বন্ধুর সঙ্গে বাবু বাড়ি পরিদর্শন। ১০ শতাংশ লাজুক শিয়ালের জন্য।
আসসালামু-আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন। কয়েকদিন আগে বন্ধু রুপকের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছিলাম ফরিদপুরের বিখ্যাত বাবু বাড়ি দেখতে। আমার সব সময়ের ভ্রমণ সঙ্গী বন্ধু রূপকের সঙ্গে একটা বিষয়ে আমার দারুন মিল। আর তা হচ্ছে দুজনেই আমরা ভ্রমণ পিপাসু। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা বললে দুজনের কারই কোন মানা নেই। তবে সময় এবং সুযোগের অভাবে সব সময় মনের ইচ্ছা পূরণ করা সম্ভব হয় না। বেশ কিছুদিন যাবৎ ভাবছিলাম দূরে কোথাও ঘুরতে যাব কিন্তু আশেপাশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে ঝটপট ঘুরে আসা যায়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ফরিদপুরের বাইশ রশিতে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই জমিদার বাড়ি দেখতে যাবার। যদিও ইতিপূর্বে আমরা বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে একবার গিয়েছিলাম এই জায়গাটিতে। তাও প্রায় 6-7 বছর হয়ে গেছে। সুতরাং যেই ভাবনা সেই কাজ। দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরবর্তী সদরপুর উপজেলার বাইশ রশিতে অবস্থিত জমিদার বাড়ি দেখতে যা এলাকার লোকজনের কাছে পরিচিত বাবু বাড়ি নামে।
ঐতিহাসিক মতে এই জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয় ১৮০০ শতকের শুরুর দিকে। এই জমিদারদের পূর্বপুরুষ যার মাধ্যমে জমিদারির পত্তন হয় তিনি ছিলেন একজন লবণ ব্যবসায়ী। এই ব্যবসায় বিপুল সম্পত্তি অর্জন করার পর তিনি নতুন নতুন জমি ক্রয় করার মাধ্যমে তার জমিদারির আওতা বৃদ্ধি করেন। তৎকালীন সময়ে এই অঞ্চলের এই জমিদার বংশ বেশ প্রসিদ্ধি লাভ করেন। এই জমিদার বংশের শেষ বংশধর বাবু রাজেন্দ্র চন্দ্র মজুমদার যার কোন সন্তানাদি ছিলেন না এবং তিনি তার বিপুল সম্পত্তি বিভিন্ন জনহিতকর কাজে ব্যয় করেন। এমনকি ফরিদপুর শহরের বিখ্যাত রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমস্ত জায়গা তারই দান করা এবং এই কলেজটির নামকরণও করা হয়েছে তার নামে। সত্যি বলতে কি এই জমিদার সাহেবেরা ছিলেন অত্যন্ত সৌখিন মানুষ যা তাদের বাড়ি তৈরীর নির্মাণশৈলী দেখলেই বুঝতে পারা যায়। বিশাল জায়গা নিয়ে বিস্তৃত অনিন্দ্য সুন্দর নকশার এই বাড়িটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে হয়তো অচিরেই এই স্থাপনাটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে। সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ ব্যবস্থা নিলে হয়তো এটাকে আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হতো।
মাঝখানে উঠান বেষ্টিত বিস্তৃত বসত বাড়ির পাশেই বিশাল আকৃতির কয়েকটি দিঘী। আরো আছে বাগান, কয়েকটি মঠ আর খোলা মাঠ। সব মিলিয়ে দারুন একটা পরিবেশ। আমাদের ফেরার তারা থাকায় ঘন্টাখানিক সময় কাটিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং অসংখ্য পুরাতত্ত্বিক নিদর্শন ছড়িয়ে আছে পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে এসব জায়গায় ঘুরতে গেলে দারুণ কিছুটা সময় অতিবাহিত করা যায়। হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন সদরপুরের এই বাবু বাড়ি থেকে।
আজকের মত এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Sadarpur, Faridpur |
ভাই আপনার আর রুপক ভাইয়ের ভ্রমন কথা অনেক শুনেছি রুপক ভাইয়ের পোষ্টে ৷ যা হোক আপনি জমিদার বাড়ির সম্পর্কে বেশ অনেক কিছু জানেন ৷ জমিদার লবণ বিক্রি করে এতো কিছু করছে ৷ শুনে সত্যি অবাক হলাম ৷ যা হোক পরিবেশটা সত্যি দারুন ছিল ৷ আলোকচিত্র গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
এতটুকু তথ্য না দিলে আসলে মেকি পোষ্ট মনে হয় । তাই চেষ্টা করি কিছুটা হলেও তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্ট করতে। যাইহোক আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আমার পোষ্টে আপনার মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
সেই সময়কার জমিদাররা অনেক সৌখিন ছিলেন
জমিদার বাড়িগুলো দেখলে তা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় । আপনি তো দেখছি জমিদার বাড়ি সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন ভাই। পুরনো এমন জমিদার বাড়ি দেখতে বেশ ভালো লাগে আমার কাছে । যদিও আমাদের আশেপাশে এমন জমিদার বাড়ি নেই তবে বেশ কিছুটা দূরে রয়েছে। আমি কয়েকবার সেখানে গেছি পুরনো এরকম জমিদার বাড়ি পরিদর্শন করছি। এসব পুরনো জমিদার বাড়িগুলো সংরক্ষণ এবং সংস্কারের অভাবে দিন দিন সত্যিই ধ্বংসের মুখে। সময়ের সাথে সাথে এখন এগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
আমার কাছেও এসব পুরাতন স্থাপনাগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। আর জমিদারদের বাড়ি দেখলেই বোঝা যায় যে তারা কেমন সৌখিন ছিলেন। আশাকরি কোন একদিন আপনার পোষ্টে আপনার দেখা ঐ জমিদার বাড়ি সম্পর্কে জানতে পারব। ধন্যবাদ ।
আমাদের এদিকে এরকম একটা পুরাতন জমিদার বাড়ি আছে। যার নাম প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি। আর এটাকে বড় বাড়ি নামেও বলা হয়। আর এই বাড়িতে একটা মেলাও হয়ে থাকে। সম্প্রতি এখানে মেলার আয়োজন করা হয় একমাস ব্যাপী। তবে এরকম বাড়িগুলোতে ঘুরতে কিন্তু বেশ ভালই লাগে। আপনি আর রূপক ভাইসহ সেখানে গিয়ে ঘুরে এসেছেন, আর আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য এত সুন্দর একটা বাড়ি দেখতে পেলাম।
আপনাদের প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আশাকরি কোন একদিন শেয়ার করবেন আমাদের সাথে। এই ধরনের জায়গাগুলো দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাই।
আমি আরো কয়েক মাস আগে পোস্ট করেছিলাম প্রতাবপুর জমিদার বাড়ির। ধন্যবাদ মন্তব্যের রিপ্লে দেওয়ার জন্য।
আমাদের এদিকে অসম্ভব সুন্দর একটি এরকম রাজবাড়ি রয়েছে যেখানে আমরা মাঝেমধ্যে এগিয়ে থাকি ঘোরাঘুরি করার জন্য। আসলে যদি আশেপাশে এরকম জায়গা গুলো থাকে ঘোরাঘুরি করতে একটু বেশি ভালো লাগে। অন্যরকম একটা আকর্ষন কাজ করে মনের মাঝে যখন এরকম জায়গায় গিয়ে থাকি। আপনাদের তাহলে ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তটি বেশ ভালই কেটেছে। জমিদার বাড়িগুলো পুরাতন হলেও এগুলোর মধ্যে অন্যরকম একটা সৌন্দর্যতা রয়েছে।
বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলে যে কোন জায়গাতেই ভালো লাগে। তবে এই জায়গাটা আসলেই সুন্দর। আপনাদের এলাকার রাজবাড়ী নিয়ে পোষ্ট করার অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ আপু।
কয়েকদিন আগে আমি এবং আমার এক বড় ভাই বাইক নিয়ে আমাদের এদিকের একটি রাজবাড়ীতে গিয়েছিলাম। যেখানে আমরা মাঝেমধ্যে এগিয়ে থাকি। এরকম রাজবাড়ীগুলোতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ঘুরতে আসে। এই বাড়িগুলোকে কেও রাজবাড়ী আবার কেউ জমিদার বাড়ি বলে থাকে। মুহূর্তটি তাহলে বেশ ভালোই কেটেছে আপনাদের।
জমিদার এবং রাজাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছ মনে হয়। যাই হোক ইতিপূর্বে আপনাদের এ রাজবাড়ির পোষ্ট শেয়ার না করে থাকলে পোষ্ট করার অনুরোধ রইল। শুভকামনা আপনার জন্য।