শীতের আগমনী বার্তা: নভেম্বরের সকাল ও বাংলার হিমেল হাওয়া।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশে নভেম্বর মানেই ঋতুর পালাবদলের সময়। প্রকৃতি তখন ধীরে ধীরে বদলে যায়, গরমের ক্লান্তি কমে আসে, বাতাসে আসে একধরনের শীতল স্পর্শ। নভেম্বর থেকে শুরু করে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়টুকুই হলো আমাদের দেশে শীতকাল। এই সময়টা শুধু তাপমাত্রার পরিবর্তন নয়, বরং মানুষের জীবনযাপন, পোশাক, খাবার, প্রকৃতি সবকিছুতেই এক অন্যরকম রূপ নিয়ে আসে।
গত সপ্তাহে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠতেই শরীরে হালকা কাঁপুনি অনুভব করলাম। বাতাসে একধরনের ঠান্ডা ছোঁয়া, যেন প্রকৃতি নিজেই বলছে আমি চলে এসেছি, আমি শীত, চার মাসের অতিথি। মাঠে-ঘাটে, নদীর তীরে, আর হাওর-বাঁওড়ে তখন ঘন কুয়াশার চাদর বিছানো। নদীর ওপরে সূর্যের আলো যখন কুয়াশার ফাঁক গলে নিচে নামে, তখন দৃশ্যটা যেন স্বপ্নের মতো লাগে। গ্রামের মানুষজন তখন গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসে থাকে দোকানের সামনে, আর শিশুরা লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুম থেকে উঠতে চায় না, এ যেন বাংলার শীতের চিরচেনা চিত্র। যা বর্তমানে গ্রামবাংলায় হর-হামেশা সবার চোখে পড়ছে।
গ্রামে শীতের আমেজটা আলাদা রকমের। সকালের বাতাসে ধানের গন্ধ মিশে থাকে, আর মাঠে দেখা যায় ফসল কাটার ব্যস্ততা। গরু-মহিষে ভরা মাঠে তখন ঘাসে কুয়াশার শিশির জমে মুক্তার মতো ঝলমল করে। গ্রামের মানুষ তখন পাটের চাটাইয়ে বসে আগুন জ্বালায়, ধোঁয়ার গন্ধে ভরে যায় চারপাশ। এই দৃশ্যগুলো যেন মনে করিয়ে দেয়, বাংলার আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে গ্রামীণ জীবনে।
অন্যদিকে শহরের দিকেও এখন ধীরে ধীরে শীতের আগমনী বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলে ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগে, অনেক সময় বিছানা ছাড়তে ইচ্ছা করে না। রাস্তাঘাটে এখন দেখা যাচ্ছে মানুষ হালকা জ্যাকেট বা সোয়েটার পরে বের হচ্ছে। ফুটপাতে, মার্কেটে আর শপিংমলে শুরু হয়ে গেছে শীতের পোশাক বিক্রির উৎসব। কোথাও গরম কাপড়ের স্টল, কোথাও আবার কম্বল বিক্রির ভিড়। মনে হয় শহরজুড়ে যেন এক নতুন মৌসুমের আনন্দ উৎসব শুরু হয়েছে।
শীত মানেই শুধু ঠান্ডা নয়, এ সময়টা নিয়ে আসে নানা রকম আনন্দও। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে খেজুরের রস, নলেন গুড়, পিঠা-পায়েসের আয়োজন। গ্রামে তখন পিঠা বানানোর মৌসুম চলে,চুলায় ধোঁয়া উঠছে, নারীর হাসির শব্দে মুখরিত হচ্ছে উঠান। আবার শহরে দেখা যায়, অফিস শেষে গরম চায়ের দোকানে বসে বন্ধুদের আড্ডা, কেউ কেউ আবার সকালবেলা হালকা কুয়াশার মধ্যে হাঁটতে বের হয়। রাস্তার পাশে দেখা যায় ভাঁপা পিঠার উৎসব।
শীতের এই সময়টা অনেকের কাছে প্রিয়, আবার কারো কারো কাছে একটু কষ্টেরও। বিশেষ করে গরিব ও পথশিশুদের জন্য শীত মানে সংগ্রামের সময়। তারা কম্বল বা গরম কাপড়ের অভাবে কাঁপতে কাঁপতে রাত কাটায়। তাই শীতের আনন্দ যেমন আছে, তেমনি আছে মানবিক দায়িত্বও, যাদের শীতের পোশাক নেই তাদের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের মানবিক দায়িত্ব।
সবশেষে বলা যায়, নভেম্বরের সকাল আমাদের জানিয়ে দেয় যে শীত এসে গেছে। বাতাসের হালকা ঠান্ডা, কুয়াশার চাদর, পিঠার গন্ধ আর কম্বলের উষ্ণতা সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের শীত এক অনন্য অনুভূতি। প্রকৃতি বদলে যায়, জীবন বদলে যায়, আর আমরা নতুন করে অনুভব করি ঋতুর সৌন্দর্য এইভাবেই প্রতি বছর নভেম্বর এসে মনে করিয়ে দেয় শীতের দিনগুলো আবার ফিরে এসেছে। সানসেট বা আলমারি থেকে কম্বল ও গরম পোশাক বের করে রেডি হও।😅
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















