প্রায় এক বছর পর আবার প্রিয় ইন্সটিটিউটে

in Incredible India9 months ago (edited)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।



1000008348.jpg

সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আবারও আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গপলাম আমার আরেকটা নতুন পোষ্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার কলেজ সম্পর্কে আলেচনা করব৷ মানে দীর্ঘ এক বছর পর কলেজ ক্যাম্পাসে কাটানো মুহূর্ত নিয়ে শেয়ার করব। চলুন শুরু করি-

গতবার যখন বাড়ীতে ছিলাম। ডিসেম্বর মাসে আর কি। তখন আমার কিছু কাগজ তুলতে আমার সেই চিরচেনা ইন্সটিটিউট এ গিয়েছিলাম। আমি ২০২৩ সালে ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। তারপর ১৪ মাস মতো সময় আমি এডমিশনে জন্য গাজিপুর,ঢাকাতে ছিলাম। যার কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আর ইন্সটিটিউটে যাওয়া হয় নাই। এখন যেহেতু আমি সেখানকার ছাত্র আর নেই, যার ফলে প্রয়োজন ছাড়া যাওয়া হয় না। আমার ডিপ্লোমা পাশের সার্টিফিকেট এবং মার্কশীটগুলো তোলার জন্য যাওয়ার দরকার ছিল। কারণ বিভিন্ন সময় জবের আবেদনের জন্য কাগজগুলো দরকার হয়। যার ফলে এখনই কাগজগুলো তুলতে হবে। কারণ কখন কোথায় চলে যায় তার ঠিক নাই।

আমি আমার দুই বন্ধু একই দিনে সার্টিফিকেট তোলার জন্য সিদ্ধান্ত নেই এবং কলে কথা বলে আলোচনা করি। একটা দিন ঠিক করি। ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ ছিল ২০২৪ সালের। আমি সকাল বেলা বাড়ী থেকে বের হওয়ার আগে বন্ধুদেরকে কল দিয়ে বলে দেয়। আমরা তিন জন তিন জায়গায় থাকি। কলেজে গিয়ে আমরা এক সাথে দেখা করব৷ আমি সকাল ১১ টার দিকে আমাদের ইন্সটিটিউটে চলে যায়। আমার কলেজের নাম "কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট"। আমাদের বাড়ী থেকে ইন্সটিটিউট এ যেতে সময় লাগে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মতো সময়। আমি যাওয়ার আগে আমার বন্ধুরা কলেজে পৌছে গিয়েছিল। আমার একটা জরুরি কাজের কারণে যেতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে আগে বন্ধুদের সাথে দেখা করি।

20241224_105545.jpg

পলিটেকনিক গেইট

ভিতরে ঢোকার আগে আমরা কম্পিউটার দোকান থেকে সার্টিফিকেট তোলার একটা ফরম নিলাম সেটা পূরণ করে, তার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজ যুক্ত করে নিয়ে তিনজন চলে গেলাম আমাদের প্রশাসনিক ভবনের রেজিস্ট্রার শাখায়। সেখান থেকে কাগজ তুলতে হবে। আমরা রেজিস্ট্রার শাখায় গিয়ে ফরম জমা দিলাম। স্যার আমাদেরকে বলে পরের দিন নিতে আসতে। কিন্তু আমাদের বাসা যেহেতু সবার দূরে এজন্য স্যারকে রিকুয়েষ্ট করি সেদিনই দেওয়ার জন্য। তিনি তারপর রাজি হন এবং বলেন বিকাল ৩ টার সময় আসতে। আমরাও রাজি হলাম।

20241224_113449.jpg20241224_113456.jpg
20241224_113454.jpg20241224_113525.jpg

প্রশাসনিক ভবণের কিছু চিত্র।

প্রশাসনিক ভবনের মধ্যে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের টব রাখা আছে যেগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আমরা এবার বাইরে মাঠের দিকে চলে আসলাম। এখন ৩/৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে কি করা যায় আমরা তিনজন ভাবতে লাগলাম। তারপর মনে পরল আমার বাজার থেকে কিছু জিনিস কেনা দরকার। আমরা এরপর চলে যায় কুষ্টিয়া এনএস রোডে। সেখানে গিয়ে আগে একটা দোকান থেকে বন্ধুর ফোনের ব্যাক কভার কিনি তারপর চলে যায় একটা টেডিবিয়ারের দোকানে। মূলত আমার ভাগিনীর জন্য কিনতে হবে। কয়েকটা দোকান ঘুরে আমি একটা টেডি কিনে নিলাম।

20241224_125516.jpg

টেডিবিয়ার কেনার সময়।

এরপর হাঁটতে হাটতে চলে গেলাম একটা সু স্টোরে স্যান্ডেল কেনার জন্য। আমার জন্য আরকি। অনেকগুলো দোকান ঘুরে একটা স্যান্ডেক পছন্দ করে কিনে নিলাম। আসলে কাজও হচ্ছে আবার সময়ের সঠিক ব্যবহারও হচ্ছে। আমি স্যান্ডেলটা ৩৬০ টাকা দিয়ে কিনে ছিলাম।

20241224_130657.jpg

সু স্টোর।

এরপর আমরা হাটতে হাঁটতে চলে আসি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে। তখন মাত্র ২ টা বাজে আরও এক ঘন্টা বসে থাকতে হবে। এদিকে খুদাও লাগছিল। কি করা যায় ভাবতেছিলাম। আমরা তিন জন কলেজ মাঠে বসে বেশ কিছুটা সময় ক্রিকেট খেলা হচ্ছিল সেটা দেখলাম। তারপর চলে গেলাম একটা হোটেলে কিছু খাওয়ার জন্য। আসলে বাইরে দুপুরের খাবার খেলে তৃপ্তি আসে না। কিছু খেতে হবে তাই আর কি৷ আমরা কিছু ফাস্টফুড অডার দিলাম তিন জনের জন্য।

1000003012.jpg1000003017.jpg

হোটেলে খাওয়ার মুহূর্ত

খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা বিলটা পরিশোধ করে চলে যায় আমাদের ইন্সটিটিউটেট রেজিস্ট্রার শাখায়। কিন্তু কষ্টের বিষয় হলো তখনও আমাদের কাগজগুলো স্যার ঠিক করে নাই। সারা দিন এভাবে কয়েকটা কাগজ তোলার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। তারপর স্যার বললো আরও কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে। আমরা মাঠে গিয়ে শহীদ মিনারে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

20241224_144227.jpg20241224_144124.jpg

অপেক্ষার মূহুর্ত

সময় যেন আর শেষ হতে চায় না। সেদিন কলেজে পরিক্ষা চলিতেছি যার জন্য ছোট ভাইদের সাথেও দেখা করা হয় নাই। এরপর আমরা ৩:৩০ মিনিটের দিকে গিয়ে আমাদের সেই কাগজগুলো হাতে পায়।

20241224_153927.jpg

চারটা বছরের কষ্টের ফল।

চারটা বছরের কষ্টের ফল হলো এই কাগজগুলো।৷ যা আগামি জীবনটা সুন্দর নির্দেশীকা। এটা দিয়েই হয়ত বাকি জীবনের স্বপ্নটা পূরণ হলেও হতে পারে। এরপর আমরা তিনজন বিদায় জানি আমাদের নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। এভাবেই দীর্ঘ দিন পর আমার নিজের কলেজ ক্যাম্পাসে সময় কাটিয়েছিলাম।

আশা করি আমার আজকের পোষ্টটা আপনাদের সবার কাছে ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।

1000007009.png

1000007010.gif

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আজকের পোষ্টটা পড়ার জন্য।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...
 9 months ago 

আপনারা আবারো দুই বন্ধু মিলে আপনাদের ক্যাম্পাসে গিয়েছেন এবং আপনাদের সার্টিফিকেট তুলেছেন সেখানে অনেকটা সময় পার করেছেন টেডি বিয়ার কিনেছেন মোটামুটি বলা যায় ওই দিনটা আপনাদের জন্য অনেক বেশি স্পেশাল ছিল অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধুর সাথে কাটানো আনন্দঘন মুহূর্তটা এবং কেনাকাটা করার মুহূর্তটা আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।

 9 months ago 

অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।