Better Life with Steem|| The Diary Game|| 14th December 2024

in Incredible India12 days ago
PhotoCollage_1734186483372.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,
আজকেই প্রথম আমি কোনো রেলস্টেশনে ঘুরতে গিয়েছিলাম। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে ট্রেন চলাচল বহুল পরিচিত না। তাছাড়া আমি আজকে যে স্টেশন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসছি এটাও পাঁচ বছর আগে ছিল না।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই চোখ মুছতে মুছতে ব্রাশটা হাতে নিয়েই টিউবওয়েলে গিয়েছি তখন বড় কাকুকে প্রস্তুত দেখে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাচ্ছে। উত্তরে কাকু বললো ফয়লা বাজার, আমি বললাম আমার শুধুমাত্র পাঁচ মিনিট দরকার আমিও যাবো। আমাকে রেডি হতে দেখেই রণিত বায়না ধরলো আমাদের সাথে যাবে। যাইহোক, আমি কাকু ও রণিত বাইকে করে বেরিয়ে পড়লাম।

IMG20241214115401.jpg

প্রথমেই বাজারে পৌঁছে বাইক থেকে নেমে আমরা একটা ছোট্ট ঘড়ির দোকানে গিয়েছিলাম। বর্তমানে ঘড়ির প্রচলন নেই বললে চলে। তবে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাই মনে হয় ঘড়ির দোকান গুলো এখনো টিকিয়ে রেখেছে। যাইহোক, আমাদের একটা ঘড়ি ঠিক করানোর দরকার ছিল। তাই শপে রেখে আমরা একটা কম্পিউটারের শপে গিয়েছিলাম।

IMG20241214115916.jpg

কাকুর একটা ছবি ফ্রেমে আবদ্ধ করার দরকার ছিল। তাই আমরা সেখানে গিয়ে ফ্রেম পছন্দ করে লেখার অংশটুকু দিয়েই আবারো বাইকে উঠে বসেছিলাম।

IMG20241214122305.jpg

IMG20241214122254.jpg

বাইকে বসতেই কাকু বললো আমরা এখন চুলকাঠি বাজারের রেলস্টেশনে যাবো। আমার তো ভালোই লাগছিল কিন্তু কিছু বলছি না‌। অন্যদিকে রণিত ও ভীষণ খুশি হয়েছিল। প্রায় বিশ মিনিটের মতো সময় অতিবাহিত হলো স্টেশনে পৌঁছাতে।

IMG20241214124840.jpg

IMG20241214122452.jpg

বাইক বাইরে রেখে আমরা টিকিট কাউন্টারে গিয়েছিলাম। প্রথমেই যাত্রীদের ভাড়ার তালিকাটা দেখলাম। যথেষ্ট সাশ্রয়ী এবং আমার মনে হচ্ছে যাত্রী কমে যাওয়ায় অন্যান্য পরিবহন কর্তৃপক্ষ আবার আপত্তি না করে। কারণ মানুষ যদি এই সুবিধা সকলে জেনে যায় তাহলে বাসে করে আর কেউ যাবেই না।

IMG20241214122602.jpg

রণিত আজ অনেক ছবি তুলবে তাঁর দাদাকে দেখানোর জন্য। সাধারণত রূপম এদিক ওদিক ঘুরতে যায় কিন্তু রণিতের আর যাওয়া হয় না। তাছাড়া কাকিমা ও কাকু দুজনেই শিক্ষক যে কারণে বেড়াতো যাওয়ার মতো অবসর ও থাকে। যেটুকু অবসর পায় তখন বাড়িতে থেকেই বিশ্রাম করে। তাই অনেক ছবি নিয়ে রূপমকে দেখাতে হবে।

হয়তো চারবছর বয়স হবে একটা শিশু এসেছে তাঁর বাবা-মায়ের সাথে আমাদের মতো স্টেশনে ঘুরতে। খানিকক্ষণ মজা করলাম ভিডিও করার ছলে। সে কি লজ্জা! নামটাও বলতে না নারাজ। আমরা এবার ক্রসিংয়ে যাবো যেখানে দুটো লাইন গিয়ে এক স্থানে মিশেছে।

IMG20241214125835.jpg

IMG20241214125810.jpg

IMG20241214123201.jpg

IMG20241214123006.jpg

আমি ও রণিত হাঁটতে শুরু করলাম। ঠিক এখানে রেল লাইন হবে যেটা কাজ শুরুর আগেও কারো ধারণাই ছিল না। এখানে ছিল বাগান এবং বসত বাড়ি। রেল লাইনের সংযোগ স্থলে এক নারীকে জিজ্ঞেস করতে জানালেন এখানেই তাঁদের বাড়ি ছিল। কিন্তু রেল লাইনের জন্য সেটা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল এবং পরে বাড়িটা পাশেই নতুন করে তৈরি করা হয়েছে।

এই রেল লাইনের জন্য অনেক সুবিধা যদিও হয়েছে কিন্তু ঐ সময়ে অনেক মানুষকে বসত ভিটা ছাড়তে হয়েছে। পাশাপাশি এটার সঠিক মূল্য ও নাকি দেওয়া হয়নি। তবে এই কথার সত্যতা কতটুকু আমার জানা নেই। তবে এটা সত্য যে হতদরিদ্র কিছু পরিবার তো ছিলই তাঁদের জন্য নিশ্চয়ই সমস্যা হয়েছিল।

IMG20241214130316.jpg

IMG20241214125411.jpg

IMG20241214125354.jpg

আমাদের গ্রামের থেকে এই এলাকাটা অনেক বেশি উঁচু। কিন্তু রেললাইন তার থেকেও অনেক বেশি উঁচু করা হয়েছে এটার কারণ আমার জানা নেই। তবে এই বেশি উচ্চতার জন্যই দু'পাশের পরিবেশ যেন অন্যরকম মনে হচ্ছিল। তাছাড়া এদিকে গাছ সংখ্যা তুলনামূলক অন্যান্য এলাকার তুলনায় একটু বেশিই বলা যায়। রেল লাইনে দুই পাশের দিকে তাকালে মনে হয় সবুজের সমারোহ।

IMG20241214130558.jpg

IMG20241214130547.jpg

একটু পরেই ট্রেন চলে আসবে, তাই মোবাইলে সময় দেখে আমরা দ্রুত হেঁটে স্টেশনে ফিরে এসেছিলাম। সেখানে একটা দোকান তবে তেমন একটা ভালো খাবার দেখলাম না। অন্যদিকে খিদে ও পেয়েছে যেহেতু সকালে আমি কিছু খাইনি।

IMG20241214134145.jpg

বাজারে পৌঁছে আমার বোনের হাজবেন্ডের শপে গেলাম। কাকুর জন্য একটা শীতের জ্যাকেট নিতে হবে। তবে এখন আর না খেয়ে উপায় নেই। তাই আমি ও রণিত রেস্টুরেন্টে গেলাম খাবার খাওয়ার জন্য।

IMG20241214140219.jpg

ওহ! ভীষণ খিদে তাই পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই। আমরা চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার করলাম। একটা সম্পূর্ণ বিরিয়ানি আমরা দুইজন খেতে পারবো না। তাই একটা নিয়ে দুটো প্লেট এবং অতিরিক্ত একটা রোস্ট নিয়েছিলাম। মোটামুটি কিছুটা খেয়ে একটু ভালো লাগছিল।

আজকের কেনাকাটাঃ-

NO.NameBD PriceSteem PricePhoto
১)প্যান্ট২৫০.০০৳১০.০০
২)জ্যাকেট১২৫০.০০৳৫০.০০
৩)লুঙ্গি৭৫০.০০৳৩০.০০
৪)কেটস১২৫০.০০৳৫০.০০
৫)পটাটা১০০.০০৳০৪.০০

যাইহোক, কেনাকাটা শেষ এবার বাড়িতে ফেরার পালা। আমরা বাড়িতে পৌঁছেছি গোধূলি লগ্নের দিকে। মা কড়া করে বারণ করলো স্নান করা যাবে না। কিন্তু এই ঘোরাঘুরি করে স্নান না করলে রাতে ঘুম হবেই না। আমি মায়ের অনুপস্থিতিতে দ্রুত স্নান সেরেই কাকুর ঘরে কিছুক্ষণ থেকে আমাদের ঘরে গিয়েছিলাম। কিন্তু ইতিমধ্যে আমার হাঁচি শুরু অর্থাৎ ঠান্ডা লেগে গিয়েছে।

যাইহোক, এভাবেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

Sort:  
 12 days ago 

ট্রেন স্টেশন দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। তার চেয়েও ভালো লাগে ট্রেন দেখতে। যাতে সব জায়গাতে ট্রেন দেখার চেয়ে সবচেয়ে ভালো লেগেছিল লাওয়া ছড়া রেইনফরেস্টে ট্রেন লাইন দেখতে।
দুইপাশে বন আর তার মাছ দিয়ে রেললাইন চলে গেছে সাপের মত আঁকাবাঁকা হয়ে।
আমার জানামতে রোডস এন্ড হাইওয়ের কোন প্রকল্পের জন্য জায়গা নিলে জায়গার দামের তুলনায় তিনগুন টাকা দিয়ে থাকে।
অবশ্য রেল কর্তৃপক্ষ কি করে থাকে সেটা আমার জানা নেই।
শীতের সন্ধ্যায় মায়ের বারন শুনে গোসল না করাটাই বুদ্ধিমান এর কাজ হতো।

Hi, @piya3,

Your post has been manually curated!

Loading...