প্রকৃতির কোলে কাশফুল বনে দুই বান্ধবীর আনন্দময় মুহূর্ত ☀️।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে কাশফুল বনে দুই বান্ধবীর বিকেলের আনন্দময় ভ্রমণের অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

আমাদের বাড়ির পাশে একটি সুন্দর কাশফুলের বন আছে, সেখানে যেতে সময় লাগে মাত্র দশ মিনিট। প্রতিবার শরৎ এলে দূর থেকেই চোখে পড়ে সাদা তুলোর মতো দুলতে থাকা কাশফুলগুলো। মনে হয় যেন প্রকৃতি নিজেই তার ক্যানভাসে সাদা রঙে এক নিখুঁত ছবি এঁকে রেখেছে। একদিন বিকেলে, হঠাৎ করেই আমি আর আমার প্রিয় বান্ধবী ঠিক করলাম।আজ আর দেরি নয়, কাশফুলের সঙ্গে কিছু সুন্দর ছবি তুলতেই হবে। বিকেলের সোনালি আলোয়, কাশফুলের সাদা সমুদ্রের মাঝে নিজেদের হারিয়ে ফেলার ইচ্ছে তখন দুজনের চোখে-মুখে স্পষ্ট।

ঘর থেকে বেরিয়ে দুজন একসাথে হাঁটতে লাগলাম গ্রামের পথ ধরে। চারপাশে হালকা রোদ, মাটির গন্ধ আর বাতাসে শরতের শীতলতা। রাস্তার পাশে পাখিরা গান গাইছে, গরুর ঘণ্টার শব্দ ভেসে আসছে দূর থেকে। মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি যেন আমাদের ডাকছে তার কাছে। আমরা হাঁটতে হাঁটতে গল্প করছিলাম, হাসছিলাম।যেন শৈশবের দিনগুলো ফিরে এসেছে। কোনো চিন্তা নেই, কোনো দায়িত্ব নেই, শুধু আনন্দের এক মুক্ত সফর।

কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম নদীর ধারে। নদীর পাশে যতদূর চোখ যায়, শুধু কাশফুলের সাদা মেঘের মতো বিস্তার। বাতাসে দুলছে ফুলগুলো, রোদে ঝলমল করছে তাদের কোমল পাপড়ি। নদীর নীল জল আর কাশফুলের সাদা রঙ একসাথে মিশে যেন এক অনবদ্য রূপ ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা দুজনই কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে শুধু তাকিয়ে রইলাম সেই সৌন্দর্যের দিকে। মনে হচ্ছিল, যেন কোনো স্বপ্নরাজ্যে এসে পড়েছি।যেখানে কোলাহল নেই, আছে শুধু নীরব সৌন্দর্যের ছোঁয়া।

তারপর শুরু হল আমাদের রং বেরঙের ছবি তোলার পালা। বান্ধবী আমার হাতে কাশফুল গুঁজে দিল, আমি আবার ওর হাতে একটা ফুল দিলাম। একে অপরের হাসির মাঝে ফুটে উঠল প্রকৃত বন্ধুত্বের মিষ্টি বন্ধন। মাঝে মাঝে নদীর হালকা বাতাস এসে কাশফুলগুলোকে দোলাতে লাগল ।আর আমাদের হতে থাকা কাশফুল উড়তে লাগলো।যেন আনন্দে মিশে গেল পুরো প্রকৃতি। সেই মুহূর্তগুলো এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, মনে হচ্ছিল সময় যেন থেমে গেছে আমাদের জন্য।

আমরা বসে পড়লাম নদীর পাড়ে। সূর্য তখন আস্তে আস্তে পশ্চিমে হেলে পড়ছে। কাশফুলের সাদা পাপড়িতে সোনালি রঙের আলো পড়ে চারপাশটা যেন রূপকথার মতো লাগছিল। আমরা দুজন চুপচাপ বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করছিলাম। কোনো শব্দ ছিল না, শুধু বাতাসের মৃদু শব্দ আর পাখিদের কিচিরমিচির। তখন মনে হল, জীবনের আসল আনন্দ আসলে এই রকম নিরব, সহজ আর স্বাভাবিক মুহূর্তেই লুকিয়ে আছে।

সন্ধ্যা নামার আগে আমরা ফিরে এলাম বাড়ির পথে। ফিরে আসতে আসতে মনটা এক অদ্ভুত শান্তিতে ভরে গেল। কাশবনের সেই বিকেল, নদীর ধারে সেই নরম আলো, আর দুজন বান্ধবীর নির্ভেজাল হাসি।সবকিছু মিলিয়ে যেন একটা মিষ্টি গল্প হয়ে গেল আমাদের জীবনের। আজও যখন চোখ বন্ধ করি, সেই কাশফুলের বনের সৌন্দর্য, নদীর কলতান আর সেই বিকেলের হাসিমুখগুলো মনে পড়ে যায়। মনে হয়, যদি আবারও একদিন ফিরে যেতে পারতাম সেই সাদা ফুলের সমুদ্রে।প্রকৃতির কোলেই খুঁজে পেতাম জীবনের আসল আনন্দ।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।