আমার শৈশব জীবনে খালে ও বিলে মাছ ধরার স্মৃতিময় মুহূর্ত //পর্ব-০৫।

in আমার বাংলা ব্লগlast month



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ রবিবার। ০৫ ইং মে, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।


fisherman-4305368_1280.jpg

Source



শোল মাছটি এতটাই চেপে ধরেছিলাম যে, শোল মাছের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গিয়েছিল। যাহোক আমার শোল মাছ ধরা দেখে তো আমার বন্ধু বকুলসহ বাকি দুজন বিস্মিত হয়েছিল। কারণ শোল মাছটি অনেকটা বড় ছিল। আমার নিজ হাতে ধরা শোল মাছটির ওজন ছিল প্রায় আধা কেজি পরিমাণ। আমাদের মোট দুটো শোল মাছ ধরা হয়েছিল। তারপর শোল মাছ দুটি আমার এক বন্ধুর কাছে রেখে আমরা তিনজন পুনরায় মাছ ধরা শুরু করলাম। মাছ ধরা স্থান থেকে আমরা যতই কচুরিপানা তুলে ফেলছিলাম, আমরা ততই সুন্দর সুন্দর মাছ পাচ্ছিলাম। আমার বন্ধু বকুলের পাশ থেকে আমার অন্য বন্ধু যখন কিছুটা কচুরিপানা তুলে ফেললো, তখন কচুরিপানার ভিতর থেকে একবারে তিন-চারটা কৈ মাছ বের হয়ে আসলো।

কৈ মাছগুলো বের হয়ে খুব দ্রুত সেখান থেকে চলে যেতে লাগলো। এবার কৈ মাছগুলো ধরার সময় কাঁদার ভিতর থেকে আধা হাত পরিমাণ লম্বা বিশাল আকৃতির একটি কৈ মাছ বের হয়ে আসলো। আসলে আমার জীবনে এতো বড় কৈ মাছ সেইবার প্রথম দেখেছিলাম। কৈ মাছটি যেমন লম্বা ছিল ঠিক তেমনি মোটা ছিল। এক হাত দিয়ে কৈ মাছটি ধরে রাখা বেশ কঠিন হয়েছিল আমাদের। তাই বাধ্য হয়ে আমার বন্ধু বকুল তার দুই হাত দিয়ে কৈ মাছটি ধরে শুকনো স্থানে চলে গিয়েছিল। এদিকে আমার অন্য বন্ধুটি এতো বড় কৈ মাছ দেখে বলেছিল, এই কৈ মাছের বয়স মনে হয় ৫০ বছর হবে। বন্ধুর কথা শুনে আমরা সকলেই শুকনো মুখে দারুন একটা হাসি দিয়েছিলাম। আবার আমার বন্ধু বকুল বলে উঠলো এই বড় কৈ মাছটি হলো এই বিলের কৈ মাছের রাজা।

আমার বন্ধু বকুলের কথা শুনে আমি হেসে বলেছিলাম যে, কৈ মাছের রাজা যদি এটা হয়, তাহলে তো অন্যান্য কৈ মাছগুলো এমনিতেই আমাদের কাছে চলে আসবে, তার রাজাকে বাঁচিয়ে নেওয়ার জন্য। যাহোক বড় কৈ মাছটি পেয়ে আমরা আনন্দের সাথে কিছুক্ষণ মজা করেছিলাম। তারপর পুনরায় আমরা তিনজন বন্ধু মাছ ধরা শুরু করেছিলাম। বাকি একজন বন্ধুর প্রধান দায়িত্ব ছিল শোল মাছ দুটি এবং বড় কৈ মাছটি নিয়ে বসে থাকা। যাতে মাছগুলো অন্য কোথাও চলে যেতে না পারে। তিনজন বন্ধু মিলে যখন মাছ ধরায় প্রচন্ড ব্যস্ত ঠিক সেই সময় আমার বন্ধু বকুল বলে উঠলো, যদি আমার একটি বোয়াল মাছ পেতাম তাহলে আমাদের মাছ ধরা পরিপূর্ণ সার্থক হয়ে যেতো।

বকুল এরকম কথা বলার সাথে সাথে হঠাৎ করে বকুল পুনরায় বলে উঠলো, আমার পায়ের নিচে একটি বড় মাছ আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে তাকিয়ে দেখলাম যে, বকুলের দুটি পা প্রায় এক হাঁটু কাঁদার নিচে ডুবে রয়েছে। আমি বলেছিলাম এতটা কাঁদার নিচে তোমার পায়ে কি মাছ বেধেছে? আমার বন্ধু বকুল আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে বললো, আমার ডান পায়ের নিচ থেকে মনে হচ্ছে একটি মাছ আমাকে উঁচু করে ফেলছে। বকুলের কথা শুনে আমার অন্য বন্ধু বলে উঠলো হয়তো কুঁচিয়া সাপ বেধেছে আবার। কিন্তু আমার বন্ধু বকুল বললো, এটা সাপ নয়, এটা অবশ্যই মাছ হবে। বকুলের দৃঢ় কন্ঠের কথা শুনে আমি বলেছিলাম, তুমি মাছটি পায়ের নিচে রেখে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে থাকো।

তারপর বকুল আমার কথা মতো দাঁড়িয়ে রইল। আমি এবং আমার অন্য বন্ধু মিলে বকুলের ডান পায়ের পাশ থেকে কাঁদা সরাতে লাগলাম। কাদা সরাতে সরাতে যখন বকুলের ডান পায়ের একেবারে নিচের অংশের কাছাকাছি চলে গেলাম ঠিক তখনই বকুলের পায়ের নিচ থেকে বিশাল বড় একটি পাকাল মাছ বের হয়ে আসলো। তারপর খুব তাড়াতাড়ি করে পাকাল মাছটি দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলাম। কিন্তু পাকাল মাছের শরীর এতটাই পিচ্ছিল যে, পাকাল মাছটি মুহুর্তের মধ্যে আমার হাত থেকে বের হয়ে পুনরায় কাদার মধ্যে ঢুকে পড়লো।



চতুর্থ পর্বটি পড়ার লিঙ্ক



আমার শৈশব জীবনে খালে ও বিলে মাছ ধরার স্মৃতিময় মুহূর্তের বাকি কথাগুলো পঞ্চম পর্বে শেয়ার করা হবে।


আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 70771.68
ETH 3814.65
USDT 1.00
SBD 3.46