ভ্রমণ পোস্ট : আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান ভ্রমণ

in আমার বাংলা ব্লগ29 days ago

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
রবিবার, ৫ ই মে ২০২৪ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


Hi Gorib_20240412_151652_📸iPhone click by Expert Mistry-1.jpg

আমি বেশ কয়েকদিন আগে আপনাদের সাথে শ্যামপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন ভ্রমণ কাহিনী কাহিনী শেয়ার করেছিলাম।ট্রেন ভ্রমণ করার মূল কারণ হলো আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান দেখা। আমরা এই জায়গার মধ্যে আসার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে প্লান পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম, কিন্তু তখন আসার সময় সুযোগ হয়ে উঠেনি। কেননা আমরা সকল বন্ধুরা এখন বিভিন্ন জায়গায় থাকি। এখন আর আগের মতো বাড়িতে থাকা হয় না।তাই শুধু মাত্র ঈদের সময় করে সকলের সাথে দেখা হয়, তাছাড়া আর দেখা হওয়ার সুযোগ নেই।গত রমজান মাসের ঈদ উপলক্ষে আমাদের সকল বন্ধু বান্ধব বাসায় এসেছিল। ঈদের আগের দিন তাদের সকলের সাথেই দেখা সাক্ষাৎ হয়ে যায়। এরপর আমাদের বেশ কিছু ঘোরাঘুরি প্লান করে। তখন আমরা সকলে মিলে পাটগ্রাম উপজেলার সকল দর্শনীয় স্থান ভ্রমন করার পরিকল্পনা করে ফেলি।

Screenshot_2024-05-05-08-10-13-993_com.google.android.apps.photos-edit.jpg

আমাদের পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে পৌঁছাতে প্রায় দুপুর বারোটা বেজে যায়। এরপর আমরা একটু ফ্রেশ হয়ে পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন বাজারের একটি হোটেলের মধ্যে খাওয়া দাওয়া করলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাস্তায় মধ্যে বেরিয়ে পড়লাম আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান যাওয়ার জন্য। বেশ কিছু সময়ের মধ্যে একটি অটোরিকশা চলে আসে। আমরা অটোরিকশা ওয়ালা মামা কে সব কিছু বলিয়ে ঠিক করে নিলাম। সেদিন টি ছিল শুক্রবার। হঠাৎ মাঝপথে যেতেই জুমার নামাজের সময় হয়ে যায়। এরপর আমরা একটি মসজিদে ঢুকে জুমার নামাজ আদায় করে আবার অটোরিকশার মধ্যে উঠে পড়লাম। অটোরিকশা চালক আবার যেত শুরু করলো আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগানের উদ্যেশে।

1712915987219.jpg

Screenshot_2024-05-05-07-53-56-660_com.google.android.apps.photos-edit.jpg

বেশ কিছু সময়ের মধ্যে আমরা আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্টের মধ্যে পৌঁছে গেলাম। অটোরিকশা ওয়ালা মামা আমাদের কে সব কিছু দেখিয়া দিচ্ছিলেন। আপনারা আমার ফটোগ্রাফীর পিছনে যে বাড়িটি দেখতে পারছেন এটি মূলত সর্বশেষ বাড়ি। এই বাড়ির অল্প একটু পরেই আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সিমানা।আর এই বাড়ি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কে দেখা যায়। আসলে এই বাড়ির লোকজনদের কে খুবই সাবধানের সাথে চলাফেরা করতে হয়। আসলে কখন কি হয় তা কখনো বলা সম্ভব নয়। আমরা সর্বশেষ বাড়ির লোকজনদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললাম, তাদের সাথে কথা বলে ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আসলে যে কোন সিজনের সময় এই বাড়ির লোকজনদের কে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, যেমন - ঈদ, পহেলা বৈশাখ, দূর্গা পূজা, আরো বিভিন্ন উৎসবের সময় এই বাড়ির মধ্যে সব সময় লোক লেগেই থাকে।আর তাদের কে সব সময় ইন্টারভিউ দিতে হয়। এই বাড়ির একদম সাথেই চা বাগান টি অবস্থিত।

Screenshot_2024-05-05-08-44-32-053_com.google.android.apps.photos-edit.jpg

Screenshot_2024-05-05-08-44-15-865_com.google.android.apps.photos-edit.jpg

এরপর অটোরিকশা ওয়ালা মামা আমাদের কে চা বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়।চা বাগানের মধ্যে গিয়ে দেখতে পারলাম অনেক মানুষের ভীড়। আসলে আমরা যেহুতু ঈদের সময় গিয়েছিলাম তাই একটু বেশি ভিড় ছিল। অনেকেই চা বাগানের মধ্যে বিভিন্ন রকম ভাবে ছবি তুলেছিলেন। আমি এর আগে কোনদিন চা বাগান দেখিনি, এটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম চা বাগান দেখা।চা বাগানের ভেতর প্রবেশ করে ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালোই লাগছিলো আমার কাছে।আর জায়গা টি ও অনেক বেশি সুন্দর। চারদিকে সবুজ শ্যামল প্রকৃতিতে ভরা। আমি চা বাগান থেকে বারবার আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ এর দিকে লক্ষ্য করছিলাম।আর আমার মনের মধ্যে একটু একটু ভয় কাজ করছিল। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি শেষ করে চা বাগান থেকে বের হয়ে আসলাম।

RIYAN_20240412_152955_🌈Sky Blue by Expert Mistry-3.jpg

RIYAN_20240412_152953_🌈Sky Blue by Expert Mistry-3.jpg

এখন আমরা চা থেকে বের হয়ে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুদূর পথ হাটার পর আমরা একটি ঝাল মুড়ির দোকান দেখতে পারলাম। আমরা সকলে মিলে সেখানে গিয়ে বেশ কয়েক ধরনের ঝাল মুড়ি মাখা খেয়ে নিলাম।তার ঝাল মুড়ি মাখা গুলো খেয়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। আমরা বেশ কিছুক্ষণ সময় ঝাল মুড়ির দোকানে বসে ঝাল মুড়ি ওয়ালার সাথে গল্প করলাম।ঝাল মুড়ি ওয়ালা আমাদের কে এই আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্টের সব কিছু তথ্য জানিয়ে দেয়। আমি ঝাল মুড়ি ওয়ালার মুখে তথ্য গুলো শুনতে পেরে বেশ লাগছিল। এরপর আমরা বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর সেখান থেকে চলে আসি।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

DeviceRedmi 10C
Camera48 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6HzJaoPE9n3kyXHpVFScAadwSCVJpY84M3wWWzLLzELtQK2rSJtUL9pTj98dwsm1MP47up86HvqkxNUfovt7kXVd7M4Hk9jft.jpeg

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1699613681956.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে রংপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।
Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 29 days ago 

আসলে ভাইয়া দীর্ঘদিনের শখ রয়েছে সিলেট অথবা মৌলভীবাজারে যে কোন স্থানের চা বাগান ঘুরতে যাওয়ার। আপনি আমাদের মাঝে আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান ভ্রমণ করে দেখিয়েছেন এবং সেই জায়গার সুন্দর ফটো ধারণ করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আর এই দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার।

 28 days ago 

খুবই তাড়াতাড়ি আপনার শখটি পূরণ হয়ে যায়, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। আমরা আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগানের মধ্যে বেশ ভালো সময় উপভোগ করেছি।

 29 days ago 

খুবই চমৎকারভাবে আপনি আমাদের মাঝে চা বাগান ভ্রমণের অনুভূতিটা তুলে ধরেছেন এবং পুরো ব্যাপারটা দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। চা বাগান ভ্রমণ করা আমার খুব ইচ্ছে কিন্তু এখন পর্যন্ত চা বাগান ভ্রমণ করতে যাইনি। বোঝাই যাচ্ছে সকলে মিলে চা বাগানের ভেতরে দারুন একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন, অনেকটা সময় অতিবাহিত করার পরে ঝাল মুড়ির দোকান থেকে সকলে মিলে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাদের কাটানো মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 28 days ago 

আমার চা বাগান ভ্রমণের উপস্থাপনা টি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আপনার ইচ্ছা খুবই তাড়াতাড়ি পূরণ হবে ।

 29 days ago 

চা বাগান আমার নিজেরও খুবই প্রিয়। এর আগে আমি অনেকবার চা বাগান দেখতে গিয়েছিলাম। আসলে আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগানের দৃশ্যটি অনেক বেশি সুন্দর। আমাকে অনেক বেশি মুগ্ধ করেছে। আসলে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সীমান্তের আশেপাশে বাড়ি গুলো অনেক বেশি ভয় থাকতে হয়। চলাফেরা অনেক বেশি ভয় করতে হয়। এ বিষয়টা আমার নিজের কাছেও অনেক বেশি খারাপ লাগে। আসলে বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব আসলে অনেক পরিকল্পনাই করা হয়। এবং এটি বাস্তবায়ন হলে অনেক বেশি ভালো লাগে।

 28 days ago 

আপনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার চা বাগানের মধ্যে ঘুরতে গিয়েছিলেন, জেনে ভালো লাগলো। আপনার মন্তব্য টি পড়ে আমার কাছে কাছে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

 29 days ago 

আসলে সময়ের সাথে সাথে ছোটবেলাকার বন্ধুগুলো এমন হয়ে যায় অর্থাৎ একেক জন এক এক জায়গায় চলে যাই। যার কারণে দেখা যায় সেই ছোটবেলার বন্ধুদের সাথেও বছরে মাত্র কয়েক দিনই দেখা হয়। যাইহোক আপনি ঈদের সময় বন্ধুদের সাথে করে আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আর আপনি সেদিনই প্রথম বার চা বাগান দেখেছিলেন জানতে পারলাম আপনার লেখার মাধ্যমে। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার ঘোরাঘুরি নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 28 days ago 

সময়ের সাথে সব কিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। তবে ছোট বেলার বন্ধু গুলো কখনো পরিবর্তন হয় না। ছোট বেলার বন্ধু গুলোর সাথে চা বাগানের মধ্যে খুবই সুন্দর একটি সময় উপভোগ করেছেন।

 29 days ago 

চা বাগান ভ্রমণ করে চমৎকার একটি ভ্রমণের পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই ভ্রমণ পোষ্টের লেখাগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। একই সাথে চা বাগানের সবুজ প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অসাধারণ সুন্দর লাগছে। আর এরকম সুন্দর পরিবেশ ভ্রমণ করার মধ্য দিয়ে মনের সজীবতা দারুন ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং মন বেশ প্রফুল্ল থাকে। দারুন একটি ভ্রমণের পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 29 days ago 

আঙ্গারপোতা দহগ্রাম জিরোপয়েন্ট চা বাগান এই জায়গার নাম আগে কখনো শুনিনি। তবে এটি দেখছি আপনাদের প্রতিবেশী দেশের সীমানার খুবই কাছে। জায়গাটি আসলেই অনেক সুন্দর। চা বাগানে আমিও কখনো যায়নি। আপনি নিশ্চয়ই এই প্রথমবার চা বাগানে গিয়ে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।

 28 days ago 

জী এই চা বাগান টি একদম জিরোপয়েন্টে ।এই চা বাগান থেকেই আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কে দেখা যায়।

 28 days ago 

অসাধারণভাবে আমাদের সেদিনের ভ্রমণ কাহিনীটা তুলে ধরেছো ভাই। ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি এটাই তার বাস্তব প্রমাণ।

 28 days ago 

জী ভাইয়া চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 68504.89
ETH 3816.55
USDT 1.00
SBD 3.51