ক্লান্তির কাছে হার না মানার লড়াই।(The fight against fatigue)

in Incredible India19 days ago (edited)
1000024301.png

আর পারছি না! আমার দ্বারা আর হবে না! শরীর আর দিচ্ছে না! ভীষণ চাপ হয়ে যাচ্ছে!

এরকম অনুভূতির মধ্যে দিতে যান নি এমন কোনো মানুষ নেই।

ক্লান্ত শরীর, ক্লান্ত মানসিকতা এবং ক্লান্ত চিন্তাধারা এগুলোই দায়ী উপরিউক্ত অনুভূতিগুলোর জন্য।

আমরা খানিক আমাদের চিন্তাধারা দিয়ে নিজেদের মস্তিষ্ক দের পরিচালনা করি।
বিশেষকরে যখন বুঝে যাই এতটা পরিশ্রমের প্রয়োজন নেই। সেই ভাবনার পিছনের যুক্তিগুলো নিজেরাই সাজিয়ে নি।

  • প্রথমত:-
    আমার বিকল্প পথ আছে, মানুষ আছে, ছত্রছায়া আছে, কাজেই এত পরিশ্রম আর ভালো লাগছে না।

  • দ্বিতীয়ত:-
    এর থেকে কম পরিশ্রম করে অধিক উপার্জনের রাস্তা খোলা আছে।

  • তৃতীয়ত:-
    আমার ইচ্ছেপূর্তি হয়ে যাচ্ছে হাত পাতলেই, তাহলে পরিশ্রম কেনো করবো?

এরকম ভাবনা কেবলমাত্র তারাই ভাবতে পারেন না, যাদের কাছে উপরিউক্ত বিকল্প নেই।
যদি একান্তই নিজের কথা বলতে হয়, তাহলে বলবো একটা সময় আমিও এরকম চিন্তাধারা বহন করতাম।

আমার পূর্বের একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, শিলিগুড়িতে একটি স্কুলের চাকরি আমি হেলায় হারিয়েছি।
তার পরিণতি কি ভয়ঙ্কর রূপে সামনে এসেছিল সেটা একটা আলাদা লড়াই!

আজকের এই লেখাটি নিজের তৎসহ আমার সেই সকল বন্ধুদের উদ্দেশ্যে যারা পরিশ্রমের পথ এড়িয়ে বিকল্প পথে হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

আজকে শারীরিকভাবে আমি বেশ ক্লান্ত, কারণ এমনিতে বেশি রাত জাগলেও তিন চার ঘণ্টা ঘুমাতে পারি প্রতিদিন, কিন্তু গতরাত থেকে এখনও আমি জেগে আছি।

কারণ?
এই চ্যালেঞ্জের সময় বেশকিছু অনৈতিক প্রশ্ন উঠে আসছে যার তলানি খুঁজে পেতে।
এখন এই ক্লান্তির সাথে আমি কিভাবে আমার লড়াইটা আজকে লড়েছি, সেটাই তুলে ধরছি।

জানিনা, আপনাদের মধ্যে কতজন এভাবে নিজের ক্লান্তির সাথে লড়াই করেছেন!
আমি আজকে অনেকের সাথে কথা শেষ করে যখন পা ঘরের মেঝেতে ফেললাম, তখন ঠিককরে দাড়াতে পর্যন্ত পারছিলাম না।

সম্পা একবার ফোন করে, একটি বিষয় নিয়ে; তখনও আমার পরিস্থিতি খুব খারাপ।
এরপর, বাবার কথা মনে করে শরীরের নাম মহাশয়, যা সয়াবে তাই সয়!

আজকে বিকেলে আমার বাজার যাওয়ার ছিল, কিন্তু ঠিক করলাম, দুপুর রোদে বেরোব!
যেমনি ভাবা, তেমনি কাজ দুপুর আড়াইটার সময় স্নান সেরে তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম।

কোথায় গেছিলাম?

পার্লার এ!

হ্যাঁ!
নিজের উর্জা ফেরত পেতে আজকে আড়াইটা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা কাটিয়েছি পার্লারে।

একলা ঘরে ক্লান্তির সাথে লড়াই সম্ভব নয়, তাই বেরিয়ে পড়েছিলাম এমন একটি জায়গার উদ্দেশ্যে যেখানে নিজের শরীরের যত্নের পাশাপশি, নিজেকে একটু চাঙ্গা করবার সুযোগ পাওয়া যায়।

1000024293.jpg
1000024291.jpg
1000024292.jpg

এরপর পার্লার থেকে বেরিয়ে বাজার এর ঠিক উল্টো দিকে দেখলাম লস্যি বিক্রি হচ্ছে, একগ্লাস কিনে খেয়ে নিয়েছিলাম।
বাজারে ঢোকার মুখেই পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে দেখে পেয়ারা কিনলাম, একটা তরমুজ, এক্ ট্রে ডিম(৩০ পিস্), আলু, কাকরোল, চপের দোকান থেকে পছন্দের চপ, ঝুড়ি ভাজা ইত্যাদি।

দ্রব্য
ভারতীয় মূল্য
স্টিমিট দর
ছবি
তরমুজ৭০ টাকা২.৭৫ স্টিম
1000024302.jpg
ডিমের ট্রে১৪৫ টাকা৫.৭০স্টিম
1000024306.jpg
আলু৬০টাকা(২কেজি)২.৩৬স্টিম
1000024309.jpg
কাকরোল২০টাকা০.৭৯স্টিম
1000024308.jpg
পেয়ারা৬০টাকা২.৩৬ স্টিম
1000018795.jpg
লস্যি২০টাকা০.৭৯স্টিম
1000024290.jpg
চপ২২টাকা০.৮৬স্টিম
1000018784.jpg
ঝুড়ি ভাজার প্যাকেট৪০টাকা১.৫৭স্টিম
1000024304.jpg
পার্লারে খরচ করেছি
১৪০০ টাকা(ভারতীয় মূল্য)৫৫.০৪স্টিম

ডিম কিনতে গিয়ে মনে পড়েছিল, আলু কিনতে ভুলে গেছি, তাই হাতের জিনিষ নিয়ে আবার উল্টোপথে গিয়ে কিনতে হলো।

এরপর সব জিনিষ নিয়ে যখন বাড়ি পৌঁছলাম, ঘড়িতে দেখি তখন সাতটা বেজে ১৫ মিনিট।
জিনিষগুলো রেখে ঘরের এবং ঠাকুরের কাছের আলো গুলোকে জ্বালিয়ে, ফ্রেশ হয়ে বিকেলের চা খেয়ে, আবার কাজের দিকে নজর দিলাম।

কিছু কমেন্টের উত্তর দিলাম, আসলে ভালো লেখা তৎসহ ভালো কমেন্ট আমার মন ভালো করার রসদ যোগায়।

এইবার আবার একলা ঘর, টিভি তারমত চলছে, আর আমার ক্লান্তি আবার আমার উপরে ভর করা শুরু করছিল।
একবার ভেবেছিলাম আজ আর লিখবো না! কিন্তু রাত এগারোটা বেজে ৩০ মিনিটে লিখতে বসে গেলাম, কারণ একটাই, ক্লান্তির কাছে হার মানা যাবে না!

শরীর আর মনের লড়াইটা জিততে পারলে কোনো শক্তি আমাদের পথের বাঁধা হতে পারে না।

এখন ঘড়ির কাঁটায় ভারতীয় সময় রাত ১২ টা বেজে ২০ মিনিট, যখন তিনটে পোস্ট পড়ে নিজের লেখা শেষ করলাম।

  • জীবনে বিকল্প কখনো সমাধান হতে পারে না, নিজের জীবনের লড়াইটা এবং ক্লান্তিকে হারাতে পারলেই প্রশান্তির ঘুম সম্ভব।

আজকের দিনটা আমি আমার ক্লান্তির উপরে খানিক জয় লাভ করতে পেরেছি, আর নিজের শরীরকে বলেছি বিকল্প পথ বেছে নেওয়া নয়, স্বাবলম্বী হতে হবে।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

TEAM BURN

Your post has been successfully curated by @𝐢𝐫𝐚𝐰𝐚𝐧𝐝𝐞𝐝𝐲 at 35%.

Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way, you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.

Team Burn (1).png

Burning STEEM by sending it to the @null account helps reduce the supply of STEEM and so increases its price.

 18 days ago 

আপনার পোস্ট পড়ে যতই এগিয়ে যাচ্ছিলাম ততই নিজের কাছে লজ্জিত বোধ হচ্ছিল। কত কারণে যে আমরা বাহানা খুঁজি আর কত কিছু দিয়ে যে তাকে আড়াল করি তার কোন শেষ নেই

কিন্তু প্রকৃত অর্থে পরিশ্রমীএকটি মন দেহকে আক্রান্ত করতে পারে না। আপনার পোস্ট পড়ে আবারো এই বিষয়টি শিখলাম। হেলায় সুযোগ হারালে সে সুযোগ আর কখনো ফিরে আসে না।

আপনার পোস্ট পড়ে নিয়মিতই কিছু না কিছু শিখতে পারি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি বিষয়কে এত চমৎকারভাবে আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। এখান থেকে শুধু আমি নই বরং আমরা সকলেই অবশ্যই কিছু শিখতে পারবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.13
JST 0.032
BTC 62726.22
ETH 2961.65
USDT 1.00
SBD 3.60