এক প্রিয়জনকে শেষ বিদায়।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
পৃথিবীর এক অবধারিত সত্য হলো মৃত্যু। জন্ম আছে বলেই মৃত্যু আছে। এটাই সৃষ্টির নিয়ম। মানুষ যত শক্তিশালী হোক, যত সম্পদের মালিক হোক, কিংবা যত ক্ষমতার অধিকারী হোক, শেষ পর্যন্ত একদিন তাকে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে হয়। ঠিক সেই চিরন্তন সত্যের মুখোমুখি হলাম গতকাল গভীর রাতে। রাত বারোটার দিকে খবর পেলাম, আমার চাচী শাশুড়ি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
তিনি আমাদের পারিবারিক আত্মীয় হওয়ায় তাঁর জানাজায় অংশ নেওয়া এবং শেষবারের মতো দেখা আমাদের মানবিক, সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। কিন্তু ঢাকায় চাকরি করি বলে হঠাৎ করে গ্রামের দিকে যাওয়া আমার জন্য বেশ কঠিন। তবুও মৃত্যুসংবাদে মানুষের মন স্থির থাকতে পারে না। তাই সকাল সকাল সিদ্ধান্ত নিলাম, আজই রওনা হবো।
সকাল আটটার দিকে স্ত্রী-সন্তানসহ সোহাগ পরিবহনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। সাধারণত আমি ট্রেনে ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করি, কারণ ট্রেন আরামদায়ক এবং ঝামেলাও কম। কিন্তু আমাদের দেশে আকস্মিকভাবে ট্রেনের টিকিট পাওয়া সত্যিই দুরূহ কাজ। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাসেই যেতে হলো।
ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাস্তা মোটেই আরামদায়ক নয়, যানজট, ধুলাবালি, ছোট-বড় অনিরাপদ রাস্তা পেরিয়ে যেতে হয়। আর নুসাইবাকে নিয়ে বাস ভ্রমণ আমার জন্য সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। সে ঘুমিয়ে থাকলে পথ ভালো কাটে, আর যদি জেগে থাকে তাহলে ভ্রমণটাই কষ্টকর হয়ে যায়। তবুও পরিস্থিতির কারণে এইবার আর উপায় ছিল না।
দুপুর বারোটার দিকে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছাই। বাসায় পৌঁছে দেখি, চাচীর লাশ গোসল করানো হচ্ছে। সেই দৃশ্য হৃদয়কে ভারী করে দিলো। কিছুক্ষণ পরই তাঁকে জানাজার জন্য প্রস্তুত করা হলো। আমরা সবাই মিলে জানাজার ময়দানে গেলাম। যোহরের নামাজ শেষে চার তাকবীরের জানাজা সম্পন্ন হলো। মানুষের ভিড়, দোয়া, কান্না সব মিলিয়ে পরিবেশটা খুবই বেদনাময়।
এরপর চাচীকে কাঁধে করে কবরস্থানে নেওয়া হলো। কবরের মধ্যে আস্তে করে শুইয়ে দিয়ে সবাই শেষ বিদায় জানালাম। মাটি চাপা দেওয়ার পর চারদিকে নীরবতা নেমে এলো। মৃত্যুর এই মুহূর্তে জীবনের ক্ষণস্থায়িত্ব যেন আরও বেশি অনুভব করা যায়। সবাই মিলে ক্ষমা চেয়ে তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করলাম।
আজই ঢাকায় ফিরে আসার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আগামীকাল একটি জরুরি কাজ থাকায় থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হলো। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল দুপুর বারোটার দিকে তিতাস ট্রেনে ঢাকার পথে রওনা দেবো। ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে,এটাই স্বস্তি।
জীবন এভাবেই চলে কখনো আনন্দে, কখনো দুঃখে। মৃত্যু আমাদের শেখায়, পৃথিবীতে কিছুই স্থায়ী নয়। শুধু আমাদের কাজ, আমাদের আচরণ, আর আমাদের স্মৃতিই মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকে।
আল্লাহ আমার চাচী শাশুড়িকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন-আমিন। এবং আমাদের সবাইকে মৃত্যুর কঠিন বাস্তবতা স্মরণ করে জীবনকে সঠিক পথে পরিচালনার তাওফিক দান করুন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















