গভীর রাতে মাওয়া ফেরিঘাটে ইলিশ খেতে যাওয়া।
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@md-razu বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -২২ শে,বৈশাখ| | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ||রবিবার||গ্রীষ্মকাল ||
ফটো-এডিটর দিয়ে বানানো।
device:redmi note 10
What's 3 Word Location:
https://w3w.co/irony.watch.shopping
আজ আপনাদের মাঝে গভীর রাতে মাওয়া ফেরিঘাটে গিয়ে ইলিশ খাওয়ার গল্প শেয়ার করবো। আশা করি এই ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। আমিও ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে খুবই পছন্দ করতাম। আমার কিছু বন্ধু আছে তারাও ঘুরতে খুবই পছন্দ করে। বন্ধুদের চাওয়া-পাওয়ার সাথে মিল থাকলে তাহলে তো কোন কথাই নেই। যেখানে দুচোখ যায় সেখানেই যেতে মন চায় মন শুধু চায় ছুটাছুটি করতে বিভিন্ন জায়গায়। অচেনা দৃশ্য গুলো উপভোগ করতে।
এইতো কিছুদিন আগে ইচ্ছা জাগল মাওয়া ফেরিঘাটে গিয়ে ইলিশ খাব। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। দুইটা বাইক নিয়ে চার বন্ধু বেরিয়ে পড়লাম মাওয়ার উদ্দেশ্যে। আমাদের মধ্যে যখনই পরিকল্পনা হবে তখনই কাজটা আমরা করে থাকি। আমাদের বাসা থেকে মাওয়া ফেরিঘাট ৫০ কিলোমিটার হবে। আমরা রাত দশটার সময় বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি। ঢাকার মধ্যে যে জ্যাম সেজন্য একটু রাতে বেরিয়ে পড়ি। ঢাকা মাওয়া হাইওয়েতে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগে। আগেই বলেছি ঢাকার মধ্যে প্রচুর জ্যাম। ঢাকা মাওয়া হাইওয়ের পরিবেশটা খুবই সুন্দর লাগছিল।
আমাদের উদ্দেশ্য ছিল আমরা সারারাত মাওয়া ফেরিঘাটে সময় অতিবাহিত করব। বাসা থেকে যখন বের হই তখনই আমাদের পরিকল্পনা ছিল আমরা সকালে বাসায় ফিরব। যদিও পথে আমাদের অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল। এজন্য আমরা পৌঁছাতে প্রায় রাত সাড়ে বারোটা বেজে যায়। রাতের মাহফিল ঘাট অনেক সৌন্দর্য ভরপুর থাকে। রাত হলে কি হবে সেখানে মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি। আমরা নদীর পাড়ে গিয়ে বসে চা সাথে কিছু কোলড্রিংস খাই। মূলত আমাদের খাবার পরিকল্পনা ছিল রাত তিনটার দিকে। এজন্য আমরা সময়ে অতিবাহিত করার জন্য ফেরিঘাট অনেক ঘুরাঘুরি করি। আকাশের চাঁদ সাথে অনেকেই ঘুড়ি উড়াচ্ছে। দৃশ্যটা মন কেড়ে নিয়েছে আমাদের। আমরাও তখন পরিকল্পনা করি একটা ঘুড়ি কিনব। আসলে ঘুড়ি কুড়ায় করলে আমাদের সেখানেই উড়াতে হবে। যেহেতু আমরা বাইক নিয়ে গিয়েছি ঘুড়ি আনার জন্য তেমন কোন সিস্টেম ছিল না। পদ্মা নদীর তীরে বসে আমরা অনেক গল্পগুজব করে সময় অতিবাহিত করতে থাকি।
আমরা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইলিশ এবং চিংড়ি মাছ দেখি। যদিও আমাদের উদ্দেশ্য ইলিশ মাছ খাওয়া সাথে চিংড়ি হলে খেতে অন্যরকম একটা মজা লাগবে। এজন্য চিংড়ি মাছও নিয়ে নিলাম। মাওয়া পদ্মা নদীর ঘাটে যদি আপনারা কখনো যান অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন। কারণ তারা অনেক বেশি দাম চায়। আমরা দুইটা ইলিশ ও চারটা চিংড়ি দামাদামি করে নিলাম। আমরা যেহেতু এর আগেও অনেকবার গিয়েছি এ জন্য আমাদের কাছে দাম চেয়ে তেমন একটা লাভ হলো না তাদের। মাছের কি রকম দান আমরা আগে থেকেই জানা ছিল। তবে দামদর করতে আমাদের অনেক ভালো লাগে। আমরা অনেকগুলো রেস্টুরেন্টে খুঁজে খুঁজে টাটকা ইলিশ ও চিংড়ি মাছটা পছন্দ করি। তারপর দাম দর ঠিক করে তাদের ফ্রাই করতে বলি।
প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট আমাদের ওয়েট করতে হয়। তারপর টেবিলে খাবার এসে পৌঁছায়। খাবার খাওয়ার আগে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিই। তারপর আমরা খাবার শুরু করি।খাবার পরিবেশন করার আগেই তাহারা টেবিলে বসে পড়েছে। অবশ্য আমারও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছিল কখন খাবার আসবে। খেতে অন্যরকম একটা টেস্ট অনুভূতি পেয়েছি যা বলে বোঝানো যাবে না।খাবার পরিবেশন করার পর দেখলাম অনেক ধরনের আইটেম। মুখ ডাউন ভুনা বিভিন্ন ধরনের ভর্তা সালাদ শুকনা মরিচ ইত্যাদি। ইলিশ মাছের লেজ ভর্তা নিয়ে যখন গরম ভাত মাখিয়ে মুখে নিলাম তখন অন্যরকম একটা তৃপ্তি অনুভব করলাম। ইলিশ মাছের ভর্তা অনেক খেয়েছি কিন্তু এখানকার লেজ ভরতা যে এত টেস্ট তা বলে বোঝানো যাবে না। আর সরিষার তেল দিয়ে ইলিশ মাছ ভাজি গরম ধোয়া ওঠা ভাতের সাথে আহ কি মজা খেতে। ইচ্ছা হলে আপনারা অন্য ধরনের ভর্তা নিয়েও খেতে পারেন সাথে তো ডাউল ছিলই। আমাদের খেতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগেছিল। আগেই বলেছিলাম তৃপ্তি সহকারে খাব। যত সময় খেতে পারি তত সময় ধরে খেয়ে যাব। যদিও তারা চিংড়ি মাছ বলেছিল নদীর কিন্তু খাওয়ার পরে বুঝলাম এটা চাষের চিংড়ি। চিংড়ি মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। আপনাদের অবশ্যই মাওয়া গিয়ে ইলিশ খাওয়ার দাওয়াত দিব। আশা করি আপনারা গেলে সেখানে অনেক মজা করতে পারবেন।
খাবার শেষ করে কিছু সময় রেস্ট নিলাম। তারপর আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। আসার সময় আমাদের প্ল্যান ছিল বাইক ধীরগতিতে চালিয়ে আসব। তখন এক্সপ্রেসওয়েতে তেমন একটা গাড়ির চাপ ছিল না। যেহেতু ভোরবেলা হয়ে যাচ্ছে হালকা শীত শুরু করে দিয়েছিল। মনোরম পরিবেশে আমরা বাইক নিয়েই আসতে থাকি। কিছু সময় আসার পর পূর্ণিমা চাঁদটা দেখে রাস্তার একধারে বাইকটা রেখে কিছু ফটোগ্রাফি করা শুরু করে দিই। আসলে এমন পরিবেশ সম্মুখীন হওয়া সব সময় সম্ভব হবো না। এজন্য পরিবেশটাকে ইনজয় করতে থাকি। যখন ভোর ৪:৪০ বাজে তখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এসে পৌঁছায়। একটা বন্ধু মগবাজার থাকে সে তার বাসায় চলে যায়। আমরা তিন বন্ধু একটা বাইকে করে তখন বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। যেহেতু সকাল হয়ে গিয়েছিল এজন্য রাস্তাঘাটে তেমন জ্যাম ছিল না। আর সাথে পুলিশ মামাদের কোন দেখা নেই। এত সকালে তো তারা আর রাস্তাঘাটে আসবেনা।
আমি নিশ্চিত এই দিন আমাদের জীবনে স্মরণীয় হয়েই থাকবে। অন্যদিকে আপনি যদি ভাম্যমান প্রেমিক হয়ে থাকেন এবং নিরিবিলিতে কিছু সময় কাটাতে চান, খোলা আকাশ নদী সাক্ষী রেখে তার সাথে কথা বলতে চান, তবে আপনাকে ডাকছে, মাওয়া ফেরীঘাট, সুন্দর জায়গায় সাক্ষী রেখে আপনি আপনার আনাগত আগামী নিয়ে কথা বলতেই পারেন।বিবাহের পর সে কি আপনার সাথে এমনি পরিপূর্ন ব্যবহার করবে কি না।অন্যদিকে প্রেমিকেরা আপনাদের প্রেমিকের মন কেমন, কি খেতে পছন্দ করে, কেমন করে অচেনা মানুষের সাথে কথা বলে, হাঁটে কেমন, নিরাপত্তায় কেমন সাহসী ইত্যাদি পরীক্ষা করতেও তাকে নিয়ে যেতে পারেন।হা হা হা।।
আমি মো: রাজু আহমেদ, আমি একজন ছাত্র। আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি। আমি একজন ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, রান্না করতে, বই পড়তে, কবিতা পড়তে, খেলাধুলা করতে খুবই পছন্দ করি।স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness OR
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন গভীর রাতে মাওয়া ফেরিঘাটে ইলিশ খেতে যাওয়া অনুভূতি। আপনারা চার বন্ধু মিলে দুইটি বাইক নিয়ে আপনাদের বাসা থেকে মাওয়া ফেরিঘাটে উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ইলিশ খাওয়ার উদ্দেশ্যে। আসলে ঢাকার মধ্যে অনেক জ্যাম ভাই। আপনারা প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গিয়েছেন ইলিশ খাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করলে অনেক বেশি পথ কম মনে হয়ে যায়। অনুভূতিটা আসলেই খুবই সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে মতামতের জন্য।
ইচ্ছে থাকলে আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় আপনাদের মত এভাবে বেড়ানো। তবে আপনাদের ব্লগ গুলো দেখলে পারে আমার খুবই ভালো লাগে, যেন মাঝে মাঝে কিছুটা হলে আনন্দ পাই। আরে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। গভীর রাতে এমন বেড়ানোর মজাই হয়তো আলাদা আর পাশাপাশি যদি খাওয়া দাওয়া হয় তাহলে তো আরো অনেক কিছু।
আসলে আপু ঘোরাঘুরি করতে আমরা অনেক পছন্দ করি। সময় পেলেই অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। ধন্যবাদ সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।
সেদিনের রাতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা সবাই মিলে অনেক বেশি মজা করেছিলাম বিশেষ করে নদীর ধারে বসে ছিলাম ওই মুহূর্তটা বেশি ভালো লেগেছে। সর্বশেষে খাবার দাবার খাইলাম সবমিলিয়ে সকালে আসতে ও দারুন একটি ওয়েদার পেয়েছিলাম। তোমার পোস্টটি দেখে স্মৃতি মনে পড়ে গেল
তুমি ঠিকই বলেছ মামা সেদিনের রাতটা আসলেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন মুহূর্ত আমাদের জীবনে বারবার ফিরে আসুক।
গভীর রাতে ঘোরাঘুরি করার মুহূর্ত শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। বাইক নিয়ে বন্ধুদের সাথে মাওয়া ফেরিঘাটে গিয়ে ইলিশ ভাজা খেয়ে এলেন। ইলিশ মাছ গুলোর সাইজ দেখে তো বেশ বড় মনে হচ্ছে। ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর ছিল। আপনাদের কাটানো দারুন মুহূর্ত গুলো শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
গভীর রাতে বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরির মধ্যে আলাদা একটা মজা আছে। মাওয়া গিয়ে ইলিশ খাওয়ার মুহূর্তটা দারুন ছিল।
আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে আপনি একজন অসাধারণ ভ্রমণপ্রেমী এবং আপনার লেখনীতে সেই অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। আপনার বন্ধুত্ব এবং মজার মুহূর্তগুলোর বর্ণনা পড়ে আনন্দ পেলাম। আপনার ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহ এবং রান্নার প্রতি ভালোবাসা আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। আপনার এই সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী আমাদের সাথে ভাগ করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক আগে থেকে ঘোরাঘুরি করতে অনেক পছন্দ করি। এটা আপনি ঠিক বলেছেন আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে থাকি আর ভ্রমণ করতে আমার খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ মতামতের জন্য।
গভীর রাতে মাওয়া ফেরি ঘাটে ইলিশ খেতে যাওয়ার পোস্ট পড়ে আমার তো ভীষণ ইচ্ছে করছে ভাই আপনাদের সাথে আড্ডায় যেতে। যদিও বা আপনাদের আনন্দঘন মুহূর্ত উপভোগ করা শেষ হয়ে গেছে, তবুও কেন যেন আফসোস লাগছে। এমন আনন্দঘন মুহূর্ত কাটাতে পারলে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগতো। আমিও মাওয়া ফেরিঘাটে গিয়ে অনেক রাত অবধি সময় কাটিয়েছিলাম আপনার ভাবির সাথে। আজ আপনার পোস্ট পড়ে সেই দিনের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো বেশ উপভোগ করলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, মাওয়া ঘাটে ইলিশ খেতে যাওয়ার সুন্দর মুহূর্তটুকু শেয়ার করার জন্য।
এবার হয় নাই তো কি হয়েছে। নেক্সট টাইম অবশ্যই একসাথে যাব মাওয়া ফেরিঘাটে ইলিশ খেতে। মাওয়া ফেরি ঘাটের মুহূর্ত টা দারুন ছিল।
রাতের মাওয়া আসলে দারুণ ব্যাপার! যাদের এই এক্সপেরিয়েন্স আছে, তারা সকলেই একবাক্যে স্বীকার করবেই। তবে ভাই, মুখ ডাউন ভুনা জিনিসটা ঠিক কি, ধরতে পারলাম না! আর মাওয়া থেকে ইলিশ মাছের লেজ ভর্তা খাওয়ার পর থেকে বাসায় সবসময়ই ইলিশ মাছের লেজ ভর্তা করেই খাই! এতই মজা পেয়েছিলাম লেজ ভর্তা খেয়ে! মানে বাসায় বসেই হালকা মাওয়ার ফিল নেয়া আর কি!
আপনি ঠিকই বলেছেন রাতের মাওয়া ফেরিঘাট আসলেই দুর্দান্ত। একবার গেলে আর ফিরতে মন চায় না। ইলিশের লেজ ভর্তা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।