সম্পদ না কর্মই আমাদের অস্তিত্ব।

in Incredible India24 days ago
PhotoCollage_1733144447582.jpg

Hello Friends,
আমরা নিজেদের নিয়ে বড্ড ব্যস্ত আর সে কারণেই মাঝেমধ্যে হয়তো ঈশ্বরকেও ভুলে যাই। আজ একটু ভিন্ন বিষয় নিয়ে চলে এসেছি। দুপুরে শ্যামা পূজোর ঘট ডোবানোর সময় ছোটভাই কল করে ডেকেছিল। আমি রাস্তায় না গিয়ে বাড়ির পেছন দিয়ে যাচ্ছিলাম।

IMG20241202125034.jpg

পথিমধ্যেই একটি জীর্ণ কুঠির যেটা দেখে শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। দাদু ও দিদা পরপারে পাড়ি জমিয়েছে ৩/৪ বছর এবং এখনকার চিত্র দেখলে মনেই হয় না কোনো এক সময় এখানে কোনো পরিবার বসবাস করতো।

এই যে ছবি এটা ছিল রান্না ঘর যে ঘরে বসে আমিও ভাত খেয়েছি। সময়ের সাথে সাথে দেখুন কি একটা অবস্থা হয়েছে। দাদু ছিলেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক, দুই কণ্যা সন্তান যারা বিবাহিত। কিন্তু এখন সেই পরিবারের অস্তিত্বই নেই।

কর্ম অনুযায়ী আমাদের ফল ভোগ করতে হয় যেটার একটা বাস্তব চিত্র এটা। একটা সময় এই দাদু বাকি দুই ভাইয়ের সাথে কথাই বলতো না। এমনি ছোট ভাইয়ের বইয়ের সাথে তো একদমই না। কারণ তাঁরা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল। কিন্তু ঈশ্বরের কি লীলা? হঠাৎ দিদার যখন শেষ রাতে হার্ট অ্যাটাক হলো তখন ঐ ছোট ভাইয়ের ছেলে ও ছেলের বউ ই সবার আগে ছুটে এসেছিল।

যদিও দিদাকে ফেরানো সম্ভব হয়নি কারণ একদমই সময় দেননি। এবার কি হবে? যেহেতু ছেলে সন্তান নেই তাই নিয়মানুযায়ী মেয়েদের কাছেই থাকবে। গ্রামের মধ্যেই এক মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু ২/৪ দিন খাবার দেওয়ার পরে তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্যা। আমি স্ব-চোক্ষে দেখিনি তবে শুনেছি এই জামাইয়ের মায়ের সাথে নাকি একটা সময় দাদু খুব দূর ব্যবহার করেছিলেন। কোনো সন্তানই তাঁর মা-বাবার অসম্মান মেনে নিতে পারে না।

IMG20241202125046.jpg

যাইহোক, আমি আর ঐ দিকে যাবো না তাহলে একটা নির্মম চিত্রই সামনে চলে আসবে। বছর ঘুরতেই দাদু ও পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এইবার জমিজমা নিয়ে টানাটানি। এই তো স্বার্থের পৃথিবী। একজন বৃদ্ধ মানুষের দায়িত্ব নিতে নারাজ অথচ ভাগের বেলায় সমান দাবিদার। ভাবতেই অবাক লাগে, এরা কি মানুষ নাকি অন্যকিছু।

আমি এটা কখনো দেখিনি যে কোনো সন্তানকে কোনো মা-বাবা কষ্ট দেয়। অথচ এটা বারংবার চোখে লাগে যে সন্তানেরা রীতিমতো মা-বাবাকে কষ্ট দিচ্ছে। অনুরূপভাবে তাঁরা ও তাঁদের সন্তানদের থেকে অবহেলাই পাচ্ছে। এটাই তো প্রকৃতির নিয়ম। কর্ম যেমন ফলাফল ঠিক তেমনই হবে।

এটা হয়ে ঘরের জায়গা যেখানে ছাগল রাখার জন্য একটি ছোট ঘর এখন রয়েছে। এই তো পৃথিবী তাহলে আমরা কেন পরিবর্তন হই না। শুধু সাদা পোশাকে সামনে এগিয়ে ২/৪ টা কথা বললেই সকলে মানুষ হয় না।

আসুন না সবাই নিজেদের পরিবর্তন করি। এখনো এমন মানুষ আছে যারা রাতে খেয়ে ঘুমোতে পারে না। কারণ সকালে সন্তানের খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ অনেকেই বাড়ির পাশে মাছ-মাংস খাচ্ছেন এবং সাথে অপচয় ও করছেন। একা না বরং সকলকে নিয়ে ভালো থাকাকেই বলা হয় ভালো থাকা।

দাদুর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে শুধু এটাই মনে হচ্ছিল; কি আরামদায়ক জীবন ছিল কিন্তু এখন তাঁদের বসবাস স্থানের অস্তিত্বটাও নেই। এমন কোনো কাজ ও করেনি যেটার জন্য মানুষ তাঁদেরকে মনে রাখবে। আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী যেটা অনুপস্থিতির সাথে সাথেই বিলীন হয়ে যায়।

আমাদের কর্মই আমাদেরকে অমর করতে পারে। পৃথিবীতে এমন ও বিখ্যাত ব্যক্তি আছের শত শত বছর আগে তাঁরা শরীর ত্যাগ করেছেন অথচ পৃথিবী এখনো তাঁদেরকে মনে রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে তাঁদেরকে না বরং তাঁদের কর্মকে মনে রেখেছে।

আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

Sort:  
Loading...
 23 days ago 

ঠিক বলেছেন !সম্পদ নয়, কর্মই মানুষের অস্তিত্ব। কখনো চোখে পড়ে না বাবা-মা তার সন্তানকে অবহেলা করে, কিন্তু বর্তমান সময়ে সচরাচর দেখা যায় সন্তানরা তার বাবা-মাকে যথেষ্ট অবহেলা করে।এই বিষয়টি গভীরভাবে ভাবলে উত্তর একটাই আসবে,সেটা হল কর্মফল ।যে যেমন কর্ম করবে তাকে সেই কর্মফল ভোগ করতেই হবে। সেটা হোক ভালো কিংবা মন্দ। ভালো করলে ভালো মন্দ করলে মন্দ।আমরা এই পৃথিবীর কিছু সময়ের অতিথি মাত্র। আমাদের অস্তিত্বের বিনাশ হয়ে যাবে কিন্তু পৃথিবী যতদিন থাকবে আমাদের কর্মের অস্তিত্বই থেকে যাবে ।কর্মই মানুষকে অমর করে রাখে।
যাইহোক ,আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ।ভালো থাকবেন।

 22 days ago 

@sergeyk, thank you so much for your valuable support 💖