মানুষের আচরণে এখন শ্রদ্ধা ও সম্মানের অভাব স্পষ্ট

in আমার বাংলা ব্লগ22 days ago

analysis-6232545_1280.webp

copyright free image from pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই সবচেয়ে গুুরুত্বপূর্ণ। এখন শীতকাল। গ্রামে এখন ভালোই শীতে পরে সকাল সকাল। বিশেষ করে শেষ রাতে। তো সবকিছুই এখন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আসলে গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রাও এখন ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। মাঝ বয়সী তরুণ-তরুণীদের হাতে ফোন চলে এসেছে। গ্রামের মোটামোটি সবার হাতেই ফোন। ফোনে বেশিরভাগ ছেলেরা গেমিং এ এডিক্টেড! পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের একশন ফিল্ম এসব দেখাতেও তারা এডিক্টেড অনেক। সময়ের সাথে সাথে তাদের চিন্তাধারাতেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে! তবে তাদের মাঝে একটা জিনিসের বড্ড অভাব স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে আর সেটা হলো শ্রদ্ধা ও সম্মানের।

গ্রামের অনেক ছেলে এমনভাবে চলাচল করে মনে হয় তারা অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। হাতে ফোন ইউজ করতে করতে বড়দের সামনে দিয়ে হেটেঁ চলে যাওয়া, বড়দের সামনে সিগারেট খাওয়া, শার্টের কলার তুলে হাটাঁ। সবই এখন নিত্যদিনের ঘটনা! তাদের মাঝে নেতৃত্ব দেয়ার মতো ভাব চলে এসেছে। কিন্তু তাদের মাঝ থেকে যে শ্রদ্ধা ও সম্মান জিনিসটা হারিয়ে গেছে সেটার খেয়াল নেই! এ সবকিছুই নৈতিক মূল্যবোধ এর চরম অবক্ষয় বলা যায়। আমাদের সময় মুরব্বিদের সামনে ফোন ইউজ করা তো দূরের কথা, দশহাত দূরে দিয়ে যেতাম! তাদেরকে আমরা যথেষ্ট সম্মান করতাম! তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতাম এবং মেনে চলার চেষ্টা করতাম।

কিন্তু এখন সব দৃশ্যপট উল্টো। গ্রামের একটা শালিশ বসলে সেখানে মুরব্বিদের আগে নেওয়া হতো। গ্রামের মুরব্বিরা যে রায় দিতো সেটাই মেনে চলতো। কিন্তু এখনকার শালিশে মুরব্বিদের রায়কে বিবেচনায় নেয়া হয় না। এমনকি তাদেরকে শালিশেই আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তাদেরকে দেয়া হয় মাথা পাগল তকমা। কারণ তাদের বয়স তো বেড়ে গেছে! উল্টা-পাল্টা বলবে! এই যে তাদেরকে এমন তকমা দেয়া হলো সেটা কি আসলে যুক্তিযুক্ত হলো! মোটেও না আসলে। আপনার বয়স কতো আর মুরব্বিদের বয়স কতো। তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে হলেও শালিশে আমন্ত্রণ দেয়া উচিত! এখনকার সমাজে কে বড় কে ছোট এসব দেখার সময় পরে না। বয়সে বড় ব্যক্তিদের সাথেও এখন খারাপ ব্যবহার করে ফেলা হয়!

আসলে আমাদের ব্যস্ততা বাড়ছে, ধৈর্য কমছে। কোনো কিছু শোনার আগ্রহ আমাদের একেবারে কমে গেছে আসলে। এসবই আসলে স্মার্টফোন এর অধিক ব্যবহারের কুফল! কাউকে মনোযোগ দিয়ে শোনাও একধরনের সম্মান। যেটা এখন খুব কম দেখা যায়। অন্যের অনুভূতিকে সম্মান করা একধরনের শ্রদ্ধা! আমাদের মানসিকতা দিন দিন ব্যাহত হচ্ছে। নিজেকে এখন বড় ভাবী। মনে মনে ভাবী আমার কথায় ঠিক। আর সবাই বেঠিক! কিন্তু এটা কি হতে পারে? কখনোই এমন হতে পারে না। আপনার কথায়ও ভুল থাকতে পারে।

বর্তমানে এসব বিষয় নিয়েই সবচেয়ে বেশি বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। কিছুদিন আগে এক ভদ্রলোকের সাথে কথা হয়। ভদ্রলোক পেশায় একজন পুলিশ। হাইকোর্টে জব করে। উনার জীবনে বহু কেইস দেখেছেন। সবচেয়ে বেশি যেটা দেখেছেন সেটা হচ্ছে মেয়ে রিলেটেড আর জমি সংক্রান্ত। সম্পর্কগুলো এখন টুংকো কাচের মতো হয়ে গেছে। বিয়ের পরে যে হাসবেন্ড কে সম্মান করতে হবে এটাও অনেক মেয়ে করে না। শুধু যে মেয়েদের দোষ ব্যাপারটাও এমন না। ছেলেদেরও তো দোষ আছে! ছেলেরাও বিয়ের পরে অন্য মেয়ের পিছনে ঘুরে বেড়ায়। আসলে দুপক্ষ ই দোষী এখানে। মানসিকতার চরম অবক্ষয়। বিয়েটা এখন খেলনা পুতুলের মতো। আপনার ভালো লাগলো না মানে আপনি ভেঙে দিলেন!

আসলে আজকের সমাজে টিকে থাকা কঠিন। আপনি দশতলায় উঠে গেছেন কিছু মানুষ থাকবে আপনাকে দশতলা থেকে নিচ তলায় নিয়ে আসতে। তবে যারা এ কাজগুলো করে তারা খেয়াল করে দেখবেন দশতলা উঠার স্বপ্ন দেখে না। তারা অন্যকে নিচে নামাতোই ব্যস্ত! মানসিকতার চরম অবক্ষয় সবখানে স্পষ্ট! আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া জরুরি।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG_4442.JPG

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।