অনেক খারাপ সময়ের মধ্যেও,কিছু ভালো মুহুর্ত কাটানোর গল্প
Hello,
Everyone,
আশা করি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন,সুস্থ আছেন। আর আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
আপনারা সকলেই জানেন গত কয়েকদিন ধরে আমার বাবা শারীরিক অসুস্থতার কারণে হসপিটালে ভর্তি রয়েছেন এবং আমার দিদি প্রতিদিন সকালে হসপিটালে গিয়ে নিজের ডিউটি করার পাশাপাশি,বাবার জন্য যত কিছু করার দরকার হয়, সবটাই একার হাতে সামলাচ্ছে।
মাঝেমধ্যে খুব প্রয়োজন হলে দাদা (দিদির হাজব্যান্ড) হসপিটালে পৌঁছে যায়। এমতাবস্থায় দিদির ছেলে এবং মেয়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব বর্তমানে আমার ওপরে রয়েছে। যদিও রাতের বেলায় দিদি এবং দাদা দুজনেই বাড়িতে ফেরে, কিন্তু সারাদিন দুটো বাচ্চাকে সামনে রাখা কিন্তু কম দায়িত্বের নয়।
বাবার অসুস্থতার দিন থেকে তিতলি ও তাতানের দায়িত্ব আমি একার হাতে সামলে চলেছি। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বর্তমানে দুজনারই ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু তাতানের ঠান্ডাটা একটু বেশিই লেগেছে।
যেই কারণে গত পরশুদিন আমিও দাদা তাতানকে নিয়ে ডক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। যেই ডক্টরকে দেখানো হয় তিনি সন্ধ্যার পর চেম্বারে আসেন। যে কারণে আমরাও মোটামুটি সন্ধ্যা নাগাদ বেরিয়ে পড়েছিলাম।
তাতান কিছুতেই ঐ ডক্টর দেখাতে যেতে চায় না, কারণ ওর ভ্যাকসিন গুলো এই ডাক্তারের কাছ থেকে দেওয়ানো হয়। যে কারণে ওর ভয় লাগে। যখন রিকশা গিয়ে ওই ডক্টরের বাড়ির সামনে দাঁড়ালো, তাতান কান্নাকাটি শুরু করল। ওকে কিছুতেই বুঝিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
অনেক কষ্ট করে ওকে বোঝানো হল ডক্টর আজকে ওকে ইনজেকশন দেবে না,শুধু ওষুধ দেবে। তারপর মোবাইল দেখিয়ে কোনরকমে তাকে ডক্টর চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হলো। পাশেই ছোট্ট একটি পার্ক রয়েছে সুতরাং তার বায়না হয়েছে ডক্টর দেখানো হয়ে গেলে তাকে, ঐ পার্কে নিয়ে যেতে হবে।
যেহেতু পার্কটি একদমই পাশে, তাই আমরা হেটেই পার্কে গেলাম। বড় জোর দুই থেকে তিন মিনিট সময় লাগলো। ছোটখাটো হলেও পার্কটি বাচ্চাদের জন্য বেশ ভালো। সব থেকে ভালো পার্কটির নাম আবোল তাবোল।
সেখানে গিয়ে আমি ও দাদা বসে রইলাম। তাতান বেশ মজা করে কিছুক্ষণ খেলাধুলা করলো। সেখানে তাতানের বয়সী আরো বেশ কিছু বাচ্চারাও খেলাধুলা করছিল।
পার্কটি যেহেতু রাত ৮ টায় বন্ধ হয়ে যায়, তাই আমরা খুব বেশি সময় সেখানে কাটাতে পারিনি। পার্কটির ভিতরে জায়গা খুব বেশি না থাকলেও, বেশ সুন্দর করে সাজিয়েছে।
ভিতরে প্লাস্টিকের তৈরী দুটি জিরাফ এবং একটা হাতি ছিল। তবে কৃত্রিম ঘাস দিয়ে তৈরি কয়েকটি মানুষের স্ট্যাচু তৈরি করা ছিল, যেটা দেখতে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগছিল।
সন্ধ্যার পরে যাওয়ার ফলে সেখানকার একটা খুব ভালো জিনিস দেখার সৌভাগ্য হলো, সেটি হল পাশে থাকা ছোট্ট একটি পুকুরের চারপাশের লাইটিং। মুহূর্তের মধ্যেই বিভিন্ন কালারের লাইট জ্বলে উঠছে সেখানে।সেটা দেখে তাতান বেশ আনন্দ পেল।
লাইটের রং গুলো পরিবর্তনের সাথে সাথে এসে নিজে নিজেই প্রত্যেকটি রং আমাকে বলে বলে দিচ্ছিল। কখনো গ্রিন, কখনো রেড, কোন ব্লু।
বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর আমরা বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।গত কয়েকদিন ধরে আমরা প্রত্যেকেই খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কেন জানিনা ওই দিনের ওই সন্ধ্যাটা কিছুক্ষণের জন্য হলেও তাতানের সাথে আমি একটু ভালো সময় কাটিয়েছি।
সেই সময়ের কিছু মুহূর্ত ছবির মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। আপনাদের কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।
This post was selected for Curación Manual (Manual Curation)
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 2/8) Get profit votes with @tipU :)
প্রথমত দিদি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করি। তিনি যেন আপনার বাবাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থতা দান করেন। এবং আপনাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এবং আপনাদের পরিবারের হাসির মাখা সেই ছবিটা, আবার আপনাদের পরিবারে ফুটে ওঠে।
আসলে দিদি একটা জিনিস জানেন কি জীবনে হয়তোবা দুঃখ আছে বলেই। আমাদের সুখের এতটা দাম। আর জীবন আছে বলেই হয়তোবা মৃত্যুর জন্য আমাদের এতটা ভয়। যে কোন কিছুই আমাদেরকে মেনে নিতে হবে। যেখানে উত্থান হবে সেখানেই পতন হবে। তবে সবকিছু কাটিয়ে জীবনকে সুন্দরভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
অনেকদিন পর আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো, তার সাথে তাতান বাবুর সেই খেলার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো। পার্কের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।