Better Life with Steem|| The Diary Game|| 12th December 2024
নমস্কার বন্ধুরা,
হঠাৎ মামার বাড়ি মামার সাথে দেখা করতে যাওয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠে খাবার শেষ করেই দেখলাম সকলের স্কুল ছুটি এবং ঘুরতে যাবে। আমার ও একটু ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছিল, এরই মধ্যে মনে পড়লো ভারত থেকে আসার পরে সকলেই মামার সাথে দেখা করেছে কিন্তু আমার যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
মা রাগ করছিল কেন আগে থেকে মামাকে জানাইনি। কারণ আমি গিয়ে বেশি সময় থাকি না যেটাতে মামা-মামিসহ ভাইদের ও অনেক আপত্তি। মনে মনে ভাবলাম আমি তো নিজেই জানতাম না যে আজ মামার বাড়িতে যাবো তাহলে কিভাবে বলবো।
আমি বিলম্ব না করেই দ্রুত স্নান সেরে বেরিয়ে পড়লাম। বাজারে পৌঁছে বিকাশ থেকে কিছু টাকা ক্যাশ করেছিলাম। ইতিমধ্যে, মামাকে কল করলাম যে আমি আসছি, শ্যামল যেন বাজারে থাকে। শ্যামল হচ্ছে আমার মামাতো ভাই যেহেতু শ্যামলের বাইক আছে বাজার থেকে যেতে অনেকটা সময় বেঁচে যাবে বৈকি।
এখানে ও রাস্তায় কাজ চলছে, তাই বাস ক্রসিংয়ে বেশ ঝামেলা হচ্ছিল।এক কথায় শহরের মতো যানযট তৈরি হচ্ছে যখনই বাস এই নির্দিষ্ট স্থানে আসছে। যে কারণে আমার খানিকটা সময় এখানে অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। সুযোগ কিছু কমলা ও দুই কেজি দইয়ের একটা বক্স নিয়ে নিয়েছিলাম।
কি মজা! অনেক দিন পরে মামার বাড়িতে, খুব আনন্দ হচ্ছিল। বস! বস! একটা ভাব মনে মনে অনুভব হচ্ছিল। যাইহোক, মামি ঘরে উঠতেই বললো হাত-মুখ ধুয়ে খাবারের টেবিলে বসতে। কিন্তু আমার একদমই খিদে ছিল না, তাই ফ্রিজে রাখা রসমালাইয়ের বক্স বের করে কিছুটা খেয়েছিলাম।
এরপর মোরগ ধরার অভিমান, মামি হেলদি তাই দৌড়াদৌড়ি আমারই করতে হলো। তবে খুব একটা সহজে যে ধরেছিলাম সেটা একদমই না। যাইহোক, অবশেষে মোরগ ধরে মামির কাছে দিয়ে আমি ঘুরতে বেরিয়েছিলাম।
মামা, সুপারি বাগানে গিয়েছিল কিন্তু বাড়ি ছাড়াও বাইরে দুটো বাগান যে কারণে বুঝতে পারছিলাম না কোনটায়? যাইহোক, এই সুযোগে একটু দেখার সুযোগ হলো পূর্ব পাশের বাগান ও জলকরটা। শৈশবে যখন মামার বাড়িতে বেড়াতে আসতাম তখন মামার সাথে সকল ভাই-বোন মিলে মাছ ধরতে আসতাম। কারণ এতো গুলো ভাই-বোন বাড়িতে থাকলে মামি, মা এবং মাসিদের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতো। কোনো কাজ তো হতোই না বরং কাজের ব্যাঘাত ঘটাতাম।
ঐখানে না পেয়ে উত্তর পাশের বাগানে গিয়েছিলাম মামাকে খুঁজতে। আমি পৌঁছেই দেখলাম মামা নিজে এবং সাথে একজন লোক নিয়ে সুপারি গাছের আগাছা পরিষ্কার করছিল। আগাছা বলছি যেটাকে সেইটা ও কিন্তু একটা শাক যেটা সম্ভবত আমার কোনো একটা পোস্টের আমাদের শ্রদ্ধেয়া এডমিন ম্যাম বলেছিলাম। এই মুহূর্তে আমার সঠিক নামটি মনে পড়ছে না।
মামাকে সাথে করে নিয়ে বাঁশ বাগানের পথে বাড়িতে ফিরেছিলাম। এই বাঁশ বাগানে আসলেই গা শিউরে ওঠে, কারণে ছোটবেলায় দাদুর কাছে অনেক ভূতের গল্প শুনেছি এবং এটাও সেই স্থান গুলোর মধ্যে একটি। এখনো বাঁশ গাছ গুলো যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রেখেছে যদিও বাঁশ কেটে ফেলাতে সূর্যের আলো এখন প্রবেশ করতে পারে। মোটামুটি বোঝার পরেও আমি কখনোই এখানে একা একা আসিনি, আজই প্রথম বার এলাম। ঘরে পৌঁছানোর আগেই গোয়ালে গিয়েছিলাম তবে বিদেশি গাভী তাই ধরতে সাহস পেলাম না। তারপর উঠোনে রৌদ্রে বসে আমি, মামা ও মামি নারকেল খেলাম ও গল্প করলাম। মামিও ফ্রি কারণ ইতিমধ্যে মামির রান্না শেষ।
ফেরার পথে দাইদ খালি নদী যদিও এখন আর নদীর চিন্হ নেই। তবে নৌকার দেখা মেলে এখানে এলেই। এই ব্রিজটি আমার ছোটবেলায় ছিল না তখন নৌ-পথে যাতায়াত করতে হতো। আমি এতোটাই শান্ত ছিলাম যে একবা নৌকা থেকে পড়ে গিয়েছিলাম এটা কিন্তু গল্প না বাস্তব ঘটনা। বাবা ও নৌকার মাঝিসহ কয়েকজন মিলে আমাকে নদীর জল থেকে খোঁজাখুঁজির পরে টেনে তুলেছিল। মা'কে যতোবার জিজ্ঞেস করেছি ততোবারই এটা এড়িয়ে গিয়েছে কেন জানিনা।
পড়ন্ত বিকেলেও রাস্তায় কাজ চলছিল। হয়তো আগামী দুই এক সপ্তাহের মধ্যেই রাস্তার কাজ সমাপ্ত হবে যেটা আমার ধারনা। যাইহোক, বাড়ি পৌঁছাতেই প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছিল। এভাবেই আমি আজকের দিনটি অতিবাহিত করেছিলাম।