আমার জীবনের গল্প
আসসালামু আলাইকুম
- কেমন আছেন সবাই আশা করি সকলে অনেক বেশি ভাল আছেন আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আমার জীবনের বাস্তব একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করি সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করি।
আমার জীবনের একেক সময় মনে হয় যেন এক অচেনা পথ, যার মোড় ঘুরতেই নতুন কিছু দেখা দেয়।জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্ত, হাসিখুশি কিংবা দুঃখ কষ্ট সবই আমাকে কিছু না কিছু শিখিয়েছে। কিন্তু সবকিছুর মাঝেও কিছু ব্যস্ততা এমন ছিল, যা আমাকে সত্যিই বড় করেছে। আমি গ্রামে বড় হয়েছি। আমার গ্রামটা ছোট হলেও বেশ জমজমাট ছিল।
আমার পরিবার ছিল মধ্যবিত্ত, যেখানে বাবা-মা দুইজনেই পরিশ্রমী, কিন্তু তাদের জীবনযাত্রা তেমন সুখকর ছিল না। আমার বাবা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী, আর মা একজন গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই বুঝতে পারতাম, আমাদের জন্য অনেক কিছুই সীমিত ছিল, কিন্তু তাদের দিক থেকে কখনো মনে হয়নি যে কোন কিছুই কম। স্কুলে পড়াশোনা ছিল আমার ভালো লাগার জায়গা।
কিন্তু কখনো মনে হয়নি যে সবকিছু সহজে পাওয়া যায়। একবার, যখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি তখন আমাদের পরিবারে বড় আর্থিক সংকট এসে পড়েছিল। হঠাৎ বাবার ব্যবসায় অনেক লস হয়ে যায়। মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল । আমার কাছে তখন জীবনটা খুব কঠিন মনে হচ্ছিল। স্কুলের পর বাড়ি ফিরে প্রতিদিনই টেনশনে থাকতাম। কিভাবে সব কিছু চলবে,কিভাবে মা-বাবাকে সাহায্য করবো,এসব প্রশ্ন ঘুরত মাথায়। তবে আমি জানতাম, আমাকে কিছু করতে হবে।
আমার মধ্যে এক ধরনের অদৃশ্য শক্তি কাজ করেছিল। যেটি আমাকে সাহস জুগিয়ে ছিল। আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতাম এবং পাশাপাশি কিছু সময় টিউশনি দিতে শুরু করলাম। একটু একটু করে সেই টাকাগুলো বাবা মায়ের হাতে পৌঁছে দিতাম। অবশ্যই সবকিছু সহজ ছিল না তবে আমি জানতাম জীবন কখনো এক রকম থাকে না। পড়াশোনা শেষ করার পর অনেকেই বলেছিল চাকরি পাওয়ার জন্য আমাকে বড় কোন শহরে যেতে হবে।
কিন্তু চাকরি পাওয়ার আগেই বাবা মাকে বিয়ে দিয়ে দিল। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি। আমার বাবা-মা ও আজ অনেক ভালো আছে। সময় কখন কাকে কোথায় নিয়ে যাবে আমরা সত্যিই বুঝতে পারি না। তবে হাল ছাড়লে চলবে না,মনের সাহস জুগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তবে সবকিছুর মাঝেও জীবন আমাকে যে সবচেয়ে বড় শিক্ষা দিয়েছে তা হল প্রকৃত সুখ অর্জন হয় না, বাহ্যিক সমৃদ্ধি থেকে, বরং অন্তদৃষ্টি আত্মবিশ্বাস এবং নিজস্ব পছন্দ থেকে।
আমাদের জীবনের বাস্তবতা কখনোই একই রকম থাকে না মাঝে মাঝে দুর্ভাগ্য আসে আবার কখনো সৌভাগ্য। কিন্তু যদি আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রম থাকে তবে সাফল্য ধরা দেবে। সেটা সময়ের ব্যাপার। এখন আমার জীবনে সেই সব দিন ফিরে আসে যখন আমি মনে করতাম সব শেষ। কিন্তু আজ আমি জানি জীবনের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা আমাদের একান্ত নিজস্ব কাজ। আর সেই কাজটি শুরু হয় ভেতরে সাহস থেকে, যা আমাদের কখনো ছাড়ে না।
- যাই হোক আজ এই পর্যন্তই,সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
জীবনের সবথেকে বাস্তব সত্যিটাকে আপনি উপরের লাইনে তুলে ধরেছেন। আপনার পোস্টটা পড়তে গিয়ে নিজের জীবনের কিছুটা ঝলক যেন দেখতে পেলাম। প্রত্যেকের জীবনে লড়াইটা ভিন্ন হয়, কিন্তু কিছু অনুভূতি যেন অকারনেই মিলে যায়।
তবে বাবা মায়ের পাশে দাঁড়ানোর যে ইচ্ছা বা অনুভূতি সেই ছোট বয়সে আপনি অনুভব করেছিলেন, সেটাই আপনার জীবনের প্রকৃত শিক্ষা ছিলো। তবে আজ জীবনের পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে, আপনি নিজে ভালো আছেন এবং আপনার বাবা-মাও ভালো আছেন জেনে সত্যিই ভালো লাগছে।
সন্তান হিসেবে এটাই বোধহয় সবথেকে বড় প্রাপ্তি, যেখানে নিজের সন্তানকে ভালো রাখার পাশাপাশি নিজের বাবা-মাকেও আমরা ভালো রাখতে পারি। ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে। আপনার জীবনের কিছু অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
প্রথমে জানাই আপু, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। একদম আপু ছোটকাল থেকেই আমি পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছি। আমাদের প্রতিটা সন্তানেরই উচিত এরকম শিক্ষা অর্জন করা। বাবা মায়ের খারাপ সময়ে পাশে থাকা এবং ভালো সময়ও পাশে থাকা। আপনার কথাগুলো আমার খুবই ভালো লেগেছে আপু ভালো থাকবেন।
জীবনে কিছু কিছু পরিস্থিতি আসে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া একটি কঠিন বিষয়। যারা এই পরিস্থিতিতে নিজেকে ধরে রাখতে পেরেছে তারা জীবনে কিছু করতে পেরেছে। জীবনে খারাপ সময় আসবে ভালো এবং খারাপ সময় নিয়েই আমাদের জীবন। আপনার বাবার ব্যবসার দিক থেকে কিছুটা লস হয়ে যায় তার পাশাপাশি আপনার আম্মা অসুস্থ হয়ে যায়। আপনি মেয়ে হিসাবেও সেই সময় আপনার বাবা-মায়ের পাশে ছিলেন এটা অনেক বড় একটি কাজ বলে আমার কাছে মনে হয়। টিউশনি করে হয়তোবা অল্প টাকা উপার্জন করতে পেরেছেন তবুও সেই সময় লক্ষ টাকার চেয়েও কম ছিলো না। ধন্যবাদ আপনার জীবনের একটি ছোট্ট গল্প শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আসলে পরিস্থিতির শিকার না হলে কখনোই সেই পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব নয়।। জীবনে খারাপ সময় আসবে আবার ভালো সময় আসবে এজন্য আমাদের অপেক্ষা করা উচিত ধৈর্য ধরা উচিত। সেই সামান্য টিউশনি টাকায় আমার কাছে অনেক অনেক মূল্যবান।আবারো আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা আমি একজন হতো দরিদ্র বাবার ছেলে যারা মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠেছে তারাই জানে এর গল্প আসলে মধ্যবিত্ত পরিবার অনেকটাই ভরা কলসের মত । অভাবের সময় না পারা যায় কাউকে বলতে আবার না পরা যায় সইতে।
দুঃখ কষ্ট সুখ-শান্তি নিয়েই তো দিনচলা মধ্যবিত্ত পরিবারের আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার গল্প খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে গুছিয়ে লেখার জন্য সর্বশেষ এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো যে আপনি সুখেই আছেন দোয়া রইল সারা জীবন সুখেই থাকেন।