শৈশবের স্মৃতি- শীতের রাতে জোলাভাতি খেলার স্মৃতি

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)

আসসালামু আলাইকুম

*

কেমন আছেন আমার প্রিয় ও সহযাত্রী সকল ভাই ও বোনেরা। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।আজ আবারও হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সবার অতি নিকটে। ফেলে আশা অনেক স্মৃতির মাঝ থেকে কিছু স্মৃতি নিয়ে। আমাদের চলার পথে জীবনে সুখ দুঃখ কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে।সেই শৈশব থেকে শুরু করে মৃতুর আগ পর্যন্ত স্মৃতিগুলো যেন চোখে ও মনের মনি কোঠায় ভেসে বেড়ায়। আর তার মধ্যে জীবনে এমন অনেক ঘটনা থাকে যা কখনও ভোলা যায় না।

image.png

প্রতিটি মানুষের জীবনে শৈশব হলো এক অনন্য সময়, এক সত্যিকারের স্বর্ণযুগ। আমরা যত বড়ই হই না কেন, আমাদের শৈশবকে কখনও ভুলতে পারি না। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে, প্রতিটি সুখ-দুঃখের মুহূর্তে শৈশব যেন ফিরে আসে মধুর স্মৃতির পরশ নিয়ে। কখনও মনে হয়, যদি আবার সেই দিনগুলোয় ফিরে যাওয়া যেত, যেখানে ছিল নিঃস্বার্থ হাসি, খেলাধুলা আর নির্ভেজাল আনন্দে ভরা দিনরাত্রি। কিন্তু সময়ের টানে, জীবনের বাস্তবতায় আমাদের সবাইকেই ফিরে আসতে হয় বর্তমানে। তবুও হৃদয়ের এক কোণে শৈশবের আলো, সেই নির্ভার সময়গুলোর স্মৃতি আজও জ্বলজ্বল করে।

আসছে শীতকাল। আর শীতের এই আগমনী বার্তায় বার বার চোখে ভাসে সেই ছেলেবেলার দিনগুলি। কতই না আনন্দ ছিল ছেলেবেলার সেই সময়। আজও মনের আনাচে কানাচে বেজে উঠে শৈশবের সেই ধনি। শীত আসার আগেই শীতের নতুন পোশাকে বেশ দারুন কিছু শীতের পোশাক চলে আসতো বাসায়। আর শীতের সেই পোশাক পেয়ে আমরাও বেশ আনন্দ পেতাম। বার বার সেই নতুন পোশাক পড়ে সবাই কে দেখাতাম। শীতের পোশাক আর সারাদিনেও সরানো হতো না গা থেকে।

যেহেতু শীতকাল আসলেই স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত, তাই শীতের সময়টা কেটে যেত বেশ দূরন্ত পানায়। সারাদিন তেমন কোন খবর থাকতো না। সারাদিন বন্ধুদের সাথে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতাম। তবে আমার কাছে কিন্তু শীতের দিনের আসল মজাই ছিল বন্ধুদের সাথে ঝোলাভাতি খেলা। যেহেতু তখন বাজারে অনেক রকমের সবজি উঠতো তাই শীতের সবজি দিয়ে বন্ধুরা মিলে ছোট খাট পিকনিক খেলতে আমাদের কাছে বেশ দারুন মজা লাগতো। আর সে জন্যই আমরা পিকনিক বা জোলাভাতি করার আগের দিন বেশ সুন্দর করে প্ল্যান করে রাখতাম কি কি দিয়ে আমরা পিকনিক করবো।

এই পিকনিক করার জন্য বাসা থেকে বিছানার চাদর আনা হতো। আর সেই চাদর দিয়ে বাশের সাথে বেধে তারপর ঘর বানানো হতো। আর পিকনিক করার জন্য কোয়াটারের বিভিন্ন বাগান থেকে খরকোটা আনা হতো। এ কাজে আমরা সবাই মিলে সাহায্য করতাম। সেই সাথে আমরা সবাই মিলে বাজার করার টাকা চাঁদা তুলে যোগার করতাম। কেউ হয়তো মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আসতো। কেউ দিতো টিফিনের টাকা হতে বাচিঁয়ে দেওয়া টাকা। আর কেউ বা বাবার পকেট হতে চুরি করা টাকা দিতো।

এখন কথা হলো পিকনিক করবো বাজার কে করে দিবে। আমরা সবাই মিলে আমাদের একজনের বাবা কে ঠিক করতাম বাজার করে দেওয়ার জন্য। যে কারনে অনেক সময় আমাদের দেওয়া টাকা হতে বেশ কিছু বেশী বাজার চলে আসতো। কারন বাবা বলে কথা। যাই হোক বাজার আসলে বেশ ধুমধাম করে আমরা সেই গুলো কাটাকাটি করে তারপর লারকীর চুলায় রান্না করতাম। কত যে কান্না করেছি এই লাড়কির চুলায় রান্না করতে গিয়ে। তবে লাড়কীর চুলার খাবার কিন্তু সেই স্বাদ ছিল।

রান্না হয়ে গেলে যার যার বাসা থেকে গিয়ে থালা আনা হতো। কারন যার যার থালায় সে সে খেত। আমার এখনও মনে আছে লাইন ধরে সবাই এক সাথে খেতে বসতো। কি যে আনন্দ আর মজা ছিল সেই দিনগুলো তে। আর সেই জোলাভাতির রান্নাও কেন জানি বেশ সুস্বাদু হতো। কেন জানি সেই স্বাদ এখনও খুঁজে ফিরি। মনে হয় আবার যদি সেই শৈশবে যেতে পারতাম। তাহলে এমন দারুন মজার খাবার আবার খেতে পারতাম।

কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের শেয়ার করা পোস্ট। আশা করবো আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

আমার পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

1000028235.png

1000028233.gif

image.png