বান্ধবীর বিয়ে

in Incredible India18 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে আবারও চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও নতুন কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

বেশ কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের সাথে আমার একটি ছোটবেলার বন্ধুর বিয়ের আগের মানে আইবুড়ো ভাত ও মেহেন্দির কিছু কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছিলাম। তবে বিয়ের দিনের মুহূর্ত গুলো আপনাদের সাথে এখনো শেয়ার করা হয়নি। তাই ভাবলাম আজকে ওর বিয়ের রাতের কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।

1000348152.jpg
দুপুরে গায়ে হলুদেও গিয়েছিলাম। সেই গল্প না হয়, পরের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান উপভোগ করার পর বাড়িতে চলে এসেছিলাম কারণ বিকেলে আবার পড়ানো ছিল। পড়িয়ে ফিরতে ফিরতে রাত আটটা বেজে গিয়েছিল। তারপর বাড়ি এসে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে গিয়েছিলাম। যেহেতু বাড়ির সকলে নিমন্ত্রণ ছিল তাই বৌদিকেও সঙ্গে নিয়ে নিয়েছিলাম। যদিও বৌদির কিন্তু সেই দিন বাবার বাড়ি থাকার কথা। কারণ সেই দিন ছিল বৌদির এক জ্যেঠতুতো দিদির বিয়ে। বৌদির বাবার বাড়ির পাশের বাড়িতেই বিয়ে। সেখানে গেলেই বৌদির বেশি আনন্দ হতো। কারণ, সেখানে বৌদির অনেক ভাই, বোন, দাদা, দিদিরা থাকতো। তাই সেখানে গেলেই বৌদি অনেক বেশি মজা করতে পারতো।

তবে যে বান্ধবীর বিয়ে ছিল, তাদের বাড়ি যেহেতু অনেকটা পাড়ার মধ্যে, তাই সেখানে যেতে গেলে হেঁটে যেতে হতো। বা যাবার সময় টোটো করে যাওয়া গেলেও, আসার সময় হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হতো। তাই রাতের বেলা বিয়ে বাড়ি থেকে একা একা হেঁটে বাড়ি ফেরা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই বৌদিকে একবার বলেছিলাম যে বৌদি যদি বৌদি দিদির বিয়েতে যাই তাহলে আমার বান্ধবীর বিয়েতে যাওয়া হবে না। তবে আমি একেবারেই বৌদিকে জোর করিনি থেকে যাওয়ার জন্য। তবে বৌদি পরে নিজে থেকেই বলেছিল যে বৌদি আমার সাথে বিয়েতে ওই বান্ধবীর বাড়িতেই যাবে। আর তারপরের দিন বাবার বাড়ি চলে যাবে। বৌদির দিদি বৌভাতে কন্যাযাত্রীদের সাথে যাবে। তাহলে দুই দিকই রক্ষা হবে। সত্যিই মাঝে মাঝে বৌদিকে দেখে অনেক কিছু শিখি। কি সুন্দর সমস্ত বিষয়গুলোকে হ্যান্ডেল করে।

1000348154.jpg
যাইহোক, আমরা রেডি হয়ে নটার সময় বেরিয়েছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর একটা টোটো পাওয়া গিয়েছিল। সেটাতে করেই আমরা বিয়ে বাড়ি পৌঁছেছিলাম। বিয়ে বাড়ি গিয়ে দেখলাম ইতিমধ্যে বিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে। ওর লগ্ন খুব তাড়াতাড়ি ছিল। মেকআপ আর্টিস্ট সাজিয়ে যাওয়া মাত্রই ঐকে বিয়ের জন্য ছাদনাতলায় নিয়ে গিয়েছিল। যার ফলে বেচারা ভালোভাবে ছবিও তুলতে পারেনি। তাছাড়া সকাল থেকেই ওর শরীর টা খারাপ ছিল। সকাল থেকে বলা ভুল আগের দিন থেকেই একটু খারাপ ছিল। তবে আগের দিন হাসিখুশি ছিল। তবে বিয়ের দিন সারা দিনের নানা রিচুয়াল্সের মধ্যে ওর শরীরটা বড্ড খারাপ করছিল।

1000345339.jpg
ছাদনা তলায় বসে ওর মাথা ঘুরে গিয়েছিলাম। আমি যখন বিয়ে দেখতে যাই, তখন দেখি ওকে একটা চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে, আর একজন হাওয়া করছে। সত্যি কথা বলতে গেলে কারোর বিয়ের সমস্ত রিচুয়ালস কেউ মন দিয়ে কখনো দেখিনি। তাই যখন ওখানে পৌঁছেছিলাম, তখনো জানতাম না ওর মাথা ঘুরে গেছে। তাই হাওয়া করতে দেখে আমি ভেবেছিলাম ওটা বোধহয় ওদের বিয়ের কোন রিচুয়াল্স। এই ভাবনাটাখুব হাস্যকর ছিল। তবে ওর শরীর খারাপ টা দেখে আমি আমার এনগেজমেন্টে দিনের কথা মনে করছিলাম। কারণ এঙ্গেজমেন্ট এর দিন আমার ভীষণ প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছিল। তাই ওকে এরকম অবস্থায় দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিল।ওর কষ্টটা আমি যেন ফিল করতে পারছিলাম। নিজের একটা স্পেশাল দিন, আর তাতে যদি এরকম ভাবে শরীর খারাপ করে তাহলে কি কোন কিছু উপভোগ করা যায়! এতসব আয়োজন, ক্যামেরাম্যান....তবে বেচারা শরীর খারাপের জন্য ভালোভাবে তাকাতেও পারছিল না। তারফলে ছবিও খুব ভালো ওঠেনি।

1000345337.jpg
এরপর যেহেতু রাত হয়ে যাচ্ছিল আর আমাদের হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হতো, তাই আমরা খেতে চলে গিয়েছিলাম। খুব সুষ্ঠুভাবে খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। তাই আমরা খেয়ে দেয়ে, বান্ধবীর মাকে জানিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম।

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।