এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায়'নাকো আর!!

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ বুধবার, ২২ ই অক্টোবর ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000591082.png


পৃথিবীতে ঠিক কতগুলো দেশে ট্রাম চলে আমার জানা নেই। তবে সেই ট্রামে দূর্ঘটনা ঘটেছে শুধুমাত্র একটা। এর প্রধান কারণ ট্রাম খুব খুবই আস্তে যায়। তবে সেই দূর্ঘটনা টা এমন একজনের সঙ্গেই ঘটেছে যিনি মোটেই কোন সাধারণ মানুষ ছিলেন না। উনার ঐ দূর্ঘটনা যেমন অস্বাভাবিক তেমনই উনিনি নিজেও ছিলেন অন‍্যরকম এক মানুষ। মানুষ টার উপর আমার বিশেষ দাবি আছে। ঠিক কী কারণে আছে আমি বলতে পারব না। তবে এই মানুষ টা বাংলা সাহিত্যের কবিতা কে নিয়ে গিয়ে গিয়েছেন অন্য জায়গাই। বাংলা সাহিত্যকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয় আধুনিক কবিতার সাথে। এইজন্যই তাকে বলা হয় আধুনিক কবিতার জনক। শুধু তাই না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে উপাধি দিয়েছিলেন চির রুপময় কবি। কেউ কেউ উনাকে বলতো তিমির হননের কবি। পাশাপাশি রুপসী বাংলার কবি, নির্জনতম কবি। গুলোও তাকে বলা হতো। তবে আমি তাকে বলি একাকিত্বের কবি।

এতোক্ষণে হয়তো বুঝে গিয়েছেন আমি কার কথা বলছি। আমি বলছি কবি জীবনানন্দ দাশের কথা। আজকের দিনটা বাংলা সাহিত‍্যের একটা অন্ধকারতম দিন। ১৯৫৪ সালের এই দিনেই কবি মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম থেকেই বলি। ১৪ ই অক্টোবর কলকাতা। ট্রাম লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন কবি। হাতে ছিল ডাব। হঠাৎ ট্রামের সঙ্গে দূর্ঘটনা ঘটে। কবি মারাত্মকভাবে আহত হয়। পাজরের হাঁড় ভেঙে যায়। হাসপাতালে ভর্তি হয় চিকিৎসা চলে। টানা ৭ দিন চিকিৎসা চলার পরে অবশেষে ২২ ই অক্টোবর কবি মৃত্যুবরণ করেন। ইতি হয়ে যায় বাংলা সাহিত্যের পঞ্চ পান্ডবের এক পান্ডবের। অনেকেই বলে কবি নাকি আত্মহত্যা করেছিলেন। না হলে ট্রামের মতো যানবাহনে কেউ কখনও এক্সিডেন্ট করে না। যেটা ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি। তবে এটা আমি মানতে নারাজ।



নিজের জীবনে অনেক কঠিন সময় অতিবাহিত করেছেন কবি। নিজের ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়া। বউয়ের সাথে বনিবনা না থাকা। ছেলে মেয়েকে নিজের ইচ্ছামতো মানুষ করতে না পারা। পাশাপাশি অর্থকষ্ট তো ছিলই। এতোকিছুর পরেও কবি কবিতা লিখে গিয়েছেন একমনে। রচনা করেছেন অসংখ্য সব অনবদ্য কবিতা। তিনি আর যাইহোক আত্মহত্যা করতে পারেন না। জীবনান্দের কবিতা আমার পছন্দের অন‍্যতম কারণ তার সেই অসাধারণ অনূভুতির বহিঃপ্রকাশ। জীবনানন্দ যখন তার আকাশলীনা কবিতায় বলে

সুরঞ্জনা ঐ খানে যেও নাকো তুমি
বলো নাকো কথা ঐ যুবকের সাথে

তখন মনে হয় এই কথাটা যেন আজকের কোন যুবক বলছে তার প্রেমিকা কে উদ্দেশ্য করে। যে তুমি ঐ যুবকের সাথে কথা বলো না ওখানে যেও না। আবার উনি যখন বলছেন

পৃথিবীর করুণ রেখা হয়ে যায় ক্ষয়
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন
মরে যেতে হয়, হয় নাকী।

জীবনানন্দ দাশ কবিতা লিখতেন রেখে দিতেন সঙ্গে সঙ্গে কখনোই প্রকাশ করতেন না। উনি প্রায় ৩৫০০ এর মতো কবিতা লিখেছেন। কিন্তু উনার ৭ টা অ‍্যালবামে প্রকাশিত হয়েছে মাএ ১৬২ টার মতো কবিতা। জীবনানন্দের কবিতা আমার ভালো লাগার অন‍্যতম প্রধান কারণ তার কবিতার মধ্যের সেই বিশেষ ব‍্যাপার যেটা একজন মানুষ কে পুরোপুরি তার সত্ত্বার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। জীবনানন্দ কখনোই পৃথিবীর রুপ দেখতে চাইনি। কারণ সে দেখেছিল বাংলার রুপ। বাংলার এই প্রকৃতিকে উনি ভালোবেসে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। উনি এই বাংলায় আবার ফিরে আসতে চেয়েছেন শালিকের বেশে। উনি ফিরতে চেয়েছেন কিশোরীর পায়ের ঘুঙুর হয়ে। কবির মৃত্যুদিনে তাকে স্মরণ করছি।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png