গল্প-ভরসার দুটো হাত||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। মাঝে মাঝে গল্প লিখতে অনেক ভালো লাগে। তাই যখন সময় পাই তখন গল্প লিখি। যদিও আজকে খুব একটা মন ভালো নেই। তবুও গল্প লিখতে বসে পরলাম। আসলে মানসিক প্রস্তুতি ছাড়া কখনো কোন কিছু লেখা সম্ভব হয় না। জানি না আমার লিখা গল্প আপনাদের কেমন লাগবে। আশা করছি ভালো লাগবে।
ভরসার দুটো হাত:
Source
সাথী তার প্রিয় মানুষটির ভরসার দুটো হাত ধরে অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছিল। মুখে তার এক টুকরো হাসি ছিল। আর মলিন মুখের আড়ালে লুকিয়ে ছিল ভয় কিংবা হতাশা। তবুও সে ভরসার দুটো হাত আঁকড়ে ধরে নতুন গন্তব্যে এগিয়ে গিয়েছিল। হয়তো বড্ড বেশি ভালোবেসেছিল তাকে। সাথী গ্রামের সহজ সরল মেয়ে। সবে মাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরতে না পেরতেই ভালোবেসেছিল শিহাবকে। শিহাব তার বান্ধবীর দুর সম্পর্কের আত্মীয়। কিভাবে যেন ছেলেটাকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছিল সাথী। কোন কিছু না ভেবেই তাকে ভালোবেসেছিলো।
শিহাবের সাথে যখন প্রথম সাথীর পরিচয় হয় তখন থেকেই শিহাবের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছিল সাথী। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে দুবার ভাবতে হয়নি তাকে। কারণ সে যে তার জীবনের ভরসার দুটো হাত পেয়ে গিয়েছিল। যেই হাত দুটো ধরে কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল জীবনের অনন্ত কাল। মাঝে মাঝে ভুল সিদ্ধান্ত গুলো জীবনের করুন পরিণতি ডেকে আনে। সাথীর জীবনেও তেমনটা হয়েছিল। সাথী শিহাবের হাত ধরে বেরিয়ে গিয়েছিল অজানা উদ্দেশ্যে। কিন্তু ভুল মানুষকে ভালোবেসে ছিল সাথী। যখন সাথী শিহাবের সাথে অজানা উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় তখন তার মনে অনেক স্বপ্ন লুকিয়ে ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে স্বপ্নগুলো বিলীন হয়ে গেল।
শিহাব সাথীর তুলনায় বয়সে অনেকটাই বড় ছিল। কিন্তু সাথী তার ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে কোন কিছুই যেন বুঝতে পারেনি। বয়সের তফাৎ থেকে শুরু করে জীবনের বাস্তবতা সবকিছুই যেন সাথীকে অন্ধ করে দিয়েছিল। যাকে ভালোবেসে ঘর ছেড়েছিল সেই মানুষটি তাকে অন্ধকার গলিতে ছেড়ে দিয়ে গেছে। কয়টা টাকার বিনিময়ে সাথীকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ঠাঁই হয়েছে নোংরা অন্ধকার পল্লীতে। যেই ভরসার হাত দুটো ধরে সাথী বেরিয়ে এসেছিল সেই হাত দুটোই তাকে ধাক্কা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল।
সাথীর জীবনে আর কোন স্বপ্ন নেই। নিজের স্বপ্নগুলোকে ভেঙেচুরে নিঃশেষ করে দিয়েছে মেয়েটা। স্বপ্নগুলো শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে। যাকে ভালোবেসে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে দূর অজানায় পারি জমিয়ে ছিল তার কথা যেন আজ শুধুই স্মৃতি। আজ তার হৃদয় জুড়ে শুধুই দীর্ঘশ্বাস। তার ভরসার হাত দুটোর ভয়ঙ্কর থাবা যেন তার জীবনটাকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছে। ভালোবাসার কিংবা ভরসার সেই হাত দুটো যেন আজ শুধুই ভয়ংকর এক চিত্র। যার উপর আর ভরসা করা যায় না। যে মানুষটিকে ভালোবেসে সাথী ভালো থাকতে চেয়েছিল সেই মানুষটি তাকে ছুড়ে ফেলে গেছে অন্ধকার গলিতে।
হয়তো এভাবেই জীবনের শেষ দিন চলে আসবে। আর চলবে মানসিক লড়াই। প্রতিনিয়তই যেন নিজের সাথে লড়াই করে মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতে সে আজ বড্ড ক্লান্ত। এখন আর কাউকে ভরসা করতে পারে না। তার বিশ্বাস এবং ভরসা নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে। তার জীবনের ভরসার সেই হাত দুটো যখন তাকে অন্ধকার গলিতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গেছে তখন থেকে তার জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতে কখন যে দুচোখে কালি পড়ে গেছে বুঝতেই পারেনি সাথী। হয়তো কোন একদিন সে এই অন্ধকার ঘরে থেকে মুক্তি পাবে। হয়তো সেই ভয়ংকর হাত দুটোর কথা ভুলে যাবে, যেই হাত দুটোর উপর ভরসা করে ঘর ছেড়েছিল। এরকম অনেক সাথী আছে যারা কয়েক দিনের পরিচয়ে কাউকে বিশ্বাস করে জীবনে অনেক বেশি ঠকে যায়। আর অন্ধকার জগতের মাঝে হারিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
https://x.com/Monira93732137/status/1858580997878804889?t=84hvtTyX0vojzTVWLhIAvQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার লেখা এই গল্পটা প্রথম দিক থেকে পড়তে আমার কাছে অনেক ভালোই লেগেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পড়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। ভরসার ওই দুটো হাত তার জীবনটাকে এরকমভাবে ধ্বংস করে দেবে, সে হয়তো এটা কল্পনাও করতে পারেনি কখনো। আপনি অনেক সুন্দর করে গল্পটা লিখেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর করে গল্পটা লিখে শেয়ার করার জন্য।
মাঝে মাঝে সম্পর্ক গুলো এভাবেই শেষ হয়ে যায়। আমরা অনেক সময় এগুলো চোখের সামনেই দেখি আপু। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
আসলে মন ভালো না থাকলে কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। যাইহোক অল্প দিনের পরিচয়ে কাউকে ভরসা করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এতে করে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে খুবই বেশি। সাথীর জীবনটা তো একেবারেই শেষ হয়ে গেলো। শিহাব একেবারে জঘন্য একটা কাজ করেছে। যাইহোক গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া মন ভালো না থাকলে কোন কিছু করতে ভালো লাগেনা। আমি চেষ্টা করেছি সুন্দর একটি গল্প লিখে উপহার দেয়ার।
আপনার গল্প পড়ে প্রথমে বেশ ভালো লেগেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সাথী এভাবে অন্ধকারে ডুবে যাবে তা জানা ছিল না। সত্যি আপু এমন অনেক সাথী আছে বিশ্বাস করে পরে এমন পরিণতির স্বাীকার হয়। ধন্যবাদ আপু।
ভুল সিদ্ধান্ত এবং ভুল মানুষের জীবনের করুন পরিণতি ডেকে আনে আপু। আমি সেরকম একটি গল্প উপস্থাপন করেছি।
গল্পটা পড়ে সত্যি খুবই খারাপ লাগছে আপু সাথীর জন্য। একটা মানুষ কতটা ভালবাসলে এভাবে চলে আসে। আর কিভাবে শিহাব এমনটা করলো সাথীর সাথে। কিভাবে ঠকাতে পারল।আসলে সত্যিকারে ভালোবাসা খুব কমই দেখা যায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
মাঝে মাঝে অনেকের জীবনের গল্পের সাথে কল্পনার গল্প মিলে যায় আপু। আসলে বাস্তবতা থেকেই গল্পের তৈরি হয়।
প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে আমাদের সমাজে। সামান্য পরিচয়ে যখন একটি মেয়ে ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে ঘর ছেড়ে বের হয় তখন কত স্বপ্ন থাকে তার চোখে। কিন্তু ভুল মানুষকে বেছে নেয়ার জন্য এক সময় তার জায়গা হয় অন্ধকার ঘরে। বেশ ভালো লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে। বাস্তব ঘটনা তুলে ধরেছেন আপনার লিখায়।
একদম ঠিক বলেছেন আপু প্রতিনিয়ত এরকম ঘটনা অনেক ঘটছে। আর এরকম ঘটনাগুলো একটি সুন্দর জীবনকে শেষ করে দেয়।
এমন ঘটনার শিকার হয়ে বহু মেয়েদের জীবন নষ্ট হয়ে যায় আপু। কিন্তু তাও আমাদের সমাজে কোন পরিবর্তন নেই। মানুষ যে কত নিষ্ঠুর হতে পারে তার উদাহরণ হল আপনার এই গল্প। আপনি সমাজের একটি অন্ধকার দিক কে আপনার গল্পের মাধ্যমে তুলে এনেছেন। সেই মেয়েগুলো ভাল থাক যারা ভরসার হাত ধরে জীবনে সবকিছু হারিয়ে ফেলে।
বাহ খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপু। ভালোবাসা গভীর হয় বিশ্বাস আর ভরসার উপর। কিন্তু কোনটা সত্যিকারের ভালোবাসা আর কোনটা মিথ্যার মায়াজাল তা অনেক সময় চেনা যায় না। যার কারণেই সাথীর মতো এমন অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। ভালোবাসা পাপ নয় তবে সঠিক মানুষকে ভালোবাসতে হবে তাহলেই জীবনে শান্তি পাওয়া যাবে,নয়তো সাথীর মতোই মৃত্যুর প্রহর গুনতে হবে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।