প্রকৃতির টানে মুরং ঝর্নায় ।। 10% Beneficiaries for @shy-fox
মুরং ঝর্না
আস্সালামু আলাইকুম, আশা করি ভাল আছেন, গত কাল ২৩/০৮/২০২১ তারিখে ঘুরে বান্দরবান সদরের একটু দূরে মুরং ঝর্নায়। আমরা ৪ জন কখনো আগে থেকে প্লান করে রাখি না যে কোথাও যাবো। আমাদের প্লান গুলু হচ্ছে এমন হুটহাট প্লান, সবাই মিলে ২২/০৮/২০২১ তারিখে আড্ডা দিচ্ছি এর মধ্যে রায়হান বলে উঠলো ভাই চলেন না কাল মুরং ঝর্নাতে যায়। যেই কথা সেই কাজ রাত ১১.৩০ এ সিদ্ধান্ত নিলাম সকাল সকাল বাহির হবো। আমরা ৪ জন।সাথে একজন গাইড। গাইড বললেও ভুল হবে, হুট হাট দেখা হওয়া এমন বন্ধু। স্থানীয় বন্ধু।
বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ৫০ ফুট উঁচু ঝর্নার নাম মুরং ঝর্না।এ ঝর্নায় যাওয়া পথে চারপাশে চোখ মেলে তাকালে সারি সারি মেঘের পাহাড়ে আছড়ে পড়া ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্য বিমোহিত করবে আপনাকে।
কখন যাবেন :
বর্ষার শেষের দিকে যাওয়াটাই উত্তম। তবে বর্ষায় অতি বৃষ্টি হলে পাহাড় ধ্বসের আশংকা থাকে।
কীভাবে যাবেন :
বান্দরবান > মাঝের পাড়া > হ্যাডমেন পাড়ার মুরুং পাড়া পর্যন্ত গাড়ি যাবে, এরপর একটা ঝিরি দেখা যাবে, ঝিরির বাম দিক দিয়ে যাবেন,, ওখান থেকে পায়ে হাটা পথ প্রায় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট
ট্যুরে যাওয়ার সময় এখানের পরিচিত কাউকে নিয়ে যাবেন, না হয় ওই পাড়া থেকে ছোট একজন ছেলেকে নিবেন গাইড হিসেবে,,, গাইড না নিলেও চলবে, ওখানের স্থানীয় লোকদের থেকে জিজ্ঞাসা করলে রাস্তা দেখাই দিবে পায়ে হাটার.
পায়ে হাটার সময় ঝিরির কিছু স্থান আছে দুই দিকে চলে গেছে, তখন কনফিউজড হয়ে যায় সবাই,,, সেই হিসেবে স্থানীয় একটা ছোট ছেলেরে নিয়ে গেলেই ভালো...
[পায়ে হাটার অর্ধেক পর্যন্ত নেট পাবেন,, এরপর নেট নাই...]
যাওয়ার সময় কি কি নিয়ে যাবেন:
যেহেতু ১ থেকে ১.৩০ মিনিট পাহাড়ি রাস্তা ট্রেকিং করে যেতে হবে সেহেতু রওনা দেয়ার আগে ভারি খাবার খাবেন না।
পরিষ্কার পানীয় জল, পাউরুটি, কলা ইত্যাদি নিতে পারেন তবে আমরা যাওয়ার সময় বাজার থেকে পরটা নিয়ে যায়, কারণ আমাদের প্লান ছিল ওখানে গিয়ে রান্না করবো। তাই বাসা থেকে পাতিল ও অন্যান্য মশলা -মুরগি সব প্রসেস করে নিয়ে যায়।
আমরা ঝর্নায় গিয়ে যা করলাম :
গিয়ে মাত্র এমন সৌন্দর্য দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি, তারপর সবাই ২০ মিনিট রেস্ট নিয়ে রান্না র জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম, ২ জন গেল লাকরি খুজতে আর ২ জন চুলা প্রস্তুত করতে, প্রায় ১৫ মিনিট পর আমাদের লাকড়ি ও চুলা রেডি হলো। ঠিক সে সময়ে বৃষ্টি শুরু, আবার পাহাড়ে উঠে কলা পাতা সংগ্রহ করলাম, সব ঢেকে রাখলাম, পাক্কা ২৫ মিনিট পর বৃষ্টি থামলো, লাইটার দিয়ে অনেক কষ্টে আগুন ধরালাম। পাথর দিয়ে চুলা বানালাম, এবার পাতিল চুলাই দিলাম, পাতিল গরম হতে হতে আমরা পেয়াজ, রসুন আদা, মশলা সব রেডি করে ফেললাম, মাংস বাসা থেকে যেহেতু প্রসেস করেই আনসি তাই কষ্ট কম হলো। রান্না চলছে সাথে নিয়ে যাওয়া গিটারের টুন টুন আওয়াজ, পাশ থেকে জুম জুম ঝর্নার শব্দ প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছিল।
কিছুক্ষণ পর রান্না ও হয়ে গেল। রান্না শেষ করতে করতে প্রায় ১২.৩০ বেজে গিয়ে ছিল।
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর ভর করে রান্না করেছি, খাবার খাওৃযার জন্য প্রাকৃতিক পাথর দিয়েই ডাইনিং টেবিল বানিয়ে ফেললাম। ডাইনিং রেডি করে খাবার ও রেডি করে, সবাই চার পাশে বসে খাবার শুরু করলাম।
খাবার শেষে চললো ৩০ মিনিটের গানের জলসা।
তার পর যে যার মতো ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। হঠাৎ করে জুম জুম বৃষ্টি শুরু হলো। সবাই মিলে কলা পাতা দিয়ে যাত্রি ছাউনি বানিয়ে নিচে বসে পড়লাম। তারপর সবাই ব্যাগ গুছিয়ে আবার হাটা শুরু করলাম। সবাই প্রচুর ক্লান্ত হয়ে পড়ে বসে পড়ি।প্রায় ২ ঘন্টা পর বাসা পৌছালাম।
সতর্কতা:
১.ব্যাগে লবণ রাখতে পারেন, কারণ পথে প্রচুর পরিমাণে জোক পাবেন।
২.ঝর্নার পথ প্রচুর পিচ্ছিল সাবধানে সামনের দিকে পা বাড়াবেন।
৩.ঝর্নায় যাওয়ার পথে অনেক চাষ কৃত জমি পাবেন কেউ কোন ফল ছিড়বেন না।
৪. আদীবাসীকে কেন্দ্র করে কোন বাজে কথা বলবেন না।
৫.যাওয়ার সময় লাঠি নিতে ভুলবেন না কারণ এই লাঠি আপনাকে ট্রেকিং এ সহয়তা করবে।
জোঁকের নাম শুনলেই পালাই, অথচ আমি এদিকে বায়লজির ছাত্র। 😁
ভাই কোনো পোস্ট করলে ১০% @shy-fox কে পেআউট দিতে ভুলবেন না 🙏🏾
https://steemit.com/hive-129948/@hafizullah/or-or-how-to-add-beneficiary-or-or-amarbanglablog-tutorial
হে ভাইয়া, সেট অবশ্যই করি,সামনেও করবো।
জোক হচ্ছে লবণ কে ভয় পায়। তাই লবণ রাখা জরুরি
সব মিলিয়ে প্রকৃতির সাথে একটি সুন্দর দিন কাটিয়েছেন, বিশেষ করে ঝরনা ছবিগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আপনাদের রান্নাগুলো সত্যি অসাধারণ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, বাড়ির পাশে অসংখ্য ঝরনা আছে, হুট হাট চলে যায়।