কেমন ছিল আমার শৈশবের স্মৃতিময় সকাল
আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল আমার বাংলা ব্লগ। আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলে বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আমরা যেন সর্বদা সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে আবারও আমার শৈশবের স্মৃতি নিয়ে একটি পোস্ট লেখার জন্য উপস্থিত হয়েছি । আমি আজকে কেমন ছিল আমার শৈশবে স্মৃতিময় সকাল
? চমৎকার এই টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে একটি ব্লগ শেয়ার করতে চাই। আমি আশাবাদী আজকের এই ব্লগ আমার শৈশবকে আরো বেশি মধুময় করে তুলবে এবং স্মৃতিগুলোকে জাগ্রত করবে। সকলেই উপভোগ করতে থাকুন আপনারা সকলে আমন্ত্রিত।
শীতের সকালে সব থেকে আনন্দময় মুহূর্ত ছিল খেজুরের রস খাওয়া। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই আমি আমার চাচাকে সাহায্য করতাম খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার কাজে। এরপর প্রতিটি পাত্র চেক করতাম এবং দেখতাম সেখানে কি ধরনের রস রয়েছে। খেজুরের রসগুলো যদি টকটকে লাল এবং একদম স্বচ্ছ কাঁচের মতো পরিষ্কার হয় তাহলে সেই গাছের রস সংগ্রহ করতাম এবং একটি কাপড়ের মাধ্যমে তা ছেঁকে নিতাম।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে খালি পেটে খেজুরের টাটকা রস খাওয়ার যে কি আনন্দ তা বলে বোঝানো যাইতো না। বিশেষ করে মাঝে মাঝে খেজুরের রসের সাথে আমন ধানের মুড়ি দিয়ে রস খেতাম এবং মুড়ি দিয়ে রস খেতে বেশ ভালো লাগতো। একদিকে কল করে শীত অপরদিকে প্রচন্ড ঠান্ডা খেজুরের রস খেতাম এবং শরীরের জন্য কোথায় থেকে কাঁপুনি চলে আসতো। কাঁপতে কাঁপতে শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার মজা ছিল অত্যন্ত বেশি।
আমার এখনো বেশ ভালো মনে আছে, ইহা ছিল আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা। গ্রামে যখন প্রচন্ড শীত পড়তো এবং সূর্য দেখা যেত না তখন গ্রামের অনেক বৃদ্ধ মানুষ ঠান্ডায় প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়তো।
এমন সময় গ্রামের মানুষ গুলো আশেপাশে থাকা ধানের খড় ব্যবহার করে আগুন জ্বালাত। এবং আমি আমার গ্রামের বৃদ্ধদের সাথে আগুন উপভোগ করতাম। কারণ শীতকালে সব থেকে কমল বিষয় হলো শীতের সকালে আগুন উপভোগ করার আনন্দ। একটি বিশাল আগুন জ্বালিয়ে দিতাম এবং এর চারিপাশে বৃদ্ধ ছোট বড় মা বাবা সকলে মিলে যখন বসে আগুন পোহাতাম এই আনন্দ সত্যিই জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে। তবে সে আনন্দের স্মৃতিগুলো আজীবন মনে থাকবে এটা বাস্তব।।
আমি গ্রামে আমার দাদা ও তাদের সমবয়সী বৃদ্ধদের সাথে আগুন পোহাতাম। তবে এই দিনগুলো আজ শুধুই স্মৃতিময় কারণ তারা অনেকেই আজ না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে। তবে শীতের সকালে তাদের কথা বড্ড বেশি মনে পড়ছে।
শীতকালে সবথেকে আমেজ মই মুহূর্ত থাকে খেজুর গাছ নিয়ে। একদিকে সকালে মুড়ি দিয়ে খেজুরের রস খাওয়া অপরদিকে সেই রস দিয়ে বিভিন্ন রকমের পিঠা খাওয়ার উৎসব উপভোগ করা।
তাছাড়াও পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন রকমের পিঠার উৎসব, গুড় দিয়ে বিভিন্ন জলপান ও মোয়া তৈরি ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাছাড়াও শীতকালের শেষে খেজুরের গাছ থেকে খেজুর খাওয়ার আনন্দ অত্যন্ত বেশি। বন্ধুরা মিলে খেজুরের গাছ থেকে খেজুর সংগ্রহ করতাম এবং যে সকল খেজুরগুলো লাল হয়ে গিয়েছে সেগুলো লবণ পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখতাম। পরের দিন যখন খেজুরগুলো পেকে যেত তখন খেজুরের পুরো কাঁধি হাতে দুলিয়ে দুলিয়ে রাস্তা দিয়ে খেজুর খেয়ে বেড়াতাম।
বলতো শীতকাল হলো শৈশবের সবথেকে আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর মধ্যে ছিল অন্য। যেহেতু এখন শীতের শুরু এবং অলরেডি শীত পড়তে শুরু করেছে সে কারণে আমার এই বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের মাঝে ব্লক শেয়ার করলাম। আশা করছি আজকের এই ব্লগ আপনাদের বেশ ভালো লেগেছে। শৈশবকে উপভোগ করতে আপনিও চাইলে আপনার শৈশবে স্মৃতি নিয়ে আমাদের মাঝে ব্লগ শেয়ার করতে পারেন। আমরা এবং আমার বাংলা ব্লগ আপনার শৈশবের স্মৃতি সম্পর্কে জানতে অত্যন্ত আগ্রহী।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
https://x.com/steemforfuture/status/1854723548117680155?t=B9O_rnGidoe5GbIr9poO1w&s=19
আপনার শৈশবের শীতকালের সাথে আমার শৈশবের শীতকালের কিছুটা মিল রয়েছে। আসলে শীতকাল আমার কাছে একটি মজার ঋতু মনে হয়। কেননা, শীতকালের মতো অন্যান্য সময়ে এরকম মজা হয় না। খেলাধুলা, খেজুরের রস, ঘোরাঘুরি ইত্যাদি অন্যান্য ঋতুতে হয়না। সেজন্য আমার কাছে সকল ঋতুর ঋতু শীতকাল মনে হয়।