ছোটগল্পঃ "অপ্রকাশিত অনুভূতি "
শীতের বিকেল। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় গাছের পাতার মাঝ দিয়ে আলো এসে পরছে গায়ে। কোমল রোদ,শান্ত পরিবেশ। কেমন যেন একটা নীরবতা কাজ করছিল। আবির হাতে একটা বই। বিকাল বেলা সবাই খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আবির চলে আসে বই পড়তে ক্যাম্পাসের লাইব্রেরীতে। ক্যাম্পাসের লাইব্রেরীটাও তখন নীরব থাকে। পড়তে তখন ভালোই লাগে আবিরের! আবির কি মনে করে হাতে বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক তখন একটি মেয়ে তার পাশ দিয়ে চলে গেল।
মেয়েটির চোখে আবিরের চোখ পরে গেল। মেয়েটির চুল গুলো উড়ছে হালকা বাতাসে। পরনে নীল রঙের জামা। মেয়েটি চোখে কাজল মেখেছে। আবির অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। এর আগেও অনেক মেয়েকে সে দেখেছে ক্যাম্পাসের লাইব্রেরীতে পড়তে আসতে। কিন্তু কারো প্রতি তার এতোটা মায়া তৈরি হয়নি। যতটা আজ অচেনা এক মেয়েটিকে দেখে তার মনের ভিতর এক অচেনা মায়া তৈরি হলো। সে ভাবছে এটা শুধুই কি মায়া নাকি কয়েক মুহূর্তের অনুভূতি মাত্র!
মেয়েটি লাইব্রেরির দিকেই যাচ্ছে। আবির মেয়েটির আগেই লাইব্রেরীতে চলে গেল। মেয়েটিকে বুঝতে দিল না যে তার পিছনেই সে আসছে! লাইব্রেরীতে গিয়ে আবির সেল্ফ থেকে বই খুজঁছে! ঠিক তখন মেয়েটিও আসলো। মেয়েটি এসে লাইব্রেরী এসিসট্যান্টকে বললো হুমায়ুন আহমেদ এর অপেক্ষা বইটা আছে কি না। আবির সেটা শুনে ফেলল। লাইব্রেরীতে হুমায়ুন আহমেদ এর একটি মাত্র বই-ই ছিল। আবির সেল্ফ থেকে বইটি আগেই নিয়ে নিল।
আবির বইটি নিয়ে পড়তে শুরু করলো। বইয়ের কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পর হঠাৎ করেই সেই অচেনা মেয়েটি এসে হাজির!
" এক্সকিউজ মি, ভাইয়া! আপনি কি বইটা নিবেন? "
মেয়ের এমন কথা শুনে কি বলবে সে বুঝতে পারলো না। সব কথা যেন প্যাচ লেগে গেল আবিরের। নিজেকে শান্ত করে সে উত্তর দিল!
" জি, বইটি আপনি নিতে পারেন। আমার শেষের কয়েকটা পৃষ্ঠাই বাকি ছিল!
আবির তখন বইটা মেয়েটিকে দিয়ে দিল। বইটি দেয়ার পরে আবির সাহস করে মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করলো।
মেয়েটির নাম নীলা! তার কথা শুনেই আবিরের ভালো লেগে গেল! এই ভালো লাগার নামই হয়তো ভালোবাসা। আর সেখান থেকেই ভালোবাসা আসে।
নীলা আবিরের কাছ থেকে বইটি নিয়ে চলে যায়। আবির প্রতিদিন লাইব্রেরীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে! কখন আসবে নীলা! কিন্তু এক মাস হয়ে গেল! নীলার কোনো খোজঁ নেই। লাইব্রেরীতে গিয়ে এসিসট্যান্ট এর কাছে জানতে চাই কোনো নাম্বার লেখা ছিল কি না। সেখানেও পায়নি নাম্বার!
কিন্তু হঠাৎ একদিন আবিরের কাছে একটা আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসে!
" আমি আপনার বইটি দিতে পারেনি যথা সময়ে তার জন্য দুঃখিত। বইটি কখনো দেয়া হবে কি না জানি না! আপনি ভালো থাকবেন। "
আবির লেখাটি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য থমকে দাড়াঁয়। প্রথম দেখায় নীলার প্রতি যে মায়া, ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল সেটা আজও অপ্রকাশিতই রয়ে গেল।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।



এই পোষ্টে সাইফক্সকে বেনিফিশিয়ারী দেয়া হয় নাই, এই বিষয়ে আরো সচেতন হওয়ার অনুরোধ করা হলো। ধন্যবাদ
তার জন্য দুঃখিত। ভুলক্রমে হয়ে গেল। পরবর্তীতে দিবো আশা করি।