কর্ণাটক মহীশূর প্যালেস সহ রইলো কিছু অসাধারণ দক্ষিণ ভারতের ঐতিহাসিক ছবি।
প্রিয় বন্ধুরা,
কেমন আছে আপনারা সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। প্রায়শঃই আমি ইতিহাস নিয়ে কথা বলি এবং আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করি ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থাপত্যের নিদর্শন।
ঠিক সেই রকম আজকেও আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি দক্ষিণ ভারতের কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শনের ছবি।
আপনাদের মধ্যে অনেকেই আমার ভারত ভ্রমণের নেশার সাথে ওয়াকিবহাল এবং গত বছর দক্ষিণ ভারত যাবার কথা আমি লেখাতেও উল্লেখ করেছিলাম।
আজকে তাই ভারতের ইতিহাসের আরো কিছু নিদর্শনের ছবি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
ইতিহাস রক্তক্ষরণের অনেক কথা বলে কিন্তু তার পাশাপশি কিন্তু সৃষ্টির অনেক গল্পো আমরা খুঁজে পাই এই ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে।
মহীশূরের ওয়াদিয়ার রাজবংশের নির্মিত ১৪ শতকের এই রাজমহল এখনও কর্ণাটকের বহু পর্যটকের আকর্ষণের বিষয়বস্তু।
যোদুরায় ওয়াদিয়ার ছিলেন প্রথম মহীশূর রাজা, যিনি প্রথমে কাঠের তৈরি করেন এই প্যালেস কিন্তু আগুনে সেই স্থাপত্য নষ্ট হয়ে যায় ১৮৯৭ সালে রাজকুমারী জায়লক্ষ্মানির বিবাহের সময়।
এই ঘটনার পরে মহারাজা কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার(৪) এবং তাঁর মাতা মহারানী কেম্পানাঞ্জামানি নতুনকরে মহলটি পুনঃনির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।
মহীশূর প্যালেস এর অভ্যন্তরীণ কিছু ছবি, যদিও এখন কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন করে:-
ব্রিটিশ আর্কিটেক্ট হেনরী ইরেইন এর সহযোগিতায় আজকের মহীশূর প্যালেস পুনঃনির্মাণ সমাপ্ত হয় ১৯১২ সালে। সেই সময় খরচ হয়েছিল ৪১ লক্ষ টাকা এই প্যালেস নির্মাণ করতে।
বাকিটা আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন ছবিতে তার অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য্যের এবং সৃষ্টির দক্ষতা। এই মহলের সোনার সিংহাসন এবং রুপোর দরজা সহ, বাইজী মহলের অভ্যন্তরীণ নকশা আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে সেই সময় মানুষের চিন্তাধারা নিয়ে।
বর্তমানে কর্ণাটক সরকার এই মহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন, ফলে বেশ কিছু আধুনিক পরিবর্তন করা হয়েছে।
বৃন্দাবন গার্ডেন - কর্ণাটক
চামুনডেশ্বরি মন্দির মহীশূর:-
দক্ষিণ ভারতে আসলে আপনাকে সময় নিয়ে আসতে হবে যদি আপনি পুরো দক্ষিণ ভারত উপভোগ করতে চান। কারণ একটি জায়গা সঠিকভাবে দেখতে আপনার একদিন কম পরে যাবে।
এইসব ঐতিহাসিক মহলের অভ্যন্তরীণ কারুকাজ সঠিকভাবে দেখতে গিয়ে আপনার সময় কিভাবে কেটে যাবে আপনি বুঝতেই পারবেন না।
আমি মোট তিনবার গিয়ে নিজের দক্ষিণ ভারত সফর সম্পন্ন করতে পেরেছি, কারণ আমি তিনবার গিয়েছি টুর অপারেটর এর সাথে, কাজেই তাদের নির্দিষ্ট সময় বাধা থাকে একটি জায়গার জন্য।
তাই একবারে সবজায়গায় ঘোরা সম্ভব হয়নি। কাজেই আমি প্রতিবার চেষ্টা করেছি এদের সাথে যোগদান করে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস চাক্ষুষ করতে।
টিপু সুলতান এর সময়ের গুম্বাজ-এ- শাহী:-
৮৫ কিলো সন দিয়ে তৈরি হাতির পিঠের সিট তৈরি করা হয়েছিল, এরকম অনেক কিছু আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে একসময় সারা পৃথিবীর মধ্যে ধনী দেশ কেবলমাত্র লুটতরাজ হয়ে আজকে কোন জায়গাতে এসে দাঁড়িয়েছে।
কখনো কখনো আমার মনে হয় যদি আজকে ভেঙ্গে যাওয়া দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতো তাহলে বিদশিরা এইভাবে ভারতের অনেক কিছু লুঠ করে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারতেন না।
যা কিছু আজও রয়েছে ভারতে সেটা বলে দেয় সতেরশ দশকের ভারতের চেহারা কেমন ছিল, সেটা যে শুধু গল্পো নয়, তার প্রমাণস্বরূপ রয়েছে এইসকল ঐতিহাসিক মহলের নিদর্শন।
চোখ ধাঁধানো এই সকল স্থান আজও ভারতকে সংজ্ঞায়িত করে, সময় সুযোগ হলে ঘুরে দেখে আসবেন, কারণ লেখায় সবটা বোঝানো সম্ভব নয়।
বৃন্দাবন গার্ডেন ঘুরলে আপনাকে অবাক হতে হবে আলোকসজ্জা দেখে, সঙ্গে ডিজিটাল ক্যামেরা রাখবেন সঠিক সৌন্দর্য্য সেটাতেই ধরা কিছুটা সম্ভব।
চেষ্টা করলাম কিছুটা ইতিহাস তুলে ধরতে, বাকিটা আপনারা পড়ে নিতে পারেন এখন অনলাইনে, সবটাই এখন সেখানে পাওয়া যায় সহজেই, তবে যেকোনো কিছু সম্পর্কে পড়া আর চাক্ষুষ নিদর্শন করবার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।
আজ এখানেই শেষ করছি, ভালো থাকবেন সবাই।
যদিও আমি একজন বাংলাদেশী ভারতে গিয়ে সকল ঐতিহ্যবাহী মহল গুলো দেখার, সৌভাগ্য আমার হবে না কখনো।কিন্তু তারপরেও আপনার পোষ্টের মধ্যে আপনি খুব সুন্দর ভাবেই,অনেকগুলো ফটোগ্রাফি তুলে ধরেছেন ঐতিহ্যবাহী ওই পুরনো মহল গুলোর।
আমার কাছে আপনার পোষ্টের প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি। তার সাথে আপনার লেখা এক কথায় অসাধারণ লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ফটোগ্রাফি গুলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার অনেক অনেক শুভকামনা।