"তাতানের জীবনের প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স এর মুহুর্ত"
![]()
|
|---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি খুব ভালো কেটেছে। আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তাতানের প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্সের কথা। যদিও অনেকটা দেরি হলো, তবে মূহুর্ত গুলো বড্ড দামি, তাই ভাবলাম থেকে যাক স্মৃতির সাথে সাথে এই প্ল্যাটফর্মেও।
দিদির জন্মদিনের সময় আপনাদের জানিয়েছিলাম যে, তাতানদের স্কুলের অ্যানুয়াল ফাংশনে অংশগ্রহণের কারণে ওকে প্রতিদিন সেই সময় স্কুলে যেতে হয়েছিলো রিহার্সালের জন্য। আর ডিসেম্বরের ৪ তারিখ ছিলো অ্যানুয়াল ফাংশন। তার আগের দিন অর্থাৎ দিদির জন্মদিনের দিন ডিনার করে এসে সকলেই তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম।
পরদিন সকালবেলায় তাতান ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নিয়েছিলো স্কুলে যাওয়ার জন্য। নিয়ম অনুসারে সাথে শুধুমাত্র দুজন অভিভাবক যাওয়ার অনুমতি ছিলো। কিন্তু দিদির সেদিন ডিউটি থাকায় ও যেতে পারেনি। তাতান যে গাড়িতে করে স্কুলে যায় সেই গাড়িতে করে দাদা একাই গিয়েছিলো। দাদার সাথে সাথে অন্যান্য বাচ্চাদের অভিভাবকও ছিলো।
তিতলিদের সেদিন স্কুল ছুটি ছিলো, যে কারণে ও বাড়িতেই ছিলো। তাই আমি দাদার সাথে আর যেতে পারিনি। তবে সেখানে পৌঁছে প্রতিটি মুহূর্ত হোয়াটসঅ্যাপে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে দাদা পাঠিয়েছিলো। তাই বলতে পারেন খানিক বাড়িতে বসেই উপভোগ করেছিলাম তাতানের প্রথম পারফরম্যান্স।
বাড়ি থেকেই ওদেরকে ড্রেস পড়ে যেতে হতো। তাতান একটা হাঁস(Duck) সেজেছিলো। তাই সেই রকমই একটা ড্রেস আগে থেকেই কেনা হয়েছিলো এবং সেটা পরেই সকালবেলাতে উঠে ওকে স্কুলে যেতে হয়েছিলো। প্রতিদিনই স্কুলে যাওয়ার আগে সে কান্নাকাটি করে, সেদিনও তারা অন্যথা হয়নি।
যাইহোক প্রতিদিন কোনো রকমে লিফ্ট পর্যন্ত নিয়ে গেলেই তার কান্না থেমে যায় এবং উৎসাহ নিয়ে সে স্কুলে যায়। যেহেতু এটা রোজগার রুটিন, তাই সেই মতন কান্নাকাটি করা অবস্থাতেই তাকে তৈরি করে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল দাদা।
প্রথমে স্কুল গাড়ি স্কুলেই পৌঁছে গিয়েছিলো। সবাইকে সেখান থেকে টিচারদের সাথে বাসে করে অডিটোরিয়ামে পৌঁছাতে হয়েছিলো। সেখান থেকে লাইন করে সব বাচ্চাকে তাদের ক্লাস টিচাররা বাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো। সেই সময় লাইনে তাতানও ছিলো।
যদিও এই মুহূর্তগুলো দাদা ভিডিও করে পাঠিয়েছিলে, তবে আমি ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে, ছবিগুলো ক্রপ করে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশেপাশে দেখলেই বুঝতে পারবেন অনেক বাচ্চা গাছও সেজেছিলো। যেগুলো তৈরি করতে তাদের অভিভাবকেরা বেশ কষ্ট করেছে।
সবগুলো পাতা নাকি কাগজ কেটে হাতে তৈরি করা, সবগুলো তৈরি করার পর সেগুলোকে রং করে, আঠা দিয়ে সেট করতে হয়েছিলো দাদা যেহেতু সামনে থেকে দেখেছিলো, তাই আরও ভালো বুঝতে পেরেছিলো।
অভিভাবকদের জন্যেও আলাদা বাসের ব্যবস্থা করেছিলো স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা অডিটোরিয়ামে গিয়ে পৌঁছালো। দাদার কাছে পড়ে শুনেছি বিশাল বড় ছিলো অডিটোরিয়ামটা। প্রথম সারিতে আমন্ত্রিত গেস্টরা, তারপর সকল টিচাররা, তারপর স্টুডেন্টদের মায়েরা এবং সবশেষে বাবাদের বসার আয়োজন করা হয়েছিলো। তাই বেশ দূর থেকেই দাদাকে কষ্ট করে ছবি তুলতে হয়েছিলো।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন দিয়ে অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হয়েছিলো। সেখানে একজন আর্মি অফিসারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো, তার সঙ্গে আরও একজন অতিথি ছিলেন। ওনাদের নামগুলো কার্ডে উল্লেখ করা ছিলো, তার একটা ছবি আমি প্রথমেই শেয়ার করেছি।
এরপর এক এক করে বাকি অনুষ্ঠান শুরু হলো। নৃত্যানুষ্ঠান, নাটক, আবৃত্তি এবং সবশেষে তাতানদের পারফরম্যান্স হয়েছিলো। তাতান এই বছর প্রথম স্কুলে ভর্তি হয়েছিলো, তাই ওদের ক্লাসের সকল বাচ্চারা কি সাজবে এবং প্রত্যেক ক্লাসের বাচ্চাদেরকে নিয়ে কি অনুষ্ঠান করা হবে সেই সিদ্ধান্ত ওদের ক্লাস টিচারই নিয়েছিলেন।
স্টেজে উঠে তাতানো একটু ভয় এবং একটু লজ্জাবোধ করছিলো হয়তো, তবে সকলের সাথে সাথে মোটামুটি বেশ আনন্দ করেছে, এমনটা দাদার কাছে শুনেছি। অনেকটা দূর থেকে ছবি তোলাতে তাতানকে ছবিতে খুব বেশি ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তবুও আমি চেষ্টা করলাম ছবিগুলোর মধ্যে থেকে ক্রপ করে আপনাদের সাথে শেয়ার করার।
সেদিন বাড়িতে ফিরেও তাতান বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলো। জীবনে প্রথম এমন একটা অভিজ্ঞতা যেটা নিয়ে নিজের অনুভূতি তেমন ভালোভাবে ব্যক্ত করতে না পারলেও, খুব খুশি ছিলো। তাই ওর এই দিনটি সামনে থেকে উপভোগ করতে না পারলে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে উপভোগ করে বেশ ভালো লেগেছিলো।
সেদিনের অনুভূতি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশাকরি অনেকেই আপনাদের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তের সাথে আমার লেখার মিল পাবেন, যারা নিজেদের সন্তানদেরকেও ছোটবেলাতে এই রকম ভাবে পারফরম্যান্স করতে দেখেছেন।
তাতানকে দেখে আপনাদের কেমন লাগলো, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।সবাই আশীর্বাদ করবেন যাতে এইরকম আরও অসংখ্য পারফরম্যান্স ভবিষ্যতেও করতে পারে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। ভালো থাকবেন।
|
|---|













