নৈহাটির বড় মা

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। তবে এটি কালী পুজোর পরের দিন তুলেছিলাম একটি বিশেষ স্থান থেকে। আর এইটা আমাদের ইন্ডিয়ায় অনেকেই জানে আর প্রায় প্রতিবছর যায়। এই ছবিগুলো হলো নৈহাটির থেকে তোলা। নৈহাটির 'বড় মা'। আসলে এখানে পুজোটা অনেক বিখ্যাত আর সমস্ত রাজ্যে এর সুনামও রয়েছে অনেক। এখানে আমাদের রাজ্যের বাইরের থেকেও অনেক লোকজন আসে বড়ো মায়ের দর্শনের জন্য। আসলে এখানে বড় মায়ের দর্শন পাওয়াটাও অনেক কষ্টের ব্যাপার। কারণ এখানে বীভৎস পরিমানে লোক হয় যেটা ভাবা যায় না। আসলে আমি কোনো বছরই যাইনা দেখতে, তবে গতবার ভাবলাম এইবার একটু যাই। আসলে আমাদের এখান থেকে দূরত্বটাও অনেক।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

তো নৈহাটির স্টেশনে সকালে গিয়ে নামলাম আর গিয়েই যা লোকের ভিড় দেখলাম, তাতে কোথা দিয়ে কিভাবে যাবো সেটারই পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিলের ব্যাপার হয়ে যাচ্ছিলো। যেমন ফ্লাই ওভারের উপরে ভিড় তেমন গোটা স্টেশনেই বীভৎস ভিড় ছিল ওই সকালেই। তো যাইহোক, অনেক ধাক্কা ধাক্কির পরে টিকিট কাউন্টার ক্রস করে বেরোতে পেরেছিলাম, কিন্তু বেরিয়েই কি হবে, রাস্তায় তার থেকে আরো ভিড়, আর তারপর লাইন দিয়ে যেতে হবে দেখতে গেলে। কিন্তু কিছু কিছু লোকাল ছেলেপিলে আছে তারা কি আর এইসব নিয়ম কানুন মানে! তারা যেখান থেকে পারছে সেখান থেকে ফাঁকফোঁকর পেলেই ঢুকে যাচ্ছে আর পুলিশ এর আসলে এই ভিড়ে কাকে আটকাবে আর কাকে আটকাবে না, তাদের পক্ষেও একটা অসম্ভব, যদিও তাদের মানেও না হা হা। আমিও তাদের সাথে ফাঁক পেয়ে রং সাইট দিয়ে ঢুকে গিয়েছিলাম। বড় মা ছিল একদম লাস্টে, কিন্তু তার কাছে যেতে গেলে আরো অনেকগুলো কালী মাকে দর্শন করে তারপর সেখানে পৌঁছাতে হবে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে বড় মায়ের পুজো করা হয়ে থাকে। আর কথিত আছে যে, বড় মায়ের কাছে মানদ বা মন থেকে কোনো কিছু চাইলে কাউকে খালি হাতে ফেরায় না, তার মনোকামনা পূর্ণ হয়। এখানে নৈহাটিতে একটা বিষয় উল্লেখ আছে যে, "ধর্ম যার যার, কিন্তু বড় মা সবার"। আর তাই এখানে কিন্তু সর্ব ধর্মের মানুষ এই সময়টাতে বড় মাকে দর্শন করার জন্য দূরদূরান্ত থেকে আসে। বড় মায়ের মূর্তিটাকে এইবার মাটির পরিবর্তে কষ্টিপাথর দিয়ে তৈরি করেছিল আর এই বড় মায়ের উচ্চতা ৫২ ফুটের মতো করে থাকে। তবে বড় মায়ের জায়গা পর্যন্ত যেতে গেলে অনেক যুদ্ধ করে যেতে হয় বলতে গেলে। আমি যে কিভাবে ছবি তুলেছিলাম সেটা নিজে জানি, এক মুহূর্তও দাঁড়ানোর সুযোগ নেই, এতো মানুষ যে আস্টেপিস্টে সাথে করে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর এখানে বাচ্চাদের হারানোর ভয় থাকে, কারণ এতো ভিড়ে একবার হারিয়ে গেলে খুঁজে আর পাওয়া যাবে না, যদিও এর জন্য মাইকিং এর একটা ব্যবস্থা করে রেখেছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে বেশ কিছু কালী মাকে পুজো এবং আরতি এর সময় দেখেছিলাম, পরপর এইরকম দুই পাশে বিভিন্ন মায়ের মূর্তি সাজিয়ে রেখেছে। আর প্রত্যেকটা মায়ের আলাদা আলাদা একটা করে নামও দিয়ে রেখেছিলো। তবে সবগুলোর নাম আর দেখতে পারেনি ভিড়ের চাপে । তবে একটা দেখেছিলাম "গাঁজা কালী"। যাইহোক, অনেক ভিড় আর ধাক্কা উপেক্ষা করে বড় মায়ের দর্শন করতে পেরেছিলাম। এরপরে প্রসাদ বিতরণের ওখানে চলে গিয়েছিলাম, কিন্তু প্রসাদ আর কপালে ছিল না হা হা। আসলে আমি যে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম সেটা ছিল প্রায় ৪০০+ লোকের আর আমি ছিলাম ২০০ জনের পরে আর তারপর রৌদ্রের যা তাপ ছিল তাতে দাঁড়িয়ে থাকা একপ্রকার অসম্ভব ছিল। মোটামুটি ঘন্টাখানিক দাঁড়িয়ে আর পারলাম না গরমে দাঁড়িয়ে থাকতে, ফলে তারপর চলে এসেছিলাম সেখান থেকে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরাস্যামসুং গ্যালাক্সি M33 5G
লোকেশননৈহাটী
তারিখ১৩ নভেম্বর ২০২৩


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

দাদা আজকে তো দেখছি একেবারে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। তাও আবার কালীপুজোর পরের দিন তুলেছিলেন। এই ফটোগ্রাফি গুলো বিশেষ একটা স্থান থেকে তুলেছেন এটা বুঝতেই পারছি দেখে। আপনাদের ইন্ডিয়ার বিখ্যাত একটি পুজো। নৈহাটির থেকে তোলা এই আলোকচিত্র গুলো আমার কাছে জাস্ট অসাধারণ এবং মনোমুগ্ধকর লেগেছে। বড় মায়ের এই পুজোটা সব সময় হয় জেনে খুব ভালো লাগলো। অনেক বছর ধরেই দেখছি এই পুজোটা হয়ে আসছে। তবে এটা শুনে খারাপ লাগলো, আপনি প্রসাদ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন কিন্তু প্রসাদ আর পাননি। এত বেশি মানুষের মাঝে আপনি প্রসাদ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন এটা শুনে তো আমি অবাক। রুদ্রের তাপের কারণে, সেই সাথে মানুষের ভিড় তো আছেই, এসবের কারণে আর সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে চলে এসে ভালোই করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে এই ফটোগ্রাফি গুলো সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। অনেক বেশি ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট।

 2 months ago 

নৈহাটির বড় মা পূজা সম্পর্কে কখনো শুনিনি, তাই একেবারে আইডিয়া ছিলো না এই ব্যাপারে। যাইহোক এই পোস্টটি পড়ে এই ব্যাপারে জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো দাদা। তার মানে কালী পূজার পরের দিন এই পূজা হয়ে থাকে নৈহাটিতে। যেহেতু নৈহাটির এই পূজা বেশ জনপ্রিয়, তাহলে ভিড় হওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। আবার যেহেতু অনেক দূর দূরান্ত থেকে অন্য ধর্মের মানুষজনও সেখানে যায় বড় মাকে দর্শন করতে। এতো ভিড়ের মধ্যে আপনি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কিভাবে নিয়েছেন, সেটাই ভাবছি দাদা। দাদা ইন্ডিয়া আর বাংলাদেশের মানুষজন এখন পুলিশদের দাম ই দেয় না 😂। যাইহোক এতো ভিড় ঠেলে অনেকগুলো কালী মাকে দর্শন করে,শেষ পর্যন্ত বড় মাকে দর্শন করতে পেরেছেন, এটা জেনে সত্যিই খুব ভালো লাগলো দাদা। বড় মাকে দর্শন করতে না পারলে তো সেখানে যাওয়াটা একেবারে বৃথা হয়ে যেতো। এতো কষ্ট করে ফটোগ্রাফি গুলো করলেও, প্রতিটি ফটোগ্রাফি দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম। সেখানে গিয়ে কি মানদ করেছেন দাদা, সেটাই ভাবছি 😂। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

৫২ ফুট উচ্চতা, তাহলে তো বিশাল বড় প্রতিমা ভাই। যত লোকের ভিড়ের কথা বলছেন, তা যেন ছবিগুলোতেই সাদৃশ্য মিলেছে।

শুভেচ্ছা রইল।

 2 months ago 

৫২ ফুটের মত বড় মায়ের উচ্চতা এটা ভাবতেই অবাক লাগছে দাদা। নৈহাটির পুজো অনেক বিখ্যাত বুঝতে পারছি দাদা। যেহেতু দূর-দূরান্ত থেকে সেখানে মানুষ জন আসে তাইতো ভিড়ের পরিমাণ অনেক বেশি। ১০০ বছরের পুরনো এই পুজুটি সবার কাছে বেশ বিখ্যাত বুঝতে পারছি দাদা। আর বড় মায়ের দর্শন পাওয়ার জন্য এত লোকের ভিড়ের মাঝেও সবাই সেখানে যায়। আসলে বড় মায়ের দর্শন পাওয়ার জন্য সবাই এতটা ভিড়ের মধ্যেও অনেক কষ্ট করে।"ধর্ম যার যার, কিন্তু বড় মা সবার" এই কথাটি শুনে সত্যিই ভালো লাগলো। আর যেহেতু এত বছরের পুরনো পুজো তাই তো ভিড়ের পরিমাণটাও বেশি। আর এই ভিড়ের মধ্যে পুলিশকে কেউ মান্য করবে না এটাই স্বাভাবিক। কারণ সবাই তো আজকাল আগে যাওয়ার জন্যই একেবারে উপচে পড়ে। একদিকে ভিড় অন্যদিকে গরম সবমিলিয়ে একেবারে অবস্থা নাজেহাল হয়েছিল বুঝতে পারছি দাদা। যাই হোক দাদা আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 67020.32
ETH 3084.67
USDT 1.00
SBD 3.70