Digital Farmer (অত্যাধুনিক কৃষক); Bangla Version.
”মুই পড়াশুনা করম নাই, তাই চাষা হই্ছম; মোর ছাওয়াক ম্যালা পড়াশুনা করাই, ডাক্তার ইজ্ঞিনিয়ার বানাইম”।
অবিরাম বাংলার বুকে এমন আত্মবিশ্বাসী কৃষক পিতা হাজারে হাজারে খুবই অনায়াসে পেয়ে যাবেন আপনি। চিরসবুজময় বাংলার কোন একটি গ্রামে গিয়ে যদি দেখেন কোন কৃষক মাথায় গামছা বেঁধে, পড়নের লুঙ্গিঁ খানি হাটুর উপর পর্যন্ত তুলে নেংটি বেঁধে, তাহার সবুজ ধান ক্ষেতের আগাছা নিড়ানী করছেন, এবং আপনি তাহাকে জিঞ্জাস করলেন, ভাইজান আপনার ছেলে মেয়ে নাই? এই বয়সে এতো পরিশ্রম করছেন, উত্তরে আপনি কি জবাব পাবেন জানেন?
”কি যে কন্ বাহে!! হামার ব্যাটা-বেটি কেন চাষারী কাম্ কইরার যাইবে, আমার বড় ব্যাটা তো ঢাকা ভার্সিটিত ম্যালা বড় সাবজেটোত পইড়ার নাকছে, আর বেটি এবার আইয়ে পাস করি, ডিগ্রিত ভর্তি হইছে।”
অবাক হলেন তো!! অবাক হবার কিছুই নেই এতে, আমাদের দেশ এমন উচ্চ মানসিকতার লক্ষ লক্ষ কৃষকের দেশ এবং সব চেয়ে মজার বিষয় কি জানেন এই সমাজে আপনি নিম্নমধ্যবিত্ত্ব, মধ্যবিত্ত্ব এবং উচ্চবিত্ত্ব সকল শ্রেনির কৃষক পিতাকেই পাবেন। কোন কোন পিতা হয়ত মাত্র বিঘা দুয়েক জমিতে চাষাবাদ করে, তার সন্তানকে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলেয়ে চলার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলার সর্বচ্চো চেষ্টা চালিয়ে যান। অনেকেই সফল হন এবং অনেকেই ব্যর্থ।
ঢাকা শহরের দশ তালা দালানের সপ্তম তালার কোন এসি রুমে বসে হয়তো আপনি, আধুনিক যুগের চমৎকারী আবিষ্কার কম্পিউটার দিয়ে আপনার অফিসের কাজ করছেন। ঘাম কি জিনিস তা হয়তোবা আপনার জানাই নাই, কারন আপনার অফিস, প্রাইভেট কার এবং বাসা সব জায়গায়তো এয়ারকন্ডিশন লাগানো। আপনি হয়তোবা, আগামী কয়েক বছেরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাবেন, কিন্তু আপনি আপনার সন্তানকে একটি বাক্য হয়তো বলতে পারবেন না!
”বাবা তুমি যে ভাবে টাকা নষ্ট করছ, তুমি কি জানো এই টাকা উপার্জন করতে আমাকে পায়ের ঘাম মাথায় ফেলতে হয়েছে”।
আপনি যদিও ভূল বসত বাক্যটি ব্যবহার করেন, আপনার সন্তান বাক্যটিতে তেমন গুরুত্ব প্রদান করবে না (যদিও আপনি বাক্যটি ভাবার্থে ব্যবহার করেছেন)। কিন্তু আপনার কৃষক পিতা, যে কিনা আপনকে আধুনিকতায় লালিত পালিত করছেন এবং আপনকে আধুনিক পৃথিবীর যোগ্য বাসিন্দা বানিয়েছেন, তিনি খুব ভালো করেই জানেন, আপনাকে এই অবস্থানে নিয়ে আসতে তার কত খানি মাথার ঘাম পায়ে পড়ে গেছে। একটা মজার বিষয় কি জানেন আপনার আমার সেই কৃষক পিতা এখন অবধি কৃষকেই থেকে গেছেন, মোটেও আধুনিক হন নাই!! তারা সামান্য স্মার্ট ফোনেই ঠিক মতো চালাতে পারেন না, তাই এখন অবধি বাটন ফোনেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, সেটাও হয়তো চালাতে ওনাদের বিরক্ত লাগে, কিন্তু কিচ্ছু করার নাই, আমাদের সাথে যোগাযোগতো করতে হবে তাই না।
ধন্যবাদ জানাচ্ছি @azircon দাদাকে কারন ওনার একটি ব্লগ আমাকে এই লেখাটি লিখতে উৎসাহি করছে। আমারা কতোই না আধুনিক হয়ে গেছি, তাই না? বর্তমান যুগের খুবই শক্তিশালী ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কলা, কাব, বাদাম ফলাচ্ছি। যাকে আমারা আবার নাম দিয়েছি ভার্চুয়াল কলা, কাব এবং বাদাম। এসব কলা বাদাম যদিওবা খাওয়া যায় না, তারপরেও এসব কলা বাদাম বিক্রি করে সত্যিকারের কলা, বাদাম আমরা ক্ষেতে পারি। হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ; We are the digital Farmer.
Not, absolutely we are not!! যেসব কৃষক পিতার কারনে আজ আমরা এতো বেশি ডিজিটাল, তারাইতো সত্যিকারের Digital Farmer. কারন তারাই সত্যিকারের আধুনিকতার সংজ্ঞাটা খুব ভালো ভাবেই জানতেন, তারা জানতেন শিক্ষা আমার সন্তানকে ভবিষ্যৎ সময়ের জন্য উপযুক্ত করে তুলবেন, তাইতো তিনি কৃষি কাজ করে আমাকে আপনাকে আধুনিক শিক্ষাই শিক্ষিত করছেন। আমাদের এই আধুনিক শিক্ষার ভিত্তি হচ্ছে, আমাদের কৃষক পিতা এবং তাহার কৃষি।
”আপনি আমি কি জানি ভবিষ্যৎ সময়ের জন্য আমাদের সন্তানদেরকে কিভাবে গড়ে তুলতে হবে, যদি না জেনে থাকি তবে চলুন নতজানু হই আমাকের Digital Farmer পিতাদের কাছে।”
JOIN WITH US ON DISCORD SERVER: