গ্রামের রাতের কিছু ভয়াবহ দৃশ্য

in আমার বাংলা ব্লগ21 days ago

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আস্সালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকের পোষ্টে আমি আমার গ্রামে থাকা অবস্থায় আমার সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ভয়াবহ দৃশ্যের কথা তুলে ধরব। আশা করি আপনারা সবাই এটি উপভোগ করবেন এবং কিছু নতুন তথ্য জানতে পারবেন। ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!

আমি ছোটবেলা থেকেই শহরের পরিবেশে মানুষ হয়েছি। বিধায় গ্রামের রাতের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমিতো প্রায় বেহুশ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। গ্রামের সবাই সারাদিনের কাজ মিটিয়ে সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে থাকে। আমরাও প্রায় ২০ জনের মত বন্ধু বান্ধব আমাদের কলেজের মাঠে বসে প্রায় রাত্র ১১ টা পর্যন্ত আড্ডা দিতাম। ১১ টার পরে সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হত। আমি এবং আমার চাচাতো ভাই দুই জন একসাথে বাড়ি ফিরতাম। কারন বাড়ি ফেরার রাস্তাটি ছিল একটি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। এ জন্য প্রতিদিন একসাথে বাড়ি ফিরতাম। একদিন আড্ডা শেষে চাচাতো ভাইকে খোজ করলে জানতে পারি ওর বাসায় সমস্যার কারনে ও আজ তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছে। বিধায় আমাকে আজ একাই বাড়ি ফিরতে হবে। কি করার কিছু দোয়া কালাম পড়তে পড়তে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। হাটতে হাটতে এক সময় সেই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যে রাস্তা ছিল সেখানে চলে আসলাম এবং এখানে এত অন্ধকার ছিল যে নিজের হাতকেও দেখা যাচ্ছিল না। তারপর ও বাড়ি তো যেতে হবে এ জন্য জোরে জোরে গান গেতে শুরু করিলাম যেন ভয় একটু কম লাগে। কিন্তু মনে হল যেন আমার পেছন কেউ আছে। আমি পিছনে তাকালাম না। কারন সত্যি যদি কেউ থাকে তাহলে তো আমি ভয়ে বেহুশ হয়ে যাব। এ জন্য দিলাম দৌড় এক দৌড়ে বাড়িতে চলে এলাম।

scary-6389656_1920.jpg

Image Source

বাড়িতে ফিরলে মা বলে কি হয়েছে আমি বললাম কিছু হয়নী। মা যদি বুঝতে পারে আমি আজ ভয় পেয়েছি তাহলে কাল থেকে আর বাইরে যাওয়া হবে না। তাই মায়ের সাথে আমি সে দিন কিছুই বলিনি। পরদিন থেকে চাচাতো ভাইকে বললাম যখন বাড়ি ফিরবি আমাকে নিয়েই ফিরবি। আমি গতকাল অনেক ভয় পেয়েছি। আর কেনই বা ভয় পাব না। ওখানে একটি সাড়াগাছ ছিল এবং তারপর ই একটি বাঁশ বাগান আর বাঁশ বাগানে তো সব সময় ভুত বসে থাকে। আর গ্রামের মানুষ সন্ধ্য হলেই সবাই আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়িত। জোরে ডাকাডাকি করেও কাউকে ঐ রাত্রে পাওয়া যাবে না। এ জন্য ঐ দিনের পর থেকে আমি আর কখনও একা বাড়ি ফিরতাম না। সাথে কাউকে নিয়েই বাড়ি ফিরতাম।

ghost-235395_1920.jpg

Image Source

গ্রামের টয়লেটগুলি সব সময় বাড়ি থেকে দূরে বাগানের মধ্যে করা হত। এ জন্য রাত্রে টয়লেটে যেতে গেলেও খুব ভয় লাগে। আমি রাত্রে যখন টয়লেটে যেতাম তখন আমার আম্মুকে ডেকে নিয়ে যেতাম। কিন্তু একদিন আম্মু অসুস্থ ছিল এবার রাত্রে টয়লেটে যাওয়ার জন্য কাকে নিয়ে যাব আম্মু বলল তুই একাই যা কিছু হবেনা। আমি একটি ল্যাম্প জালিয়ে রওনা দিলাম। টয়লেটে বসা মাত্র একটি জোরে বাতাসে আমার ল্যাম্পটি নিভে গেল। এবার কি করি সামনের একটি গাছে মনে হচ্ছে কেউ সাদা কাপড় পরে বসে আছে। তখন আমি জোরে জোরে আম্মু আম্মু করে ডাকতে লাগলাম আম্মুর শরীল খারাপ থাকা সত্বেও আর একটি ল্যাম্প নিয়ে আমার নিকট আসল। তখন আমি কিছুটা সাহস পেলাম। আর তারাতাড়ি আম্মুর সাথে বাসায় চলে গেলাম।

fantasy-2847724_1920.jpg

Image Source

আমাদের বাসায় বিদ্যুৎ লাইন থাকলেও প্রাই রাত্রে বিদুৎ চলেযেত। এমন একদিন রাত্রে বাসায় আমি একা লেখাপড়া করিতেছি। হটাৎ বিদ্যু চলে গেল আর একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে এক ঘন্টার নিচে আসত না। হটাৎ দেখি জানালার পাশে কে যেন দাড়িয়ে আছে। আমি নিজেকে একটু শক্ত করলাম এবং আস্তে আস্তে জানালার পাশে গিয়ে দেখলাম সত্যি কেউ আছে কি না। যেই জানালার পাশে গেলাম সেই একটি জোরে ঠান্ডা বাতাশ আমার গায়ে লাগল। বাতাশ গায়ে লাগামাত্র আমি খুব ভয় পেলাম আর তাড়াতাড়ি খাটের উপর এসে শুয়ে পড়িলাম। সকাল হলেই আমার গায়ে জ্বর চলে আসল। আমি আমার আম্মুকে সব ঘটনা বলার পরে আম্মু একজন ভাল কবিরাজকে দিয়ে ঝাড়িয়ে নিল এবং তেল ও পানি পড়া দিল ওটা নিয়মিত খাওয়ার ফলে আস্তে আস্তে আমার জ্বর কমে গেল।

গ্রামের পরিবেশ আমার খুব ভাল লাগত কিন্তু রাত্রের পরিবেশটা আমাকে অনেক সমস্যায় ফেলত। এ জন্য মাত্র দুই বছর গ্রামে কাটিয়ে আবার শহরে চলে আসি। শহরের জীবন টা যান্ত্রিক হলেও এখানে ভুতের কোন ভয় নেই। তাই আর গ্রামে ঐভাবে থাকার জন্য যাওয়া হয়নী। কাজ মিটিয়ে দিনের মধ্যে আবার চলে আসতাম। এভাবে এখনও শহরে আছি এবং বাকী জীবনটা এখানে কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে আছে।

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 62928.79
ETH 2465.26
USDT 1.00
SBD 2.55