"হঠাৎ করে গ্ৰামে কাটানো একটা দিনের গল্প"
![]()
|
|---|
Hello,
Everyone,
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর বাদে আজ হঠাৎ করেই ছুটতে হলো দিদির শ্বশুর বাড়িতে। যাওয়ার তেমন কোনো প্ল্যান ছিল না, তবে দিদির শারীরিক অসুস্থতার খবর পেয়ে আজ সকাল বেলাতেই হঠাৎ করে যেতে হলো।
আসলে দিদির শ্বশুর বাড়ির দিকে কোনো একজন আত্মীয়র বিয়েতে ওদের নিমন্ত্রণ ছিলো রবিবার দিন। তাই রবিবার দুপুরেই ওরা পৌঁছে গিয়েছিলো ওর শ্বশুর বাড়িতে। তবে তার আগের দিন রাতে দিদির নাইট ডিউটি ছিলো। নাইট ডিউটি খুবই কষ্টকর হয় ওর জন্য।
ডিউটি সেরে এসে সেদিন আর বিশ্রামও নিতে পারেনি। সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে রওনা হয়ে গিয়েছিলো। সেখানে গিয়েও তেমনভাবে বিশ্রাম হয়নি, যেহেতু সন্ধ্যা বেলাতেই অনুষ্ঠান বাড়িতে যেতে হয়েছিলো।
![]()
|
|---|
এই পর্যন্ত সবই ঠিক ছিলো। তবে রাতে বাড়ি ফেরার পর থেকে শুরু হয়েছিলো বমি। বিয়ে বাড়িতে রাতে কফি ছাড়া আর কিছু খাইনি। আসলে যেমনটা আগেও জানিয়েছি, দিদি নিরামিষ খাবার খায়। তাই কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে ও খাওয়া দাওয়া করে না। তবে যেহেতু সেখানে কফির ব্যবস্থা ছিলো এবং গ্রামের দিকে অনেকটা বেশি ঠান্ডা, তাই দুই কাপ কফি শুধু খেয়ে ছিলো।
আর সেখান থেকেই হয়তো গ্যাস হয়ে গেছে, তারপর থেকে অনর্গল বমি হয়েছে সারারাত। বমি কমার ওষুধ, গ্যাস কমার ওষুধ দিলেও সাথে সাথেই তা বমি করে বের করে দিয়েছে। এমনকি সামান্য জল খাওয়ালেও সেটাও নাকি পেটে রাখতে পারে নি।
এই সমস্যা অবশ্য ওর আজকের নয়, অনেক আগে থেকেই মাঝে মধ্যেই এমনটা হয়ে থাকে। তবে অদ্ভুতভাবে মাঝখানে বেশকিছু বছর কিন্তু এই সমস্যাটা ছিল না। অনেকদিন বাদে আবার এই সমস্যা হলো।
শেষ যেইবার এইরকম শরীর খারাপ হয়েছিলো, সেই দিন ও হসপিটালে ডিউটিতে ছিলো। দুটো ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরেও বমি কমেনি। এমন কি সেই বার স্যালাইন পর্যন্ত দিতে হয়েছিলো। সেবার দাদা হসপিটালে গিয়ে উবেরে করে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলো।
![]()
|
|---|
যাইহোক সোমবার সারাদিন ওর অনেক বেশি শরীর খারাপ ছিলো। এমনকি ডাক্তার বাড়িতে এসে দেখে যাওয়ার পরেও বমি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। তার সাথে আবার সোমবার সকাল থেকেই দাদার শরীরটা বেশ খারাপ হতে শুরু করেছিলো।
আমাকে কিছুই জানাননি। যেহেতু আমি জানতাম গতকাল ওরা ফিরে আসবে, তাই রাতের দিকে ফোন করে সব ঘটনা জানতে পারি। দুটো বাচ্চা, সাথে লাগেজ এবং দুজনে মোটামুটি অসুস্থ, সবকিছু নিয়ে বাড়িতে ফেরা কষ্টকর। তাই আমাকে যেতে বললে আমিও আর না করতে পারিনি।
![]()
|
|---|
তাই সকাল বেলাতে রওনা করলাম দিদির শ্বশুর বাড়িতে। গ্রামের দিকে সময় কাটাতে আমার বরাবর ভালো লাগে। ওর শ্বশুরবাড়ি একেবারেই গ্রামের ভিতরে। ট্রেন থেকে নামার পরেও অটোতে করে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে।
![]()
|
|---|
তবে সেখানকার পরিবেশ বেশ ভালো লাগে আমার। আগে মাঝে মধ্যে যাওয়া হতো। তবে যবে থেকে দিদিরা ফ্ল্যাটে শিফ্ট করেছে, তবে থেকে আর খুব বেশি যাতায়াত করা হয় না। বহু বছর বাদে গিয়ে সকলের সঙ্গে দেখা হলো এবং একটা সুন্দর সময় কাটালাম।
দিদি এবং বাবার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি একটু ঠিক হওয়ার পরেই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সন্ধ্যার পরে ওখান থেকে বেরিয়ে আসবো। সত্যি কথা বলতে এর থেকে বেশি শরীর খারাপ হলে ওখানে থাকলে অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হবে।
সেই জন্যই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো অন্তত দমদমে পৌঁছে গেলে সমস্ত কিছুই হাতের সামনে, তাই একেবারেই চিন্তা মুক্ত হয়ে থাকা যাবে। তাই যত কষ্টই হোক না কেন, রাতের মধ্যেই দমদমে ফিরে আসা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
![]()
|
|---|
দুপুরে খাওয়া দাওয়া ওখানেই করেছি। দিদি এবং দাদা কিছুই খেতে পারেনি। তিতলি ও তাতানকে অল্প করে খাইয়ে দিয়েছিলাম।গ্রামের বাড়িতে গেলে একেবারেই ফিরতে চায় না বাচ্চারা। এটাই স্বাভাবিক।
কারণ এখানে অনেক ভালো থাকে ওরা। সারাদিন খেলাধুলা, দৌড়াদৌড়ি, নিজের বয়সি আরও কিছু বাচ্চাকে সাথে পায়, তাই ওদের থাকতেও ভালো লাগে। দিদির শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় স্বজনেরা মোটামুটি পাশেই থাকে। সেখানে একটি বাচ্চা আছে যার নাম পাপান। তার সাথে তাতান এবং তিতলির ভীষণ ভাব। সম্পর্কে ওদের ভাই হয়।
![]()
|
|---|
ওর সাথে তাতানের খুব ভালো বন্ধুত্ব। দুজন এক জায়গায় হলে সারাদিন খেলা করতে পছন্দ করে। সেই রকমই আজও অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছে দুজনে মিলে। আমরা ফিরে আসার সময় ও খুব কান্না করছিলো আমাদের সাথে আসবে বলে।
কিন্তু ও এতোটাই ছোটো যে মাকে ছাড়া এ থাকতে পারবে না। আর দিদিদের শারীরিক অবস্থাও খারাপ, তাই এই মুহূর্তে কারো আসা মানে ওদের জন্যই সমস্যার। এই সমস্ত কিছু ভেবে আর ওদের আনা হয়নি। না হলে হয়ত আজ দিদিদের সাথে ওরাও আসতো।
![]()
|
|---|
যাইহোক সন্ধ্যার পর আমরা ওখান থেকে রওনা দিয়েছি। দমদম এসে পৌঁছাতে আমাদের রাত হয়ে গেছে। আমাকে আবার কাল সকাল বাড়ি ফিরতে হবে। তবে এইখানে পৌঁছে দিয়ে খানিক নিশ্চিত হওয়া যায়, কারণ আমার বাড়ি থেকে এখানে আসতে আধঘণ্টা সময় লাগে। তাই যে কোনো সময় হুট করে দমদম আসা সম্ভব হয়। তবে দিদি শশুর বাড়িতে যাওয়াটা আসলেই কষ্টকর ও সময় সাপেক্ষ।
যাইহোক সকালটা অনেক বেশি ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়ে, সারাদিন গ্রামের পরিবেশে উপভোগ করা যায়। তবে সন্ধ্যের পর দমদম এসে পৌঁছানোর পর শরীর ছেড়ে দিয়েছে। একেবারেই কোনো কাজ করিনি, কিন্তু তবুও এক অদ্ভুত ক্লান্তি ছিলো শরীরে। তাই বেশ ক্লান্ত হয়েই পোস্ট লেখা শুরু করলাম।
বাকি ভেরিফিকেশন কিছুটা এগিয়ে রেখে আজ একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বো। বেশ ক্লান্ত লাগছে। অন্যরকম দিন কাটলো আজ, আজকে যা পরিকল্পনাও করিনি। জীবনের ক্ষেত্রে এমনটাই বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে, যা আমরা পরিকল্পনা করি না সেইগুলোই ঘটে আমাদের জীবনে।।
যাইহোক গ্রাম্য পরিবেশে কাটানো একটা দিনের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমারও ভালো লাগছে। পোস্ট পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।








Curated by : @ahsansharif