অনুগল্প: প্রতীক্ষার অবসান||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। এই কমিউনিটির যারা পুরনো মেম্বার আছেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি শুরুর দিক থেকেই "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটি সাথে যুক্ত ছিলাম। তবে ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে অনেকদিন এই কমিউনিটি থেকে দূরে ছিলাম। আর নিজের ভালোলাগার ব্লগিং থেকেও দূরে ছিলাম। যখন আমি এই প্লাটফর্মে কাজ শুরু করি তখন থেকে মাঝে মাঝে গল্প লিখতাম। গল্প লিখতে ভালো লাগে। গল্প পড়তেও ভালো লাগে। একটু একটু গল্প লেখার চেষ্টা করি। টুকটাক ছোট ছোট গল্প লিখি। এর আগেও আমি গল্প লিখেছি। অনেকদিন পর যেহেতু কাজ শুরু করেছি তাই কিছুটা এলোমেলো লাগছে। আর অনেকদিন পর গল্প লিখার চেষ্টা করব। জানিনা সফল হব কিনা। আপনাদের ভালো মন্তব্য পড়লে বুঝতে পারবো আগের মতো গল্প লিখতে পারি কিনা। তবে চেষ্টা করবো মাঝে মাঝে গল্প লিখার। তো বন্ধুরা এবার চলুন আমার লেখা একটি গল্প পড়ে নেওয়া যাক।
প্রতীক্ষার অবসান:
Source
অনেকে বলে কারো জন্য প্রতীক্ষা করা নাকি কঠিন। প্রতীক্ষার প্রহর নাকি অনেক কষ্টের। আমার কাছেও তেমনটা মনে হয়। সাগর ভালোবাসতো নদীকে। আর নদী সাগরকে ভালোবেসে তার মাঝে হারিয়ে যেতে চেয়েছে। সব ভালোবাসায় যেমন বাঁধা আসে তেমনি সাগর আর নদীর ভালোবাসায় বাঁধা এসেছে। সাগরের পরিবার যেমন নদীকে পছন্দ করত না তেমনি নদীর পরিবারও সাগরকে মেনে নিতে পারেনি। তবে সাগর আর নদী কিন্তু তাদের ভালোবাসায় অবহেলা করেনি। চুপি চুপি কথা বলা, চুপি চুপি দেখা করা এগুলো যেন চলছিল সেই আগের মতই। দুজন দুজনকে ভালোবেসে ভালো ছিল। ভালো সময় কাটিয়েছিল।
একদিন নদীর বান্ধবী সাগরকে জানালো নদীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়েছে তার পরিবার। নদী কোন ভাবে সাগরের সাথে কথা বলতে পারছে না। তাই সে সাগরের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে। সাগর চিঠি হাতে নিয়ে যেন এক ভিন্ন অনুভূতি অনুভব করেছে। তার ভালোবাসার নদী তাকে চিঠি পাঠিয়েছে। সাগর যখন চিঠি পড়ার জন্য ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় তখন চেষ্টা করছিল নিঃশব্দে চিঠি পড়ার। সাগর জানতে পারে নদীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। আর তাদের ভালোবাসা শেষ হতে চলেছে। নদী সাগরকে ছাড়া বাঁচবে না। তাই নদীর সাগরকে অনুরোধ করেছে সে যেন কিছু করে।
কিন্তু সাগর কি করবে বুঝতে পারছিল না। নদীর সাথে কথা বলার কোন উপায় ছিল না। এবার সাগর নদীর এক বান্ধবীর কাছে খবর পাঠায় সে যেন সাগরের সাথে যোগাযোগ করে। নদী সাগরকে আবারো চিঠি পাঠায় এবং বলে সামনের শুক্রবার তার বিয়ে। আর নদী সাগরকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে চায় না। এবার সাগর চিঠি লিখে নদীকে পাঠায়। সাগর জানায় শুক্রবার ভোর বেলায় তারা এই গ্রাম থেকে পালিয়ে যাবে। দেখতে দেখতে কেটে যায় দুদিন। সময় ঘনিয়ে আসে। সাগর মনে মনে ভাবে কখন ভোরের আলো ফুটবে এবং প্রিয়তমাকে নিয়ে অচিন উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাবে। ভোরের আলো ফুটার আগেই সাগর স্টেশনে চলে যায়। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে। ধীরে ধীরে অনেকটা আলো ফুটে ওঠে। কিন্তু নদী সেখানে আসে না। সাগর প্রতীক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। প্রিয় মানুষটির প্রতীক্ষায় তার সময় যেন আর কাটছিল না।
অন্যদিকে গ্রামের কোন খবর সাগর জানতো না। ক্লান্ত শরীরে সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরে যায় তখন জানতে পারে নদী গলায় দড়ি দিয়েছে। এই কথা শুনে সাগর কান্নায় ভেঙে পড়ে। গলায় দড়ি দেওয়ার আগে নদী একটি চিঠি লিখে। আর সেই চিঠি নদীর বান্ধবীর মাধ্যমে সাগর পেয়ে যায়। নদী সাগরের সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ির বাহিরে বের হওয়ার সময় বাবার সামনে গিয়ে পড়ে। বাবার অসহায় মুখের দিকে তাকিয়ে নদীয় আর এগোতে পারেনি। একদিকে ভালোবাসার মানুষ অন্যদিকে জন্মদাতা পিতা দুজনের কথা ভাবতে ভাবতে নদী যেন ভেতরে ভেতরে ভেঙ্গে চুরে যায়। ঘরে ফিরে গিয়ে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেনি। নিজের জীবন দিয়েছে। সব শেষে নদী সাগরের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আর বলেছে পরপারে তোমার জন্য প্রতীক্ষায় থাকবো প্রিয়। সাগর নিজের প্রতীক্ষার প্রহরের অবসান ঘটাতে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। আর দুজনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বেশ দুঃখজনক তারা অবশেষে দুজনেই প্রাণ দিয়েছিল। সত্যিকারের ভালোবাসা হয়তো এমনই হয়। তবে তাদের মোটেই উচিত হয়নি আত্মহত্যা করা। তার পরিবারকে আরও ভালোভাবে বোঝাতে পারতো। যাইহোক কি আর করার ভালবাসলে এসব কিছু মাথায় থাকে না। অনেক সুন্দর একটি অনু গল্প লিখেছেন ভাইয়া। বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ।
অনেকদিন পর গল্প লিখেছি আপু। আপনার মন্তব্য পড়ে আমারও বেশ ভালো লাগলো আর উৎসাহ পেলাম।