Steem Bangladesh Contest - Movie review || Review of Drishyam|| দৃশ্যম ছবির প্রতিক্রিয়া
Steem Bangladesh এর বন্ধুদের সাথে আমার পছন্দের একটা সিনেমার প্রতিক্রিয়া ভাগ করে নিতে চাই। আশা করি বন্ধুদের অনেকেই এই ছবিটি দেখেছেন। যারা এখনও দেখেননি, একবার দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। নেটফ্লিক্স এবং অন্যান্য মাধ্যমে ছবিটি উপলব্ধ।

ছবির নাম : দৃশ্যম।
পরিচালক : নিশিকান্ত কামাথ।
কাহিনী : জিতু যোসেফ।
ভাষা : হিন্দী।
মুক্তির বছর : ২০১৫।
দৈর্ঘ্য : ১৬৩ মিনিট।
অভিনয়ে : অজয় দেবগণ, শ্রীয়া সরন, ঈশিতা দত্ত, টাবু, রজত কাপুর এবং অন্যান্যরা।
এই ছবিটি ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মালয়ালম ছবি "দৃশ্যম" এর পূনর্নিমান। মূল ছবিটির পরিচালক জিতু যোসেফ।
বিজয় সালগাঁওকার (অজয় দেবগণ) গোয়া রাজ্যের পান্ডোলিম শহরে কেবল কানকেশনের ব্যবসা করেন। বিজয় নিজে ক্লাস ফোর পাস করে স্কুল ছেড়ে দিলেও টিভি তে ধারাবাহিক ও সিনেমা দেখে অনেক কিছু শিখেছেন। পরোপকারী ও মিষ্টভাষী হওয়ার জন্য এলাকার মানুষদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয়। স্ত্রী নন্দিনী (শ্রীয়া সরন), পালিতা কন্যা অঞ্জু (ঈশিতা দত্ত) এবং নিজের মেয়ে অনু (মুনাল যাদব) কে নিয়ে তাদের ছোটো সুখী পরিবার। অঞ্জু ক্লাস টুয়েলভ আর অনু ক্লাস সিক্সে পড়ে।
এর মধ্যে অঞ্জু একটি নেচার ক্যাম্পে যায়। সেখানে সমীর দেশমুখ (ঋষভ চাড্ডা) নামে একটি ছেলে লুকিয়ে নিজের মোবাইলে অঞ্জুর স্নান করার ছবি তোলে। এই সমীর দেশমুখ হল গোয়া পুলিশের আইজি মীরা দেশমুখ (টাবু) এবং মহেশ কাপুরের একমাত্র সন্তান। বিজয় নিজের অফিসে থাকাকালীন একদিন সমীর অঞ্জুর বাড়ি আসে এবং ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। ভিডিও ডিলিট করার বিনিময়ে প্রথমে অঞ্জু এবং তারপর নন্দিনী কে কুপ্রস্তাব দেয়। নন্দিনী এবং অঞ্জু সমীরের মোবাইল কেড়ে নিতে চেষ্টা করে, ধস্তাধস্তির সময়ে মাথায় রডের আঘাতে সমীর মারা যায়। এই সময় বিজয় বাড়ি ফেরে। এরপর বিজয় সমীরের দেহ পুঁতে ফেলে, সমীরের গাড়ি একটা জলাধারে ডুবিয়ে দেয়।
এরপর বিজয় নিজের পরিবার কে নিয়ে পানাজি যায় - সেখানে আশ্রমে নিজেদের ধর্মগুরুর বাণী শোনে, সিনেমা দেখতে যায়, হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে। সমীরের খোঁজে আইজি মীরা দেশমুখ সালগাঁওকার পরিবারের সবাইকে গ্রেফতার করে। কিন্তু পরিবারের সবাই পুলিশি জেরায় বিজয়ের শিখিয়ে দেওয়া অ্যালিবাই দিতে থাকে। এমনকি পানাজির বাসের কন্ডাকটার, হোটেলের ম্যানেজার, রেস্টুরেন্টের মালিক, সিনেমা হলের কর্মী - সবাই অজান্তেই বিজয়ের অ্যালিবাই কে সমর্থন করে। পুলিশ কে বিজয় একটা "দৃশ্যম" দেখায়। স্বয়ং আইজি একজন ক্লাস ফোর পাসের বুদ্ধির কাছে হার স্বীকার করতে বাধ্য হন।
পরে অবশ্য ছেলে সমীরের কুকীর্তি জানতে পারেন। কিন্তু বিজয়ের অ্যালিবাই এতোই সুন্দর যে তারা কিছু প্রমাণ করতে পারেন না। বিজয় ও তার পরিবার প্রমাণের অভাবে মুক্তি পায়। মীরা ও মহেশ দেশমুখের কাছে একান্তে বিজয় জানায় সমীর মৃত। কিন্তু অনেক খোঁজ করেও পুলিশ সমীরের মৃতদেহ খুঁজে পায় না।
পুলিশ বিভাগে একটা কথা চালু আছে - পারফেক্ট ক্রাইম হয় না। বিজয় কিন্তু প্রমাণ করেছেন পারফেক্ট ক্রাইম করা যায়। তবে দৃশ্যম ক্রাইম থ্রিলার নয় - দৃশ্যম ভালোবাসার গল্প। নিজের পরিবারের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করার গল্প। এক সাধারণ ব্যবসায়ী একটি খুনের প্রমাণ লোপ করলেন, আইজি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করলেন - সবই নিজের পরিবারের জন্য। শেষ পর্যন্ত আমাদের কোথাও যেন মীরা দেশমুখের জন্যও খারাপ লাগে।
ঘটনার টানাপোড়েন, নাটকীয় মুহূর্ত দিয়ে সাজানো এই সিনেমা দেখতে বসে চেয়ারে হেলান দিতে পারিনি - ১৬৩ মিনিট পিঠ সোজা করে বসে ছিলাম। এই ছবি ভারতের সেই চিরকালীন বৈশিষ্ট্য আমাদের মনে করায় - পরিবারের চেয়ে বেশি কিছু হয় না। ভালো বা খারাপ - সব সময় পরিবার আমাদের পাশে থাকে।
তিন-চার বার দেখছি দাদো❣️🙏💚
vhalo