হঠাৎ করে আমাদের আম বাগানের মধ্যে ঘুরতে যাওয়া
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ১৮ ই মে ২০২৪ ইং
আপনারা হয়তো সকলেই ইতোমধ্যে অবগত আছেন যে, আমাদের এলাকা হাঁড়িভাঙ্গা আমের জন্য বিখ্যাত। আমাদের এলাকার মানুষ হাঁড়িভাঙ্গা আমের মাধ্যমেই তাদের আর্থিক চাহিদা পরিবর্তন করে নিয়েছে।এক সময়ে আমাদের এলাকার অনেক পরিবারের দিন কাটাতে অনেক কষ্ট হয়ে পড়ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগান দিয়ে এখন তাদের পরিবার কিছু টা স্বচ্ছল। আসলে মানুষের পরিবর্তন কখনো বলে আসে না। আর কার কখন পরিবর্তন চলে আসবে সেটিও অনুমান করা যায় না। যাইহোক আমাদের গ্ৰামের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ হাঁড়িভাঙ্গা আমের উপর নির্ভরশীল। অনেকেই আছেন যারা হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করেই তাদের সারা বছর সংসার চলে। আবার অনেকেই আছে প্রতি বছর হাঁড়িভাঙ্গা আমের ব্যবসা করে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করে থাকে। আবার যাদের আম বাগান নেই তারা আমের সিজনে অন্যের আম বাগানের মধ্যে কাজ করে থাকে।এতে করে তারা ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করে। আমাদের এলাকার মানুষদের জন্য টাকা ইনকাম করার একটি সুবর্ণ সুযোগ হচ্ছে আমের সিজন।
বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের আম বাগানের মধ্যে যাওয়া হচ্ছিল না। বিভিন্ন কাজের মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।আর তার সাথে প্রচন্ড পরিমানে রোদ পড়ছে।সব মিলিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে বাসার বাইরে বের হওয়া হচ্ছিল না। এখন আগের থেকে কাজের চাপ একটু বেড়ে গিয়েছে।তবে, আমার কাছে ব্যস্ত জীবন অনেক বেশি ভালো লাগে।সব সময় ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি।তাই সব সময় নিজেকে বিভিন্ন কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করি। হঠাৎ করে আমার মনে পড়ে আমাদের আম বাগানের কথা। বেশ কয়েকদিন ধরে যাওয়া হয়নি। এরপর আমি ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম। সাধারণত আমি ঘুম থেকে একটু দেরি করে উঠি। এখন ঘুম থেকে দেরি করে উঠা আমার অনেক টা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সেদিন ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে পড়লাম।মূলত বাগানের মধ্যে ঘুরতে যাওয়ার জন্য একটু তাড়াতাড়ি উঠা।
এরপর আমি আমার আম্মুর হাতের তৈরি করা কিছু নাস্তা করে নিলাম। এখন আমি বাসা থেকে বের হলাম আমাদের আম বাগানের উদ্যেশে। আমাদের বাসা থেকে আমাদের আম বাগানের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার হবে। আমাদের বাসার চারদিকে আম গাছে ভরপুর।আমি আম গাছের নিচ দিয়ে হাঁটছিলাম। সেদিন বেশ ভালোই বাতাস বয়ছিলো।রোদ ও ছিল মোটামোটি।তবে, অতিরিক্ত বাতাস এবং আম গাছের ছায়ার জন্য রোদ গায়ের মধ্যে লাগছিল না। এরকম পরিবেশের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছিলো আমার কাছে। সবুজ প্রকৃতির মাঝে হাঁটতে একটু বেশি ভালো লাগে। বেশ কিছুক্ষণ সময় হাটার পর আমি চলে আসলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত আম বাগানের মধ্যে। আম হেঁটে আসতে প্রায় আট থেকে দশ মিনিট সময় লেগেছিল।
এরপর আমি আমাদের আম বাগানের মধ্যে প্রবেশ করি। প্রবেশ করার পর আমি আমাদের একটি আম বাগানের নিচে বসে একটু রেস্ট করলাম। কেননা অনেক দূর থেকে হেঁটে আসতে কিছু টা হাঁপিয়ে গিয়েছিলাম।তবে, বেশ কিছুক্ষণ সময় গাছের নিচে বসে রেস্ট নেয়ার ফলে একটু ভালো লাগছিল।তবে, যারা যারা গ্ৰামের সবুজ শ্যামল প্রকৃতির মাঝে ঘোরাঘুরি করছেন তারা হয়তো এই বিষয়ে অবগত আছেন। এরপর আমি আমাদের আম বাগানের চারদিকে ঘোরাঘুরি করে দেখছিলাম। এবছর আমের বেশ ভালোই ফলন হয়েছে। আমি এবছর সকল কৃষকদের আমের ফলন দেখে অনেকটাই খুশি। আর এবছর হাঁড়িভাঙ্গা আম জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এজন্য প্রতিটি আম চাষী অনেক টা খুশি।
এরপর আমি একটি কাঁচা আম গাছ থেকে পেড়ে খেয়ে দেখলাম।আম টি খাওয়ার পর বুঝতে পারলাম আম পাকার আর বেশি দিন নেই। হয়তো আর এক মাস যাবে।তবে, সরকারী ভাবে জুন মাসের ২২ তারিখ থেকে গাছ থেকে হাড়িভাঙ্গা আম পেড়ে বাজারজাত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।তবে, আশা করছি জুন মাসের ২২ তারিখ এর আগেই হাঁড়িভাঙ্গা আম পাকা শুরু হয়ে যাবে। এখন হাঁড়িভাঙ্গা আম বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে বেশ ভালোই পরিচিতি লাভ করেছে। এটা আমাদের জন্য একটি বড় পাওয়া। আমি বেশ কিছুক্ষণ সময় আম বাগানের মধ্যে ঘোরাঘুরি করলাম। বেশ কিছুক্ষণ সময় আম বাগানের মধ্যে ঘোরাঘুরি করার পর আম বাগান দেখা শেষ হয়ে যায়। এরপর আমি বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করলাম। পথিমধ্যে দেখতে পারলাম অনেকেই আম বাগানের মধ্যে স্ফ্রে করছে।তবে, আমাদের আম বাগানের মধ্যে তেমন কোন রোগ বালাই নেই।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | Redmi 10C |
---|---|
Camera | 48 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগান নামটা কিন্তু খুবই সুন্দর। তবে এই নামটা আজকে প্রথম জানতে পারলাম। এই গ্রামের মানুষজন দেখছি আমের উপর নির্ভরশীল। আবার দেখছি তারা এই আমগুলো বিক্রি করেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। আসলে একটা না একটা দিক দিয়ে মানুষকে চলতে হয়। তবে আমের বাগানটা সত্যিই অনেক দারুন লেগেছে। আমের বাগানে ঘুরতে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো।
আসলেই আমাদের অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ এখন হাড়িভাঙ্গা আমের উপর নির্ভর করেই তাদের জীবন এবং সংসার পরিচালনা করে থাকে। আর আমাদের অঞ্চলের মানুষদের আর্থিক পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হচ্ছে এই হাড়িভাঙ্গা আম। হাড়িভাঙ্গা আম এত কদর পাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে এটির স্বাদ মান সব দিক থেকেই উৎকৃষ্ট মানের তাইতো জিআই পন্যের স্বীকৃত পেয়েছে এবার। হাড়িভাঙ্গা আম নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের এলাকায় দেখছি বেশ আমের চাষ হয়। ৯০ ভাগ মানুষ যেখানে হাড়িভাঙ্গা আম চাষ করে তার মানে অনেক বেশি আম উৎপাদন হয়। আমের বাগানে ঘুরতে গেলে বেশ ভালোই লাগে মাঝেমধ্যে আম পেড়ে খাওয়া হয় এটা আলাদা একটি মজা। আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
আম বাগান দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনার পোস্টে একদিন আম বাগান দেখেছিলাম। কিন্তু আজকে আম সহ আম বাগানের দৃশ্য শেয়ার করলেন। ঠিক বলছেন এই সিজনে হাড়িভাঙ্গা আমের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে। আমরা অনলাইন থেকে হাড়িভাঙ্গা আম অর্ডার করে থাকি খেতে খুব ভালো লাগে। এই সিজনে তাহলে বেশ ভালো ইনকাম হবে আপনাদের। আপনার সুন্দর মুহূর্তটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
হঠাৎ করেই আপনাদের আম বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো ভাই। তবে এটা জেনে বেশ অবাক হলাম যে, আপনাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষই আমের উপর নির্ভরশীল। আমি হাড়িভাঙ্গা আম খাইতে ভীষণ পছন্দ করি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
একদিন দেখলাম ভুট্টা খেত থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করছেন। আজকে দেখলাম নিজেদের আম বাগানে ঘুরছেন। আপনার লাইফটা তো দারুন। প্রকৃতির সাথে ভালোই মিশেন। আপনারা কি আম দেশের কোথাও পার্সেল করে বিক্রয় করেন না কি। যদি বিক্রয় করেন তাহলে জানাবেন। আমি কিছু আম আনতে চাই। ধন্যবাদ।