!!! জাতিস্মর!!! সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ ||

মুভির শুরুতেই দেখা যায় যিশু সেনগুপ্ত মায়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু যিশু ছিল একজন গুজরাটি কোনো রকম বাংলা বলতো। এবং মায়া ছিল একেবারে খাটি বাঙালি। মায়া প্রথমে না বলে এবং পরে বলে আপনি যদি ঠিকঠাক মতো বাংলা শিখে একটা সুন্দর বাংলা গান তৈরি করে আমাকে গেয়ে শোনাতে পারেন তাহলে ভেবে দেখব। এরপর যিশু সেনগুপ্ত মন খারাপ করে চলে যায়। তখন দেখা যায় ঘুমের মধ্যে পূর্ব জন্মের একটি স্বপ্ন দেখে আচমকা উঠে গেল প্রসেনজিৎ।। এরপর বেশ কিছুবছর কেটে যায়। মায়া একটি এফ এম রেডিওতে কাজ নেয়। তার কাজ ছিল বাংলা গান শোনানো। তিনি বাংলা গানের অনেক বড় ভক্ত। তো এটা নিয়ে তার বসের সঙ্গে তার বেশ তর্কাতর্কি হয়। এরপর তিনি বলেন বাংলা ছাড়া অন্য কোনো গান আমি সঞ্চালনা করতে পারব না। এটা বলে চলে যায়।

---

---

---

---

এর পরের দৃশ্যে দেখা যায় যিশু বিদেশের একটি ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করছে। তখন একটি সেমিষ্টারে সে সাবজেক্ট হিসেবে মিউজিক বেঁচে নেয়। এরপর বাইরে বসে আছে। তখন সে চিন্তিত।সে এখনো মায়া কে ভুলতে পারে নাই। তখন তার একজন বাঙালি বন্ধু আসে। এবং বলে ভাই তুই মেয়েটাকে ভুলে যা। কিন্তু যিশু কোনোভাবে ভুলতে পারে না। এরপর যিশু তার ঐ বাঙালি বন্ধু বদির কাছে বাংলা শিখতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সে বেশ ভালো বাংলা শিখে যায়। তখন সে বাংলা মিউজিক নিয়ে কাজ করছে। এর এক পর্যায়ে তিনি ইন্টারনেট থেকে হেন্সম‍্যান ফিরিঙ্গি বা এন্টনি ফিরিঙ্গি সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি মূলত একজন পর্তুগিজ শিল্পী যিনি কীনা আঠারো শতকে বাংলায় এসে বাংলা গান শুরু করেন। তাকে নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি আবার কলকাতা চলে আসেন।।

---

---

---

---

এরপর দেখা যায় মায়ার দুই পুরাতন বন্ধু অমিতাভ এবং সুদেশনা বিয়ে করে ফেলেছে। এটা রীতিমতো মায়াকে অবাক করে। কিন্তু মায়া এখনো সিঙ্গেল। কারণ ও জানে হয়তো ছেলেটা ফেরত আসবে। যাইহোক কলকাতা এসেই যিশু চলে যায় একটি বইয়ের দোকানে যেখান থেকে তিনি বইয়ের নাম বলেন যেগুলো থেকে হেন্সম‍্যান ফিরিঙ্গি সম্পর্কে লেখা আছে। কিন্তু লাইব্রেরিয়ান বলেন লাভ হবে না। আপনি বই পাবেন তার মধ্যে এন্টনি ফিরিঙ্গি কে পাবেন না। যদি তাকে পেতে চান আজ রাতে এই খানে চলে আসবেন। যাইহোক এরপর যিশু রাতে চলে যায় সেখানে। প্রসেনজিৎ নিয়ে যায় তার বাড়িতে। গিয়ে বলতে শুরু করে হেন্সম‍্যান এন্টনি এর জীবন কাহিনী। আসলে বর্তমান সময়ের লাইব্রেরিয়ান প্রসেনজিৎ ছিলেন গত জন্মে হেন্সম‍্যান এন্টনি। তার ক্রমেই গত জন্মের স্মৃতি মনে পড়ছে এবং সে এই জন্মের স্মৃতি ভুলে যাচ্ছে। ক্রমেই সে হেন্সম‍্যান এন্টনি তে পরিণত হচ্ছে এটা একটা রোগ।এরপর যিশু তাকে নিয়ে গিয়ে শহরে ডাক্তার দেখাই। উনারাও ঐ একই কথা বলে।।

---

---

---

---

এরপর মায়াদের ঐ এফ এম রেডিও থেকে একটা মিউজিক কনটেস্ট এর আয়োজন করা হয় যেটাতে যিশু সেনগুপ্ত ও অংশ নেয়। এবং ততদিনে সে এন্টনি এর সব ইতিহাস জেনে গিয়েছে। এন্টনি ঐ সময়ে অবাঙালি হওয়া সত্বেও কবিগানে প্রচুর নাম করে। আশপাশের সব বিখ‍্যাত কবিগায়কদের হারিয়ে দেয়। কিন্তু একটা ঝামেলার জের ধরে তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে তার অনেক ভালোবাসার স্ত্রী সৌদামিনি মারা যায়। এরপর ঐ মিউজিক কনটেস্টে গিয়ে গান পরিবেশন করার সময় যিশু তিনজনের কথা বলে যাদের জন্য আজ এই পজিশনে। ঐ সময়ে মায়া যিশুকে গান গাইতে দেখে তার চোখে পানি চলে আসে। যে ছেলেটা এখনো তার কথা রেখে বাংলা গান শিখে এসেছে। এরপর মূলত দুজনের মিল হয়ে যায়। এবং দুজন যায় প্রসেনজিৎ এর কাছে কিন্তু তিনি ততদিনে সম্পূর্ণ হেন্সম‍্যান এন্টনি তে পরিণত হয়ে গিয়েছেন। এবং যিশু আরেকটি গান গাই। এখানেই শেষ হয় মুভিটা।

---

---

মুভির শিক্ষা ও ব‍্যক্তিগত মতামত

---

---

মুভিটা মূলত নির্মিত হয়েছে এক পতুর্গিজ শিল্পী হেন্সম‍্যান এন্টনি এর কাহিনী নিয়ে। এন্টনি ফিরিঙ্গি নামে উওম কুমারের একটি বাংলা সিনেমা আছে। যাইহোক প্রসেনজিৎ গত জন্মে ছিল হেন্সম‍্যান ফিরিঙ্গি। এবং সে ক্রমেই এই জন্মের স্মৃতি ভুলে যাচ্ছে এবং এন্টনি ফিরিঙ্গিতে পরিণত হচ্ছে। তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় যিশু সেনগুপ্তের। মূলত যিশু বলতে পারেন এই যুগের এন্টনি ফিরিঙ্গি। এরমধ্যে রয়েছে প্রেমকাহিনি সংগীয়। মুভিটার বেশ বৈজ্ঞানিক ব‍্যাখাও আছে। পৃথিবীতে নাকী এইরকম কিছু মানুষ আছে যারা তাদের পূর্বজন্মের সবকিছু বলে দিতে পারে। মুভিতে সবার অভিনয় ছিল অনবদ্য এবং গানগুলো অনেক সুন্দর ছিল।।

---

---

ব‍্যক্তিগত রেটিং : ৯/১০

---

---

মুভির অফিশিয়াল ট্রেলার

---

---