শ্যামা পূজোর রাতের কিছু মূহুর্ত।
নমস্কার বন্ধুরা,
দূর্দান্ত একটি রাতে সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এইরকম মূহুর্ত জীবনে বারংবার আসে না। তাই এই আনন্দঘন মূহুর্তের আনন্দ আপনাদেরকে উপভোগ করার সুযোগ করে দিতে চলে এসেছি।
বোনের বিয়ের চতুর্থ দিন তাই প্রথমবার নতুন জামাইয়ের সাথে করে আজ আমাদের বাড়িতে এসেছে। আমাদের ঘরেই এসে উঠেছে কারণ আমার বাবা বড় এবং কন্যাদান বাবাই করেছিল। এটাই প্রচলিত রীতি। যাইহোক, এই পর্ব শেষ করতেই ছোটভাই নয়ন ম্যাসেজ পাঠালো যেন দ্রুত ওদের বাড়িতে যাই। কারণ অতিথিদের মাঝে সকল খাবার সার্ভ করার দায়িত্বটা আমারই।
প্রথমেই মা'কে প্রণাম করে নিলাম। মায়ের প্রতিমা যেন চারদিকে আলোকিত করেছে যেটা সকল আলোকে হার মানাচ্ছে। তাছাড়া মন্দিরের সাজসজ্জা যেন মায়ের সৌন্দর্য দিগুন বৃদ্ধি করে রেখেছে। এক কথায় অপূর্ব লাগছে এবং আমি তো নিজের থেকেই কেমন যেন একটা অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করছি।
ইনি আমার সেই অসুস্থ জ্যাঠাবাবু, মূলত এই পূজোটা এই সময়ে করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে এই জ্যাঠাবাবু। মায়ের আগমনে যেন মৃতপ্রায় মানুষটিকেও আজ আগের থেকে অনেকটা সুস্থ্য মনে হচ্ছে। মায়ের মন্দিরের সামনে হুইল চেয়ারে করে বসিয়ে দিয়েছি আমরা সকল ভাই-বোন ধরাধরি করে।
অন্যদিকে ছোট ভাই ঠাকুরমাকে ছবি দেখাচ্ছে। বিনোদনের কোনো ঘাটতি নেই। আমার উপস্থিতিতে স্বস্তি পেয়ে এখন ওরা নিশ্চিত মনে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করছে।
জলখাবারের জন্য রয়েছে লুচি ও ডাল সাথে মিষ্টি ও ফলমূল। ডাল রান্না প্রায় শেষের দিকে। আমার সেজো জেঠিমা আবার বেশ নাম করা রাঁধুনি যিনি ২/৪ হাজার মানুষের খাবার ও রান্না করতে সক্ষম। যে কারণে রান্না নিয়ে আর তেমন কোনো চাপ নেই। তবে খাবারের স্বাদটা আমাকে চেক করতে হলো। আমি তো এক বাক্যেই বলে দিলাম চমৎকার হয়েছে।
ডাল ঠান্ডা করার জন্য তাপালে এবং গামলায় করে ঘরে খাটের ওপর রেখে বৈদ্যুতিক পাখা অন করে দিলাম যাতে দ্রুত ঠান্ডা হয়।
এভাবে খাবারের থালা গুলো সাজানো হয়েছে। কারণ ইতিমধ্যেই নিমন্ত্রিত অতিথিরা আসতে শুরু করেছে মা'কে প্রণাম জানানোর জন্য। এই ফাঁকে আমি আবার একটু উঠোনে গেলাম সকলকে টেবিলে বসার জন্য। নচেৎ সকলকে খাবার পৌঁছে দিতে একটু সমস্যা সৃষ্টি হবে।
শ্যামা পূজো শুরুর পূর্বে শিব ঠাকুরের উদ্দেশ্য মন্ত্রোচ্চারণ করতে হয়। যেখানে ভক্তি গীতির ও একটা অপশন করা হয়ে থাকে। তবে এটা বাধ্যতামূলক কি না আমার জানা নেই। ভিডিও তে আপনারা বেশ কিছু বিষয়ই দেখতে পেয়েছেন যেটাতে এই পূজোর অধিকাংশ চিত্রই এক কথায় উপস্থাপিত।
দাদু ও ছোট ভাইয়েরা মজা করে জলখাবার খাচ্ছে। এ বাবা! একদমই উৎফুল্ল মোবাইল ক্যামেরাতে নিজেকে তুলে ধরতে। দেখুন মোবাইল সামনে নিতেই যখন দেখেছে তখনই খাবার খাওয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে।
অন্য এক বড়'দা পরম শান্তিতে মহাপ্রসাদে সুখটান দিচ্ছিল কিন্তু ছবি তুলবো অমনি তাঁর অর্ধাঙ্গিনীর আগমণ এবং মহাপ্রসাদ কম খেতে বললো। পাশেই ছোটভাই ইশারায় বললাম সামনে থেকে সরিয়ে দিতে, নচেৎ ছবিই তুলতে পারছিলাম না।
আমি এই ছবি গুলো একটানাভাবে তুলতে পারিনি, কারণ তখনো খাবার সার্ভ এবং নতুন কেউ আসলে তাঁদের দিকে নজর রাখতে হচ্ছিল। মোটামুটি রাত নয়টার দিকে আমি সকলের থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে বেরিয়েছিলাম। কারণ আমাদের ঘরেই আজ বোন ও বোনের হাজবেন্ডসহ বাড়ির সকলের নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
এভাবেই পূজোতে রাতের কিছু সময় অতিবাহিত করলাম। আমার লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
মাঝে পোস্টে অনেক ঘাটতি তাই ইচ্ছে করেই চব্বিশ ঘন্টা অতিক্রম হওয়ার পূর্বে আরো একটি পোস্ট। তবে এইরকম লেখার বিষয়বস্তু সব সময় থাকেও না। বিষয়বস্তু আছে তাই লেখাটা তুলেই ধরলাম।