ডেকরেশনের লোকজন এসেছিল তাঁদের সব কিছু গুছিয়ে নেওয়ার জন্য। অন্যদিকে খাসিওয়ালা ও পৌঁছায়নি, তাই আমি ও কাকু চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
বিজয় দশমীর পরে মায়ের প্রতিমা ও জলঘট গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার রীতি আছে। কিন্তু আমাদের এখানে তো আর গঙ্গা নদী অবস্থিত না তাই জোয়ার-ভাটা আছে এমন নদীতেই আমরা প্রতিবছর মায়ের প্রতিমা বিসর্জন দিই।
উলুধ্বনি ও ঢাকের আওয়াজে শুনে আমি ও কাকু রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। এসেই দেখলাম মায়ের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার জন্য সকলেই অংশগ্রহণ করেছে।
ছবির এই দৃশ্যে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সকলেই সারিবদ্ধভাবে নদীতে যাচ্ছিল মায়ের প্রতিমা বিসর্জন দিতে। শিশুদের আগ্রহ দেখে যেন মনটা উৎফুল্ল হয়ে উঠলো, কারণ এদের কাছে রোদ্দুর কোনো ব্যাপারই না।
আমার বড় কাকুর বড় ছেলে রূপম ও অংশগ্রহণ করেছিল এবং নদীতে মায়ের প্রতিমা দিয়েই স্নান করে চলে এসেছিল। তবে তাপমাত্রা এতোটাই বেশি যে খালি পায়ে পিচঢালা পথে হাঁটা একদমই সম্ভব ছিল না।
বিসর্জন শেষে নারী পুরুষ সকলে মিলে কাঁদা মাটি মাখানোতে অংশগ্রহণ করে। হঠাৎ কে যেন এক কলস জল মায়ের মন্দিরের সামনে ঢেলে দিয়েছিল। আমার এক দাদু পরম শান্তিতে ধপাস করে সেখানে গড়াগড়ি করতে শুরু করেছিল।
আমি মোবাইল হাতে নিয়ে একটু দূরে থাকার চেষ্টা করেছিলাম। তবে শেখ রক্ষা আর হলো না। আমার এক দিদা মটর চালু করে মাঠের অর্ধেকটাই ভিজিয়ে দিয়েছিল। এবার আমার সময় আগত, আমার এক ছোটবোন আমার মোবাইলটা নিয়েছিল ছবি তুলতে।তবে এটা যে দিদা ও বৌদিদের পরিকল্পনা ছিল সেটা আমি বুঝতেই পারিনি।
কি আর করা আমি বাধ্য হয়েই দাঁড়িয়েছিলাম, কারণ সব জায়গায় শরীরের জোর দেখানো যায় না। অন্যদিকে এরকম কিছু করলে অঘটন ও ঘটতে পারে এটা ভেবেই চুপচাপ ছিলাম। আমি মাটিতে হাত না দিলেও আমার মুখে ও হাতে কোথাও কাঁদা মাখাতে বাদে রাখেনি ঐ দিন।
কাদামাটি মাখানোর এক মূহুর্তে আমরা কয়েকজন এক সাথে দাড়িয়ে ছবি তুলেছিলাম। যদিও প্রথম দিকে একটু রাগ হচ্ছিল কিন্তু সবার আনন্দ দেখে যেন আমার রাগটাও আনন্দেই পরিণত হয়েছিল।
হয়তো আজ যারা এক সাথে দাড়িয়ে ছবি তুলছি বছর পার হতে না হতেই কেউ কেউ পরপারে ও পাড়ি জমাতে পারে। এরকম অনেক স্মৃতি যেন ঐ মুহুর্তে মনে মধ্যে প্রতিচ্ছবি হয়ে ভেসে উঠেছিল।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
Your post has been successfully curated by @inspiracion at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
@inspiracion,
Thank you so much my dear honourable ma'am for your encouraging support.
আপনাদের বাসন্তী পূজার সুন্দর মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমার এক বন্ধু আছে তাদের বাসায় বাসন্তী পুজোতে গিয়েছিলাম। সেখানেই দেখেছি তারা সবাই অনেক মজা করে।
আর সত্যি কথা বলতে কি যে কোন উৎসব মানেই তো আনন্দ।