আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগ12 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে ভয়ের একটা স্পষ্ট কারণ এখনো কম্পন ছড়াচ্ছে হৃদয়ের সীমানায়। সত্যি বলতে হঠাৎ করে একাধিক ভূমিকম্প এবং তারপর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আগুনের ঘনাঘটা প্রকৃতির একটা অশনি সংকেত কিনা সেটা নিয়েও ভাববার সময় হয়েছে। যদিও আমরা চরম মুহুর্তে আসার পরেই কেবল নিজেদের হুশ ফিরে পাই, তার আগ পর্যন্ত আমরা বেহুশ হয়েই পড়ে থাকি। আমাদের চৈতন্য খুব একটা কাজ করে না এখন, আমরা খুব বেশী চেতনাহীন হয়ে গেছি।

যাইহোক, পরিবেশ হয়তো তার অবস্থান হতে তার নিয়মেই আমাদের উপর প্রতিশোধ নিবেন কিন্তু আমরা সেটা সহ্য করতে পারবো কিনা সেটা নিয়েই বেশী চিন্তা হচ্ছে এখন। আমরা ধীরে ধীরে প্রকৃতিকে অনেক বেশী আগ্রাসী করে দিয়েছি, প্রকৃতির স্বাভাবিক অবস্থা নষ্ট করে দিয়েছি কিন্তু এর পরিণতি কি হবে বা হতে পারে সেটা নিয়ে আমরা কখনো চিন্তা করি নাই, আফসোসের বিষয় হলো সেই সময়ও আমাদের মাঝে ছিলো না। কিন্তু যখন সময় শেষ হয়ে আসে এবং সেখানে কিছু করার কোন অপশন থাকে না, তখনই কেমন আমাদের চৈতন্য ফিরে আসে আর আমরা ভীষণভাবে হৈ চৈ করা শুরু করে দেই।

brain-8258274_1280.jpg

এইতো সেদিন ঢাকার বুকে থাকা বিশাল মানে সবচেয়ে বড় কড়াইল বস্তির আগুন আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো, অনেক ক্ষেত্রেই আমরা এখনো অসহায় মানে আমাদের কিছুই করার থাকে না। খোদ রাজধানীর বুকে থাকা, চারপাশে আধুনিকতার চাকচিক্যের মাঝেও এমন একটা নিদারুণ ক্ষত তৈরী হওয়া, মোটেও স্বাভাবিক বিষয় নয়। এটা কোন ভাবেই কাম্য ছিলো না, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর সভ্যতার মাঝে বসবাস করেও আমরা এক প্রকার অসহায়ভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছি কিভাবে আগুনের লেলিহান শিখায় মানুষের হৃদরে মাঝে থাকা স্বপ্নগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

আমরা হয়তো কল্পনাও করতে পারবো না, কত হাজার মানুষের স্বপ্ন সেদিন পুড়ে ছাই হয়েছে, কত শিশুর ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়েছে, কত মানুষ তাদের শেষ সম্বলটুকু মুহুর্তের মাঝেই হারিয়ে ফেলেছে। একটা স্বপ্ন দেখা হয়তো সহজ কিন্তু সেটার জন্য প্রস্তুতি নেয়াটা মোটেও সহজ না, সময়ের সাথে সময়, দিনের সাথে দিন এবং কষ্টের সাথে ধৈর্যের পরীক্ষা দেয়ার মাধ্যমে সেটার প্রস্তুতি নিতে হয়। আর সেই প্রস্তুতিটি যদি মুহুর্তের মাঝেই আগুনের লেলিহান শিখায় বিনষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেই মানুষগুলোর অনুভূতি কি আমরা অনুভব করতে পারবো? মোটেও সেটা সম্ভব নয়।

সমস্যা আছে, সমস্যা থাকবে, সক্ষমতাও সেখানে থাকতে হবে যাতে মানুষ তার স্বপ্নগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার সামান্য হলেও সুযোগ পায়। আমার অফিসের কাজের বুয়ার বাসা সেখানে ছিলো, তার অস্তিরতা কিংবা হৃদয়ের চিৎকার আমরা সেদিন দেখেছি, মানুষের আকুতিগুলোর স্পন্দন হয়তো আমরা বুঝতে পারি না কিংবা সেখানে আমরা অক্ষম কিন্তু তার চোখের কোনে থাকা পানির ফোঁটা অনেক কথাই বলে দেয়, অনেক কিছুই প্রকাশ করে দেয়। মানুষের এমন অসহায়ের নির্জীবতা কোনভাবেই আমাদের কাম্য হতে পারে না, সহানুভূতির শেষ কম্পনটুকু হলেও আমাদের ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে, মানুষ হিসেবে মানুষের মতো বেঁচে থাকার সুযোগ দিতে হবে।

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png