মেঘলা আবহাওয়ায় পদ্মার পাড়ে কাটানো কিছুটা সময়।।
পরশুদিন সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা ছিলো। সাথে ছিল জোর বাতাস। এই ধরনের আবহাওয়া আমার খুবই পছন্দের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এই ধরনের আবহাওয়া পেলে ট্রলারে করে আমি চরে ঘুরতে যাই। তবে পরশুদিন সকালে আমার ঘুম থেকে উঠতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাই আর ট্রলারে ঘুরতে যেতে পারিনি। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পরই মনে হচ্ছিল। এই ধরনের আবহাওয়ায় নদীর পাড়ে সময় কাটাতে সবচাইতে বেশি মজা লাগে। তাই সকাল থেকেই বারবার মনে হচ্ছিল নদীর পাড়ে যাই। কিন্তু দোটানায় পড়ার কারণে যাব কিনা সেটা স্থির করতে পারছিলাম না।
এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় দুপুর গড়িয়ে গেলো। হঠাৎ করে এক বড় ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম চলেন নদীর পাড় থেকে ঘুরে আসি। এই আবহাওয়াটা নদীর পাড়ে কাটানোর জন্য সবচাইতে ভালো আবহাওয়া। প্রস্তাব দেয়ার সাথেই তিনি রাজি হয়ে গেলেন। আমি তাকে বললাম আধাঘন্টা পর নিউমার্কেটে আসেন। সেখান থেকে আমরা দুজন একসাথে রওনা দেবো। কারণ সেখানে আমার কিছু কাজ ছিল। যাই হোক যথাসময়ে দুজন একত্রিত হলাম। তারপর সোজা পদ্মার পাড়ে উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পদ্মার পাড়ে পৌঁছেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
আকাশটা বেশ মেঘলা সাথে প্রবল হাওয়া বইছে। যার ফলে নদীর পাড়ে এক অদ্ভুত সুন্দর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা খুঁজে খুঁজে নদীর যেদিকটাতে লোকজন কম থাকে সেদিকে দেখতে পেলাম বেশ কয়েকটি নৌকা ঘাটে ভেড়ানো আছে। সেগুলো মাছ ধরার ছোট নৌকা। আমরা তেমন একটি নৌকায় গিয়ে উঠে বসলাম। অনেক জোরে বাতাস হওয়ার কারণে নদীর পাড়ে হালকা ঢেউ অনুভব করতে পারছিলাম। ঢেউয়ের দোলায় নৌকা গুলি দুলছিল। নৌকায় বসে দোল খেতে খেতে নদীর পাড়ের ঠান্ডা হাওয়ায় প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছিলো। এত ভালো লাগছিল যে দুজন মিলে ঠিক করলাম যতক্ষণ পারি এখানে বসে থাকব। এখান থেকে আর আজকে সহজে নড়ছি না।
সেই নৌকার উপর বসে আমরা দুজনে বিভিন্ন রকমের গল্প করতে থাকলাম। এর ভেতরে সেখানে এক নৌকার মাঝি এসে উপস্থিত হলো। তারপর আমরা তার সাথে আড্ডা জুড়ে দিলাম। তার কাছ থেকে নদীর ব্যাপারে নানা রকম তথ্য জানতে পারলাম। নদীতে এতদিন খুব একটা পানি না হলেও এখন দেখলাম পানির পরিমাণ বেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও আমাদের এদিকটাতে এখনো বৃষ্টির তেমন দেখা নেই। মাঝে মাঝে হালকা এক পশলা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষাকালের যে ভারী বৃষ্টিপাত সেটা এখনো শুরু হয়নি। এ বছর কি বৃষ্টি হবে কিনা সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি। কারণ বৃষ্টি না হলে নদী নালাখাল বিলে যথেষ্ট পানি হবে না। যার ফলে কৃষি কাজে সেচ দিতে সমস্যায় পড়তে হবে কৃষকদেরকে। সেটার ফল পুরো দেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে। সেচ কাজের সমস্যা হলে ফসল ভালো হবে না। যার ফলে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরো বেড়ে যাবে। এমন আরো নানা জিনিস সেখানে বসে আলাপ-আলোচনা করছিলাম।
এর ভেতর হঠাৎ করে হালকা এক পশলা বৃষ্টি আসলো। যদিও মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। বাতাসের সাথে মেঘ সরে যাওয়ার কারণে বৃষ্টিও চলে গেলো। বৃষ্টি দেখে আমরা নৌকা থেকে নামার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি চলে যাওয়ায় নৌকায় বসে আবার আড্ডা দিতে লাগলাম। একবার ঠিক করেছিলাম আজকে অনেক রাত পর্যন্ত এখানে বসে আড্ডা দেবো। কিন্তু আমি রোজা থাকার কারণে সন্ধ্যার আগে বাসায় ফেরার একটা তাড়া ছিল। যার ফলে সন্ধ্যা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে আমরা দুজন বাড়ীর দিকে রওনা দিলাম। এই ধরনের আবহাওয়া আপনারা যখনই পাবেন চেষ্টা করবেন নদীর পাড়ে গিয়ে সময় কাটাতে। দেখবেন অসম্ভব ভালো লাগবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার পাড় |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
নদীতে ট্রলার দিয়ে ঘুরতে এমনই অনেক আনন্দ লাগে মনটা তখন খুব ফুরফুরে থাকে মনে হয় এটাই জান্নাত। মেঘলা দিনে দেখা গেল আকাশটাও মেঘে ভরপুর।
পদ্মপাড়ে ঘুরতে গিয়ে কতগুলো সুন্দর ফটোগ্রাফ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যেগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর ফটোগ্রাফি ও ঘুর াঘুরি আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য। আপনার প্রতি অনেক শুভকামনা রইল।
মেঘলা আকাশ দেখতে সবসময় অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি দারুন কিছু মেঘলা আকাশের ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই। খুবই ভালো লাগছে আর এটা যেহেতু নদীর ধারের মেঘলা আকাশ সেইজন্য এটার সৌন্দর্য আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই মুহূর্তগুলো এবং ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া,মেঘলা আকাশ এবং হালকা বাতাসের মধ্যে বসে নদীর পারে সময় কাটাতে খুবই ভালো লাগে।ভাইয়া, এমন আবহাওয়ার মধ্যে নদীর পাড়ে খুবই ভালো লাগে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই মন জুড়িয়ে গিয়েছে।ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মেঘলা আকাশের ফটোগ্রাফি আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার মোবাইলের ক্যামেরা বন্দি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফিগুলো দেখতে দুর্দান্ত লাগছে। এমনিতেই পদ্মর পাড় দেখতে অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আকাশ মেঘলা , আমার সবচাইতে ভাল লাগে বৃষ্টি আসার আগে । ভাইয়া আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভাল লাগলো ।এমন নৌকা দেখলে ,ভীষণ চড়তে ইচ্ছে হয় আমার । পদ্মার পাড়ে মেঘলা আবহাওয়ায় আপনি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আর আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন । অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে মেঘলা দিনে পদ্মার পাড়ের সৌন্দর্য দারুন ভাবে উপভোগ করেছেন। পদ্মা নদী এবং নৌকা গুলোর ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণের দারুন অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আসলে পদ্মার পরে গেলে আমারও অনেক ভালো লাগে আপনি যে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন এতে কোন সন্দেহ নেই। এখন তো পদ্মা নদী পানিতে ভরপুর মাঝে মাঝেই অনেক উত্তাল হয়ে ওঠে। এই সময়টা পদ্মার রূপ দেখলে কেমন যেন ভয়ে বুকটা কেঁপে ওঠে। পদ্মাকে নিয়ে এখন অনেকটাই ভয়ে রয়েছি যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে হয়তো দু চার বছরের মধ্যে আমাদের বাড়িটাও বিলীন হয়ে যেতে পারে।।
পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেঘলা আবহাওয়া পদ্মার পাড়ে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সত্যি বলতে ভাইয়া আপনার এই মুহূর্তটা দেখে মনে হচ্ছে এখনই বাসায় চলে যাই। অনেকদিন হলো নদীর পারে সময় অতিবাহিত করা হয় না। আপনার সুন্দর এই মুহূর্তে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া নদীর ধারে নৌকায় বসে সময় কাটানোর মজাই আলাদা ৷ নদীর ও পাড়ে মেঘলা আকাশ দেখতে আমার কাছে কিন্তু অসাধারণ লাগে ৷ আপনি দারুণ কিছু মেঘলা আকাশের ফটোগ্রাফি করেছেন ৷ এবং নদীর ধারে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ৷ ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মন ভাঙনের দিনগুলোতে প্রত্যেকটা মানুষ ঠিক এরকম নৌকো চায়, আর চায় ঠিক এরকম মেঘলা আকাশ। একটা নদী। আর নিরুদ্দেশ যাত্রা। অসম্ভব সুন্দর মুহূর্ত । বোঝাই যাচ্ছে এখানে নিঃশ্বাস বাঁচে প্রাণ খুলে।
মনে হচ্ছে আপনার অন্তরের দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাচ্ছি। যেটাই ঘটুক জীবনে সবকিছু ভুলে আশা করি ভালো থাকবেন।