ছাইপাঁশ স্বগতোক্তি। কিছুই বলার নেই আমার (১০% লাজুক বাবুর জন্য বরাদ্দ )

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

hourglass-620397_640.webp

Image source

অনেক চেষ্টা করলাম জানেন , আজকে আর কিছুই লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না, বরং বলা ভালো লেখা বেরোচ্ছে না। যারা বিখ্যাত লেখক হন তাদের নাকি জীবনে একটা সমস্যা থাকে। টেকনিক্যালি ওটাকে রাইটার্স ব্লক বলে। স্বয়ং রবিঠাকুরের ও হয়েছিল কয়েকবার। কিন্তু সেটা বিখ্যাত মানুষ জন যারা তাদের হয়। আমার মত বট তলায় বসে গুলতানি পাকানো পাবলিকের রাইটার্স ব্লক হয়েছে শুনলে ঘোড়াও খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসবে । অদ্ভুত এক পরিস্থিতি।
আসলে বেশ কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম একটা লম্বা সিরিজ লিখব। লম্বা মানে পুরো এক মাসের সিরিজ একটা। সেখানে আমার ব্যাপারে। আমার পরিবার, প্রেমিকা, চাকরি, স্কুল, কলেজ, বাওয়াল সব থাকবে। অনেকটা নিজের ব্যাপারে ব্লগ লেখার মত। বেশ কিছু ইনপুট ও মাথায় ছিল কিন্তু এখন লিখতে বসে কিছুই বেরোচ্ছে না, দুটো চারটে লাইন যদিও বা লিখলাম অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে নিজেই সব ডিলিট করে দিয়েছি। না আছে কোয়ালিটি না আছে তার ভাষা। এভাবে লেখা যায় না।
আসলে আমার মনে হয় লেখা হচ্ছে মানুষের প্রতিফলন। দৈহিক মানুষের মনের ভেতরের সবকিছু দেখে নেওয়া যায় তার লেখনীর মাধ্যমেই। বহুদিন আগে কোথাও দেখেছিলাম একটা সিরিয়াল কিলার কে জেলের ভেতর খাতা পেন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর তার মৃত্যুর পর সেগুলো পড়ে বোঝা যায় সে খুনি কিন্তু সে অসুস্থ। মানসিক বিকৃতি হয়েছিল তার টাই খুন করতো। কারণ একটা মানুষের মরে যাওয়া দেখতে দেখতেই সে বেচেঁ থাকতো। তার বেচেঁ থাকার জন্য যেটা দরকার ছিল সেটা অন্য একজনের মরে যাওয়া। বিজ্ঞানী মনস্তাত্বিক বীদ সবাই নিজেদের ভুল। একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে একজন খুনীর ও জে মন খারাপ হতে পারে সেটা বোঝার ক্ষমতা ছিল না, তারপর আত্মপক্ষ সমর্থন করে আইন তৈরি হয়। সেই সিরিয়াল কিলার টা দোষী ছিল কিনা আমি জানি না কিন্তু এটা জানি সে বেচেঁ থাকার জন্যই খুন করতো। ।এখন একজন মানুষের বেচেঁ থাকা অপরাধ নাকি একজনকে খুন করে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা অন্যায় সেই বিচার করার অধিকার আমার নেই ।

আবার নেদারল্যান্ডে একটা ঘটনা হয়েছিল, একটা খুনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দেখা যায় সেও সিরিয়াল কিলার কিন্তু ও শুধু বড় গ্রসারী গুলোতে ঢুকে মালিক কে খুন করতো। তারপর সেখান থেকে চকলেট কুকিজ আর খাবার চুরি করতো। তারপর সেগুলো রাস্তায় ক্ষুধার্ত মানুষ দের বা বিভিন্ন অর্ফ্যান হাউস, মাদার হাউসে সেগুলো বিলিয়ে দিত। নিজের জন্য কিছুই রাখতো না, আবার দিনের বেলা একটা ক্যাফেতে পেটে ভাতের চুক্তিতে টেবিল পরিষ্কারের কাজ করতো।
অদ্ভুত না ? এও কিন্তু খুনি, কিন্তু সবথেকে বড় চমক টা লাগলো যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। সোজা বলে বসলো সে সেই লোকগুলো কেই খুন করে যারা গুণগত খারাপ, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জিনিষ মজুদ করে। যাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে সেইসব গ্রসারি গুলোতেই ও খুন করে। সোজা বলে ওঠে রাষ্ট্র যন্ত্র সেই দোকানদার কে শাস্তি দেয়নি কাজেই জনগন হিসেবে এটা তার কর্তব্য। এবং নেদারল্যান্ডের আইনেও একই কথা বলা আছে। তুলকালাম হয়ে যায় দুনিয়া। সাথে আরও বলে যে বাচ্চা গুলো অনাথ তাদের দায়িত্ব সরকার নিলে তবেই সে দোষ স্বীকার করবে নতুবা নয়। তড়িঘড়ি তার জন্য আইন বদল করা হয়। শেষে তাকে জেলে ঢোকানো হয় আমৃত্যু। জেলেও সে শুধু ক্ষিদে পেলে খেত আর বাকি সময় ছবি আঁকতো অথবা শিশুদের মত কাজ কর্ম করতো। এটাকে সাইকোলজি বিশারদরা কি নাম দেবেন জানি না কিন্তু আমাদের ভাবতে বাধ্য করে।
দেখুন দিকি, কোথায় ছিলাম কোথায় এসে গেলাম। আমি নাকি রাইটার্স ব্লক এ পড়ে লেখা দিতে পারছি না এদিকে দুনিয়া জুড়ে ক্রিমিনাল মনস্তত্ত্ব আওরাচ্ছি। আসলে কয়েকদিন ধরেই একটা নেশা হয়েছে, গুজরাটে থাকা কালীন অসময়ে গুগলে এগুলো সর্চ করছিলাম। ফলস্বরূপ মাথায় গেঁথে গেছে।

আরো একটা ইন্টারেস্টিং তথ্য দেখলাম। এক বাঙালি গবেষকের একটা পেপার। আমরা মানুষ জাতি যৌন জীবন নিয়ে বড্ড বেশি ভাবি, নিজের যৌনতা, প্রতিবেশীর যৌন জীবন, অনৈতিক মিলন ইত্যাদি ইত্যাদি, শুধু তাই না, আমরা পশুপাখির যৌন জীবন নিয়েও ভাবি,লিখি বলি গবেষণা করি। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে আমরা কখনো কোন স্টেশনে বসে থাকা ভবঘুরে, পাগল বা ভিখিরির যৌন জীবন নিয়ে ভেবেছি ? ভদ্রলোক অদ্ভুত একটা প্রশ্ন করেছিলেন, ইন্টারন্যশনাল সোসাইটি অফ ম্যান কাইন্ড অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়ার সায়েন্স নামক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে রিতিমত আলোড়ন তুলে দিয়েছিল সেটি। ভদ্রলোক সহজ ভাষায় বলেছিলেন যদি যৌনতা না পেলে মানুষ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে যায় তাহলে স্টেশনে, মন্দিরে মসজিদে বা চার্চের সামনে ভিকিরি যারা থাকে তারা কেন অন্যের ওপর জোর করে ঝাঁপিয়ে পড়ে না ? কেন আমরা তাকে খাদ্য বস্ত্র বা মাথার ছাদ দান করার সময় যৌন জীবন নিয়ে ভবি না, কেন আমরা এটা বিশ্বাস করতে চাই না যে তারও স্বাভাবিক জৈবিক চাহিদা থাকতে পারে।
অনেক প্রশ্নের জন্ম দেই এই দুলাইনের বক্তব্য টুকুই। সমাজ, সোসাইটি, সোসিও ইকোনমিক্যাল প্রেজুডিস, কালচারাল ডাইভারশন ইত্যাদি অনেক কিচু। কে উত্তর দেবে এসসবের ?

কি একটা লিখব খুঁজে পাচ্ছিলাম না এবার দেখি এইটা নেমে গেছে, আসলে ব্লাইন্ড কিবোর্ড চালাচ্ছিলাম। এটা নামলো। আমি লেখক নই। হতেও চাই না , সামান্য একজন টেকি আমি। আমার মত কয়েক কোটি টেকি এই মুহূর্তে শুধু ভারতবর্ষে বসে বসে কি বোর্ডে আঙ্গুল চালাচ্ছে। পার্থক্য আমার - তাদের মধ্যে কিছুই নেই, তবে কেউ কেউ, খুব সামান্য সময়ের সাথে সাথেই হয় অতি বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত হয়েই যাবেন। এটাই সময়। সময় এভাবেই এগিয়ে চলে অনন্ত বিশ্বের পথে। আর আমরা ভেবে মরি কোথা থেকে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝলাম না।
যাকগে বাদ দিন। আজ অনেক ভেবেও কিছু লিখতে পারিনি, জানিনা এভাবে কতদিন চলবে, দেখা যাক। সময়ই উত্তর দেবে সব কিছুর।

টাটা, শুভরাত্রি ভালো থাকুন সবাই।

Sort:  
 2 years ago 

আমি নিজেও সেইসব লোকের বিরোধী যারা নিজের বেঁচে যাওয়া খাবার ডাস্টবিনে ফেলে দেয় কিন্তু খেতে না পাওয়া মানুষদের দেয় না। কিন্তু তাদের খুন করার পক্ষেও কিন্তু আমি না। আপনার লেখাগুলো কিন্তু ভালো। আপনার গুছিয়ে লিখতে কজন পারে বলুন। সুতরাং বিখ‍্যাত না হলেও আপনি কম কিছু না আপানারও রাইটার্স ব্লক হতেই পারে।

 2 years ago 

সত্যি বলছেন দাদা জীবনের প্রতি অনেক সময় অনীহা চলে আসে। আর লেখার প্রতিভা কি বলবো মহা গুণীজনেরা অনেক সময় তিক্ততা বোধ করতেন। সে ব্যাপারে আমরা অতি নগন্য। তবে আপনার লেখাগুলো ছিল দারুণ। আপনি যদি আপনার জীবনের একটা সিরিজ লেখেন খুবই ভাল লাগবে। আপনি যে সিরিয়ালের কিলার এর কথা উল্লেখ করে গিয়েছেন আসলে সে মহৎ ব্যক্তি ছিল। কারণ তার একটা সুন্দর মন ছিল, ক্ষুধার্ত অনাহারী ব্যক্তিদের খাবার বিলিয়ে দিচ্ছে। আমাদের দেশে অহরহ হচ্ছে, মানুষ খাবার ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছে, কিন্তু হতদরিদ্র রাস্তার ছেলেগুলো মেয়েগুলো খাবার পাচ্ছে না। আপনার দারুন একটা গল্প উপহার দিয়েছেন, আপনার রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 67879.12
ETH 3787.66
USDT 1.00
SBD 3.46