অপ্রত্যাশিত কোনো কিছু বেশিদিন স্থায়ী হয় না।

আসলে, আমরা মানুষরা একটা নির্দিষ্ট ছন্দে বাঁচতে ভালোবাসি। একটা রুটিন, কিছু চেনা নিয়ম এই সব আমাদের ভরসা দেয়। যখন হঠাৎ করে আমাদের জীবনে এমন কিছু ঘটে যায়, যা আমরা ভাবিনি, তখন প্রথমে আমরা চমকে যাই। সেটা খুব আনন্দের খবরও হতে পারে, আবার খারাপ কিছুও হতে পারে। ধরুন, লটারি জেতা, বা অপ্রত্যাশিতভাবে একটা বড় সুযোগ পাওয়া প্রথমে আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। মনে হয়, জীবনটাই পাল্টে গেল। আবার, হঠাৎ কোনো বিপদ এলে, প্রথমে আমরা ভেঙে পড়ি, দিশেহারা হয়ে যাই।

সোর্স

কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখব , এই 'হঠাৎ' ব্যাপারটা একটা সময়ের পর আর ততটা 'হঠাৎ' থাকে না। ধরুন, আপনি হঠাৎ প্রচুর টাকা পেলেন। প্রথম কিছুদিন আপনার জীবন সম্পূর্ণ অন্যরকম মনে হবে। কিন্তু আস্তে আস্তে, সেই টাকা আপনার জীবনের একটা অংশ হয়ে যাবে। সেটা আপনার নতুন 'স্বাভাবিক' হয়ে উঠবে। প্রথম দিনের সেই চরম উত্তেজনাটা আর থাকে না। হয় আপনি সেই টাকাকে বুদ্ধি করে কাজে লাগাতে শুরু করবেন, নয়তো সেটা ধীরে ধীরে ফুরিয়ে যাবে। কোনোভাবেই সেই প্রাথমিক অপ্রত্যাশিত চমকটা আর থাকবে না।তেমনি, খারাপ কিছু ঘটলেও তাই। প্রথম ধাক্কাটা খুব জোরালো হয়। কিন্তু সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। যতই কঠিন পরিস্থিতি আসুক না কেন, মানুষ নিজের অজান্তেই তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করে। মন তখন শক্তি খুঁজে নেয়। আমরা তখন সেই খারাপ পরিস্থিতিকে কাটিয়ে ওঠার জন্য পথ খুঁজতে শুরু করি। একসময় আমরা বুঝতে পারি, এই বিপদটাও আমাদের জীবনের একটা অংশ, কিন্তু এটা চিরস্থায়ী নয়। ধীরে ধীরে আমরা আবার নিজেদের জীবনে ফিরতে শুরু করি।

আসলে, পৃথিবীর সবকিছুই পরিবর্তনশীল। এই জগৎ, প্রকৃতি সবকিছুরই একটা নিজস্ব ছন্দ আছে। অপ্রত্যাশিত ঘটনা সেই ছন্দে একটা ছোট ঢেউয়ের মতো আসে। ঢেউটা এসে সবকিছু কিছুটা ওলট-পালট করে দেয় ঠিকই, কিন্তু সমুদ্রের জল আবার শান্ত হয়ে যায়। তাই, অপ্রত্যাশিত আনন্দ বা দুঃখ যাই আসুক না কেন, আমরা যেন ভয় না পাই বা অতিরিক্ত ভেসে না যাই। কারণ, জীবনের নিয়ম এটাই কোনো কিছুই বেশিদিন একই রকম থাকে না, বিশেষ করে যা অপ্রত্যাশিতভাবে আসে। আমাদের কাজ শুধু ধৈর্য ধরে সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া।

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ। _{আমি ঘোরাফেরা, লেখালেখি এবং ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসি। ভ্রমণের মাধ্যমে নতুন জায়গা ও সংস্কৃতি আবিষ্কার করতে আমার আনন্দ লাগে। বিভিন্ন মুহূর্ত ও দৃশ্যকে ক্যামেরার লেন্সে বন্দি করা আমার শখ। লেখালেখির মাধ্যমে আমি আমার ভাবনা, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিগুলো শেয়ার করতে ভালোবাসি। প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের জীবনধারা এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার লেখার মূল অনুপ্রেরণা। আমি প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করার চেষ্টা করি এবং সেগুলোকে স্মৃতিতে ধরে রাখি। এসব অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন করে জীবনকে দেখার অনুপ্রেরণা দেয়।}