ঈদের সেকাল আর একাল।

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজকে সকালে উঠে ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে বাড়িতেই শুয়ে রয়েছি। আর শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছি এখনকার ঈদটা আগেকার থেকে কতোটা অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। সেই ছোটবেলার ঈদের কথা মনে পড়ছে। ছোটবেলায় ঈদের অনেক দিন আগের থেকেই ঈদের আনন্দ শুরু হয়ে যেতো। শুধু দিন গুণতে থাকতাম কবে থেকে স্কুল ছুটি হবে আর কবে দাদু বাড়িতে যেতে পারবো? তারপর সেখানে গিয়ে অন্যসব চাচাতো ভাই-বোনদের সাথে হইহুল্লোড় করে ঘুরে বেড়ানো। তাছাড়াও আশেপাশে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে কম্পিটিশন করে কাপড় চোপড় কেনা, বাজি কেনা, আবার ঈদের দিন সেই কাপড়চোপড় পড়ে সবাইকে দেখিয়ে ঘুরে বেড়ানো, বাজি পোড়ানো এসবই এখন অতীত হয়ে গিয়েছে।

My journey so far and what i got from STEEMIT_20240411_143314_0000.png

এবারও ঈদে কাপড়চোপড় কিনেছি কিন্তু সেগুলো পড়ার তেমন কোন আগ্রহ বোধ করছি না। বরং মনে হচ্ছে এই গরমের ভেতর ঈদের কাপড় পড়া থেকে বাসায় নরমাল কাপড় চোপড় পড়ে শুয়ে থাকতেই বেশি আরাম লাগছে। অথচ যখন একটু বড় হয়ে কৈশোরে পদার্পণ করলাম তখনও ঈদ মানে ছিল এক অন্য রকমের আনন্দ। তখন কাপড়চোপড়ের ব্যাপারে আমি খুব সিরিয়াস ছিলাম। বিদেশি জিন্স আর গেঞ্জির প্রতি আমার একটা অন্যরকম দুর্বলতা ছিলো। সারা বাজারে খুঁজে সবচাইতে ভালো জিন্সের প্যান্ট আর গেঞ্জি কেনার চেষ্টা করতাম। বাবা-মা যে বাজেট দিতো ঈদের জন্য বেশিরভাগ সময়ই সেই বাজেট অতিক্রম হয়ে যেতো। সেই সাথে তখন আশেপাশের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে কে কত রকমের আর কি পরিমান বাজির মজুদ করেছে ঈদের জন্য সেটা নিয়েও একটা প্রতিযোগিতা চলতো।


আর ঈদের দিন হলেই এই বাড়ি ও বাড়ি গিয়ে মিষ্টি খাওয়া, মজার মজার সব খাবার খাওয়া আর সব বন্ধু-বান্ধব মিলে রিকশা ভাড়া করে ঘুরে বেড়ানো। এই সবই এখন স্মৃতি। জানি পুরানো সেই দিনগুলো আর কখনোই ফিরে পাওয়া যাবে না। এখন শুধু সেই স্মৃতি রোমন্থন করে দিন কাটাতে হবে। তবে এটাও ঠিক বর্তমানে বাচ্চারাও আগেকার দিনের মত এতোটা মজা করতে পারে না। কারণ এখন মানুষের ভেতরে সম্পর্কের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমদের ছোটবেলায় যেমন আত্মীয়-স্বজনেরা দেশের যে প্রান্তেই থাক না কেনো ঈদের সময় ঠিক গ্রামের বাড়িতে হাজির হয়ে যেতো। এখন আর তেমন খুব একটা হয় না। এখন সবাই শহরমুখী হয়ে গিয়েছে। সবারই ব্যস্ত জীবনে ঈদ উদযাপনের জন্য সময়ের অভাব। তাছাড়া এখন আর আগের মত পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে মানুষের আসা যাওয়া তেমন একটা নেই। শুধু পাড়া প্রতিবেশীদের কথাই বা বলি কেনো। আত্মীয়-স্বজনের ভেতরেও এখন আসা যাওয়া খুব একটা নেই। এখন মানুষ ছুটি পেলে বাইরে কোথাও ঘুরতে যায়। আগের মতো আর আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যায় না। এই কারণে আর আগের মতো ঈদগুলোও উদযাপন করা হয় না।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 23 days ago 

এখনকার দিনের ঈদ বলতে আমরা যেটা বুঝে আসতেছি সেটা হচ্ছে শুধুমাত্র সকাল বেলা উঠে গোসল করে ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে এসে বাসায় ঘুমানো বা মোবাইল চাপা। আগের সেই স্মৃতির দিনগুলো এখন আর ওইরকম ভাবে উপভোগ করা হয় না। ছোটবেলায় সব থেকে যে বিষয়টি আমার ভালো লাগতো এটি হচ্ছে ঈদের দিন সকালবেলা সবাই হাতে টাকা ধরায় দিত। আর নতুন জামা তো আছেই। শৈশবের সেই ঈদ উদযাপনের সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65540.15
ETH 3522.97
USDT 1.00
SBD 2.48