আমাদের পরিবারে নতুন সদস্যের আগমন।
মাস চারেক আগে আমি আর আমার বড়ো ছেলে রাত বারোটার দিকে সিড়িতে কান্নার শব্দ পেয়েএক বিড়াল ছানাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম। মাস তিনেক সে আমাদের পরিবারে ছিল। এই অল্প সময়ের ভেতরই সে আমাদের পরিবারের এক সদস্য হয়ে উঠেছিল ,যদিও প্রথম দিকে তাকে পোষ মানাতে গিয়ে আমাদের ঘাম ছুটে গিয়েছিলো।
কারণ ও কারো পোষা বিড়াল ছিল না। ও ওর পরিবারের সাথে আমাদের গ্যারাজে থাকতো।
কিন্তু মাসখানেক আগে ও এক অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং প্রথম রোজার দিন আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়। ওর অভাব আমরা সবসময়ই অনুভব করি এবং সেটা কখনো পূরণ হবারও না।
ও চলে যাবার পরে আমি এক ধরণের অস্থিরতায় ভুগি। বিভিন্ন ক্যাটসগ্ৰুপের সাথে যুক্ত হই । এর ফলে রাস্তার অসহায় বিড়ালগুলুকে দেখে আমি বলা যায় মানসিকভাবে খানিকটা বিপর্যস্ত হয়ে পরি। মানুষের নিষ্ঠুরতা দেখে অবাক হয়ে যাই। কেউ কেউ ছোট ছোট বাচ্চাগুলিকে রাস্তায় ফেলে দেয় ,কেউ লেজ কেটে দেয় ,কেউ চোখ অন্ধ করে দেয় ,,এমন অসংখ্য নিষ্ঠুরতা।
তবে খারাপ মানুষের পাশাপাশি অনেক ভালো মানুষও আছে আর তাদের জন্যই হয়তো পৃথিবীটা এখনো বসবাসের যোগ্য রয়েছে। এই সব ক্যাটস গ্ৰুপের অনেক সদস্যরাই এই ধরণের অসহায় পশুগুলিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করে সুস্থ করে কখনো নিজেরা পালতেসে আবার আবার কখনো কখনো সুস্থ করে দত্তক দিচ্ছে।
আমি নিজেও এই ধরণের বিড়াল বাসায় আনার চেষ্টা করি কিন্তু দুটো কারণে আনতে পারি নাই। প্রথম কারণ ছিল আমার সিম্বা এমন এক ভাইরাসের আক্রমনে মারা গিয়েছিলো যার বিরুদ্ধে কোনো এন্টিবায়োটিক কাজ করে নাই।
আমি ভয় পাচ্ছিলাম সেই ভাইরাস যদি এখনো আমার বাসায় থাকে তাহলে নতুন আনা বিড়ালও একই ভাইরাসে আক্রান্ত হবে। আর দ্বিতীয় সমস্যা ছিল আমার হাসবেন্ড। তিনি সিম্বার মায়ের বাচ্চাকে আনার জন্যই বদ্ধপরিকর ছিল। সিম্বার মা বর্তমানে প্রেগন্যান্ট।
এর মাঝে ছোট ছেলে তার বন্ধুর কাছ থেকে পার্সিয়ান বিড়াল আনবে বলেছে কিন্তু সেই বাচ্চা একদমই ছোট ,এখনো মায়ের দুধ খায়। তাই কোনোভাবেই বাসায় বিড়াল আনতে পারতেছিলাম না ।
কিন্তু আমাদের এতো পরিকল্পনার কোনোটাই সফল হয় নাই সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনার কাছে। ঈদের পরে আমি মামাবাড়িতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম । বাসা থেকে বের হবার আগের মুহূর্তে হঠাৎই দরোজায় কলিং বেলের শব্দ শুনতে পাই। পর মুহূর্তেই আমার হাবি ও ছেলেদের উচ্ছসিত স্বরে আমাকে ডাকার শব্দ পেলাম।
ওদের ডাক শুনে গিয়ে দেখি আমাদের বাসার কেয়ারটেকার একটা ছোট্ট বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছে ,যেটা সিম্বার থেকেও ছোট।ওকে দেখেতো সবাই মহাখুশি।
আমাদের কেয়ারটেকার ওকে মেট্রো শপিংমল এর সামনে থেকে কুড়িয়ে এনেছে ।আমাদেরকে বললে যে,কদিন আগে আপনাদের বিরালটা মারা যাওয়ার আমার খুব খারাপ লেগেছিলো।আজকে এই বিরালটাকে রাস্তার পাশে কান্না করতে দেখে ওকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ।
কিন্তু সমস্যা হলো ওকে মামাবাড়িতে নিয়েও যাওয়াও সম্ভব না আবার খালি বাসায় রেখেও যাওয়া সম্ভব না। তাই কেয়ারটেকারকে বললাম একটা দিন রাখার জন্য। যাওয়ার আগে ওর জন্য খাবারও দিয়ে গেলাম।
মামাবাড়ি থেকে ফেরার সময় ওকে নিচ থেকে নিয়ে আসলাম। আনার পরে সবচাইতে অবাক হলাম ওর ব্যবহার দেখে। ও এসেই আমাদের সাথে এমনভাবে মিশে গেলো যে দেখে মনে হলো যে ও এই বাড়িতেই জন্মেছে। আরো অবাক করার বিষয় হলো ও পুরোপুরি পটি ট্রেইন্ড।
বুঝতে পারলাম ও কারো বাড়িতে ছিল। হয়তো ওকে ফেলে দিয়েছে কিংবা বাসা থেকে কোনোভাবে বের হয়ে গেছে।
কিন্তু ওকে আরো ভালো করে দেখার পরে দেখলাম ওর একটা পা অনেকটাই খোঁড়া আর পুরো বামপাশটাই ক্ষতিগ্রস্থ।হয়তোবা রিকশা জাতীয় কিছুর সাথে বাড়ি খেয়েছিলো।
সেইসাথে মুখে ঘা এবং গলাতে কিছুর কামড়ের দাগ। আমার ছেলে বলতেছিলো যে ,তুমিতো রাস্তার বিড়াল আনতে চেয়েছিলে ,দেখো আল্লাহ তোমাকে রাস্তার বিড়ালই বাসায় এনে দিয়েছে।
তবে এখন সবচাইতে খুশির বিষয় হলো ওর পা এখন মোটামোটি ঠিক হয়ে গেছে আর ঘাগুলিও প্রায় ঠিক হয়ে গেছে। সেইসাথে এখন ও আমাদের পরিবারের একজন সদস্য।






Congratulations!
Your post has been manually upvoted by the SteemPro team! 🚀
This is an automated message.
If you wish to stop receiving these replies, simply reply to this comment with turn-off
Visit here.
https://www.steempro.com
SteemPro Official Discord Server
https://discord.gg/Bsf98vMg6U
আপনার পরিবারে আপনি আবারো নতুন সদস্য নিয়ে এসেছেন আসলে বিড়াল হচ্ছে খুবই শান্ত প্রিয় প্রাণী যাকে পালন করলে তেমন একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না আপনি আগেও একটা বেড়াল পালন করেছেন কিন্তু একটা ভাইরাসের কারণে সে আপনাদেরকে ছেড়ে চলে গেছে নতুন বিড়ালের আগমন আপনার পরিবারের ঘটেছে দেখে ভালো লাগলো আশা করি একে নিয়ে আপনার মনের অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ হবে ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।