Memorable Day.

in Incredible India28 days ago
Green Brown Photo Collage Spring Break Party Invitation Square_20241129_010205_0000.png

Hello Friends,
অনেক দিন বাদে আমাদের বাড়িতে একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠান তবে সময়ের স্বল্পতার জন্য কাজের চাপ অনেকটাই বেশি ছিল। আজ আমি আমার কাকাতো বোনের বিবাহের কিছু মূহূর্ত তুলে ধরবো। ২৭শে নভেম্বর বোনের বিবাহ যেটা এক প্রকার হঠাৎ করেই।

কারণ আমাদের বাড়িতে পিসিদের বিবাহের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি যেখানে বিবাহের দিন পর্যন্ত পৌঁছাতেই ২/১ মাস সময় প্রয়োজন হয়। বাকি রইলো, বিবাহ উপলক্ষ্যে আয়োজন সেইটা আর নাই বা বললাম। বোনকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি এবং মন কোনোটাই ছিল না আমাদের। কিন্তু বিবিধ কারণে এই সময়েই বিয়েটা দিতেই হলো।

যদিও কথায় কথায় অনেকেই বলে "জন্ম-মৃত্যূ ও বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে।"প্রবাদ

বড়'দির আবার প্রশিক্ষণ যশোরে যে কারণে আমার ওপরেই ধকলটা বেশি গেছে। গতকাল সকাল থেকেই দৌড়াদৌড়ি শুরু। আগের দিন বিয়ের কেনাকাটা এবং আনুষঙ্গিক সব কিছু প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল।

এখনো আমরা গ্রামের মানুষেরা বিয়ের অনুষ্ঠানটা পূর্বের রীতিনীতি অনুসরণ করেই পালন করি যেটা শহরে বা বর্তমান আধুনিকতায় থাকা অনেকেরই হয়তো অজানা। কারণ এই বিয়ের অনুষ্ঠানের সকল কাজ আমরা নিজ হাতেই করি। যেমন খাবারের আয়োজন থেকে শুরু করে কন্যাদান অবধি সব কিছুই। তাহলে চলুন বন্ধুরা, যেভাবে গতকাল বিয়ের অনুষ্ঠানটা উপভোগ করেছি সেইইদিকে চলে যাই।

IMG20241127202623.jpg

যদিও ছেলেকে আশীর্বাদ করা হয় ছেলের বাড়িতেই কিন্তু লগ্ন এবং সময় উভয় দিক বিবেচনা করে ছেলের আশীর্বাদ ও আমাদের বাড়িতেই সম্পন্ন করা হয়েছিল। বাড়িতে প্রবেশ পথেই বরযাত্রীদের দরজা আটকানোর পর্বটা সেই কারণেই পরে করা হয়েছিল।

IMG20241127204125.jpg

ছেলের আশীর্বাদ শেষ হতেই কনের আশীর্বাদ পর্ব। অন্যদিকে পুরোহিত তখনো পথেই অবস্থান করছিলেন। রক্ষা যে গোধূলি লগ্ন ছিল না তাহলে আমাদের অবস্থা আরো বেহাল হতো। আশীর্বাদ পর্ব শেষ না করে আবার অধিবাস করা যায় না।

IMG_20241127_033041.jpg
IMG20241127203026.jpg

বিয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে বিনোদন পর্ব ও থাকে। যেমনটা ধরুন এখানে আমার এক ঠাকুরমা বরকে বরণ ও আশীর্বাদ করার পরে বরের ভাইকে বরণ করছিল এবং সাথে আমার অন্যান্য দুই বোনের হাজবেন্ডকেও। অন্যদিকে বরযাত্রী হয়ে আসা অনেক মেহমান যেখানে আমি ও রূপম ইচ্ছে করেই ছবি তুলতে গিয়েছিলাম। কারণ উদ্দেশ্যটা ছিল কে বা কারা এসেছে তাদের দর্শন। এটা ছাড়া বাকি সময় দৌড়ের ওপরেই থাকতে হবে‌।

IMG_20241129_005346.jpg

কন্যাদানের ক্ষেত্রে সাধারণত বাবা, কাকা ও জ্যাঠা মোখ্যম ভূমিকা পালন করেন। যাইহোক, এবার অধিবাস পর্ব এবং এটার পরেই বিবাহ লগ্ন রাত এগারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত।

IMG20241127230502.jpg
IMG20241127230455.jpg

এবার গেইট ধরার পালা। ইতিমধ্যে যে ক্রিয়া গুলো তুলে ধরেছি সেইটা ছিল আগের কাজ। বরযাত্রীরা আসা মাত্রই মূলত পথে আটকানো হয়। কিন্তু বিশেষ কিছু ক্রিয়া থাকায় সেটা আমরা প্রথমে করতে পারিনি‌। মোটামুটি, মিষ্টি এবং ভালো মতো একটা টাকার অংক আদায় করে গেইট ছেঁড়ে দেওয়া হয়েছিল।

যেহেতু, অনেক রাত তাই ছাদনাতলায় বর কনে পৌঁছে দিয়েই আমি রান্নার স্থানে গিয়েছিলাম। বরযাত্রীদের আপ্যায়নে কোনো ঘাটতি রাখা যাবে না। বরযাত্রীদের খাওয়ানো শেষ হতেই আমি ও বিয়ের ছাদনাতলায় এসেছিলাম।

IMG20241128011156.jpg
IMG20241128010854.jpg
IMG20241128005813.jpg

পুরোহিতের সাথে সাথে মন্ত্রোচ্চারণ, মালা বদল এবং শুভদৃষ্টির সাথে সাথে আরো না জানা অনেক কার্যক্রম।

IMG20241128043602_BURST002.jpg

বরপক্ষ ভোরেই জোয়ারের সময় যাত্রা করবে তাই কন্যাদানটা সেরে রাখত হবে। যে কারণে সকল ঠাকুরদা অর্থাৎ বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের ঘুম থেকেও ডেকে তোলা হয়েছিল। তখন রাত চারটা প্রায়, মোটামুটি কন্যাদান করতে করতে প্রায় রাত পাঁচটা বেজেছিল‌।

কন্যাদান করার পর থেকেই কনের সকল দায়িত্ব বর কর্তৃপক্ষের। এরপরে কাক ডাকা ভোরে মেয়েকে যাত্রা করানোর পরেই আমি ঘুমোতে গিয়েছিলাম।

আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

Sort:  
 27 days ago 
  • প্রাচীনকাল থেকেই বিয়ের অনেক রীতিনীতি আছে। আর সমাজের নিয়ম অনুসারে বরাবরের মতন বেশিরভাগ নিয়মকানুন শুধুমাত্র মেয়ে পক্ষের। বিয়ের অন্যান্য সমস্ত নিয়ম কানুন ভালোই লাগে, তার পেছনের যৌক্তিকতা গুলোও বোধগম্য হয়। তবে যে দুটি ক্ষেত্রে কোনো যুক্তি কখনোই আমার বোধগম্য হয়নি সেটি হলো কন্যাদানকনকাঞ্জলি রীতি।

  • প্রথমত বাবা মা যে সন্তানকে জন্ম দিয়ে তাকে লালন পালন করে বড় করলো, তাকে অন্য কাউকে দান করা যায় না। হ্যাঁ তার দায়িত্বভার হয়তো তুলে দেওয়া যেতে পারে। তাই এই কন্যাদান নামকরণে আমার আপত্তি আছে।

  • দ্বিতীয়ত কনকাঞ্জনীর মাধ্যমে বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পূর্বে, মেয়েরা তার মায়ের ঋণ শোধ করে আঁচলে চাল ফেলে। যেটা এই পৃথিবীর সব থেকে অসম্ভব কাজের মধ্যে একটি অন্যতম।

  • এই পৃথিবীতে বাবা-মায়ের ঋণ শোধ করার মতো যোগ্যতা বা ধৃষ্টতা কোনো সন্তানের মধ্যে আছে বলে আমি মানি না। সৌভাগ্যবশত আমার বিয়েতে কন্যাদান পর্ব থাকলেও, কনকাঞ্জলী পর্ব ছিল না।আমার বিয়ের সময় মা বেঁচে ছিলেন না, তাই মায়ের আঁচলে চাল ফেলার নিয়মটি আমার করা হয়নি। বিয়ের পর মায়ের আশীর্বাদ পাইনি এটা আমার জীবনের বড় কষ্ট। উল্টো দিকে মা না থাকার কারণে ওই নিয়মটি আমাকে করতে হয়নি এটা ভেবেও ভালো লাগে। কারণ মা থাকলে সমাজের নিয়ম অনুসারে ওই নিয়মটি আমাকে দিয়ে ঠিক করাতো, এটাও আমি জানি।

  • যাইহোক আপনার বোনের বিয়ে খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে জেনে খুশি হলাম। বাড়ির প্রত্যেকের সহযোগিতায় এতো বড় একটা অনুষ্ঠানকে আপনারা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছেন। আপনার বোনের আগামী জীবনের জন্য অনেক শুভকামনা রইলো। পাশাপাশি আপনাকেও ধন্যবাদ সেই মুহূর্তগুলোকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Loading...