টাকা থাকলেই সব পাওয়া যায় না গ্রামে😔

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগ বাসি বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি ভালো আছেন আমিও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনাদের আশীর্বাদে ভালো আছি। টাকা থাকলেই সব পাওয়া যায় না কয়েকদিন থেকে এই জিনিসটি উপলব্ধি করলাম এবং বুঝতে পারলাম তাই ভাবলাম আপনাদের সঙ্গে একটু শেয়ার করি বিষয়টা।

PhotoCollage_1716224512723.jpg

গ্রামে থাকলে চাইলেও পছন্দের জিনিস পাওয়া যায় না।হাস্যকর হলেও সত্যি যে আমি গত তিনদিন থেকে এ দোকান তো ও দোকান ঘুরছি কিন্তুু বেদেনা ও কালো আঙ্গুর পাচ্ছি না।
গত পরসুদিন মেয়েকে স্কুলে দিয়ে স্থানীয় ফলের দোকান টি বন্ধ পেয়ে গেলাম উপজেলায়। উদ্দেশ্য বেদেনা ও কালো আঙ্গুর কিনবো।
মেয়েকে স্কুলে দিয়ে গিয়ে পড়লাম বিপাকে সাড়ে নয়টা বেজে গেছে কিন্তুু একটিও ফলের দোকান খোলেনি।

কি আর করার একটি গালামালের দোকান খোলা পেয়ে মেয়ের পছন্দের চিপস, ফুলক্রিম গুড়া দুধের প্যাকেট, সাবু কিনলাম এরপর পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে গিয়ে কিনলাম একটি নারিকেল।

PhotoCollage_1716225143484.jpg

ঘুরে ফিরে আবার ফলের দোকানের কাছে এসে দেখি তখনও দোকান খোলেনি। পরিচিত এক দাদার দোকানে বসে থাকলাম আধা ঘন্টা। এরপর আবার গেলাম সেই ফলের দোকানে গিয়ে দেখি একটি দোকান খুলেছে মাত্র। সেখানে খোঁজ করে পেলাম না কালো আঙ্গুরও বেদেনা।বাকি সব ফল থাকলেও বেদেনাও আঙ্গুর নেই। হতাশ হয়ে অপেক্ষা করতে রাখলাম বাকি সব ফলের দোকান খোলা। একটু পরে একে একে সব ফলের দোকান খুলল কিন্তু বেদেনা ও কালো আঙ্গুল পেলাম না। কি আর করা টুকিটাকি প্রয়োজন সেরে চলে আসলাম স্কুলে। স্কুল থেকে ফেরার পথে একটি ফলের দোকান ছিল সেখানে যাওয়া হয়নি ওই দোকানে খোঁজ নিলাম গিয়ে সেখানেও নিরাস হলাম।
ভাবলাম এখানে পাওয়া যাবে না গাইবান্ধার পথ এই রওনা দেই। এরপর আজকে গিয়েছিলাম গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে। গাইবান্ধায় সব ফল পাওয়া সম্ভব কিন্তু আমার বাড়ি থেকে তো অনেক দূর জেলা শহর।

বেদেনা ভর্তি গাছ আমার। আমার নিজের হাতে লাগানো বেদেনা গাছেই অনেক বেদেনা ধরেছে,কিন্তু পরিপক্ক হয়নি এখনো। তাই সেসব বেদেনা আমার কোন কাজেই আসবেনা।নিচের ফটোগ্রাফিতে দেখুন আমার গাছের বেদেনা।

PhotoCollage_1716261194451.jpg

গাইবান্ধায় গিয়ে সব দোকানে দোকানে সুন্দর সুন্দর বেদেনা আঙ্গুর দেখতে পেলাম। ঝটপট আঙ্গুরও বেদে না কিনলাম। কিনে মা মেয়ে পার্কে ঢুকলা। পার্কে ঢোকার একমাত্র কারন আমার মেয়ের ফুচকা প্রীতি।ফুচকার প্রতি অসম্ভব দুর্বলতা আমার মেয়ের। গাইবান্ধা গেলেই ফুচকা খাবেই খাবে। অনেকদিন থেকে খাওয়া হয়না ফুচকা তাই ওকে নিয়ে গিয়ে অর্ডার দিলাম ফুচকা। এক প্লেট ফুচকা ও খেতে পারে না তাই হাফ প্লেট অর্ডার করলাম । এদিকে আমি তো ফুচকা খাই না তাই আইসক্রিম নিলাম একট। আমার আইসক্রিম দেখে মেয়েও হয়তো বায়না ধরবে তাই ওরও একটা নিলাম ছোট্ট আইসক্রিম। মা মেয়ে বসে আইসক্রিম খাচ্ছি

PhotoCollage_1716224512723.jpg

হঠাৎ অটোওয়ালার ফোন। যে অটোতে এসেছি ওই অটোতেই ফিরব তাই বলেছিলাম বাড়িতে যাওয়ার সময় যেন আমাকে ফোন করে। পার্কের গেটেই এসে ফোন করেছিল।অটোতে উঠে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। ভালোই আসছিলাম হঠাৎ লক্ষ্য করলাম অটো টি একদম স্লো যাচ্ছে। কারণ অটোতে চার্জ নেই। গত রাত্রে বাতাস বৃষ্টি হয়েছিল জন্য কারেন্ট আসেনি সারারাত। আর অটোতে কেউ চার্জ দিতে পারেনি।

অটো শূন্য রাস্তা বলা যেতে পারে। রাস্তায় রাস্তায় অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে কিন্তু অটোর দেখা নাই থাকবেই বা কি করে অটো নিয়ে তো বেরোতেই পারেনি অটোওয়ালারা। ভাবছিলাম চার্জ না থাকুক ভাগ্যিস তবুও পেয়েছি অটোটি নইলে মনে হয় গাইবান্ধা থেকে হেঁটে রওনা দিতে হতো।অটোতে আসছি আর মনে হচ্ছে গরুর গাড়িতে বসে আছি হাসি পাচ্ছিল অনেকে এভাবে আসতে। মাঝে মাঝে অটো আবার পাঁচ মিনিট করে রেস্ট নিচ্ছিল রাস্তায়।দেড় ঘন্টার রাস্তা তিন ঘন্টা লেগে গিয়েছিল।অটোর যাত্রী আমরা দুই মা মেয়। অবশ্য অটোওয়ালা অনেক চেষ্টা করেছিল আমাকে অন্য অটোতে তুলে দেয়ার জন্য কিন্তু কোন অটোয়াওলাই আমাকে নিতে রাজি হয়নি কারণ তাদের অটোতেও চার্জ নেই। যাত্রী বেশি হলে নাকি অটো একদমই টানতেই পারেনা। তারা বলছিল আমরা তো নেব না আমাদের দু একটা যাত্রী পারলে তুমি নিয়ে নাও। কি আর করাই এভাবেই আসলাম। সময় অনেক লেগে গেল।ভেবেছিলাম যেহেতু গাইবান্ধায় আজকে কোন কাজ নেই শুধু ফল নিয়েই চলে আসবো খুব তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসতে পারবো কিন্তুু অন্যদিনের থেকে বেশি সময় আজকেই লেগে গেল। জন্যই বলে বিপদ কখনো বলে কইয়ে আসে না। যাক তবুও আমার প্রয়োজনীয় ফলগুলো কিনতে পেরেছি এটাই সার্থকতা কষ্টের।

আসার সময় ভাবছিলাম আসলে টাকা থাকলেই গ্রামে অনেক কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়। আর শহরে টাকা থাকলে বাঘের চোখে মিলবে এরকম অবস্থা। এসব ভাবনা ভাবতে ভাবতে বাড়িতে চলে এসেছি। হাতমুখ ধুয়ে খেয়ে দিয়েছি একটা ঘুম কারণ ফোনে চার্জ ছিল না।একটু পর কারেন্ট আসলে দ্রুত ফোন চার্জে দিয়ে চার্জ করে নিয়ে দিনের যে কাজ হয়নি তা করার চেষ্টা করলাম একটু একটু করে। এখন ভাবলাম পোস্ট তাই এই ঘটনাটি শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। কেমন লাগলো আপনাদের আমার ফল কেনার ভোগান্তির ঘটনাটি অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। এর মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240518_204802.jpg

Sort:  
 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু,আমি আপনার ভাইয়াকে বলেছিলাম স্ট্রবেরি নিয়ে আসতে। কিন্তু উপজেলা বাজার হওয়া শর্তেও স্ট্রবেরি পায় নি। এমনিতে সিজনে ছিল এখন হয়তো নেই। আর এমন অনেক কিছু আছে যেগুলো সচরাচর পাওয়া যায় না,খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসতে হয় । মা মেয়ে মিলে তাহলে ফুচকার খোঁজে চলে গেলেন।আমার নিজেরও ফুচকা খুব পছন্দ। তাই গতকাল বিকেলে হঠাৎ ফুচকা খেতে মন চেয়েছিল,বৃষ্টিও হচ্ছিল।উপকরণ কিছু বাসায় ছিল তাই বানিয়ে খেয়ে ফেলেছিলাম,অসম্ভব মজা হয়েছিল।

 2 years ago 

বাসায় বানানো ফুচকা খুব তৃপ্তি সহকারে খাওয়া যায় আপু।অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে গ্রামীন পরিবেশের ছোট্ট ছোট্ট দোকানগুলোতে আপনি চাইলে সবকিছু পাবেন না। বেদেনা কালো আঙ্গুর যেগুলো অনেক দামি ফল গ্রামের মানুষ যেটা খুব কম খায়। সেজন্য হয়তো আপনি কোন দোকানে ফল দুটি পাননি। একদম ঠিক বলেছেন টাকা থাকলেও অনেক সময় অনেক কিছু পাওয়া যায় না অবস্থান বেঁধে। আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্রামীণ পরিবেশে দোকানগুলোতে চাইলেও সব ফল পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলেই টাকা থাকলে সব সময় সবকিছু পাওয়া যায় না।বিশেষ করে গ্রামে কোন কিছু কিনতে হলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায় না তখন অন্য জায়গা থেকে কিনতে হয় এবং বিরম্বনার শিকার হতে হয়। উপায়ন্ত না হয়ে অন্য জায়গায় ছুটতে হয়।বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরে গাইবান্ধা গিয়ে ফল কিনতে পেরেছো জেনে ভালো লাগলো।তোমার কষ্ট সার্থক হয়েছে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন কষ্ট সার্থক হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু , এখনো অনেক জায়গায় বিভিন্ন ধরনের জিনিসগুলো পাওয়া যায় না। বলতে গেলে আমাদের যখন যেটা প্রয়োজন তখনই মনে হয় যেন সেটা পাওয়া যায় না। আপনি দেখছি বেশ কষ্ট করলেন ফলগুলো কেনার জন্য। কিন্তু এতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করার পরেও দেখছি ফলের দেখা মিলল না। আবার আসার সময় দেখছি অটাতেও সমস্যা। শহরে কিন্তু যে কোন জিনিস ইন্সট্যান্ট পাওয়া যায়।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

বেদেনা ও কালো আঙ্গুর গুলো সচরাচর সবাই কম কেনে। তাইতো এগুলো ছোট ছোট দোকানগুলোতে কম পাওয়া যায়। তবে শহরের দোকানগুলোতে এগুলো সব সময় পাওয়া যায়। আপনার মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আপনি প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য ঘোরাঘুরি করেছেন জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু বেদনা ও কালো আঙ্গুলগুলো সচরাচর সবাই কম কেনে এজন্য গ্রামের দোকান গুলোতে এই ফালগুলো রাখেন না। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

গ্রামে হয়তো বেদেনা ও কালো আঙ্গুর এর চাহিদা খুব বেশি একটা নেই, এজন্য পাননি দিদি। তবে দিদি, আপনাদের মা-মেয়ের অটোতে করে বাড়ি ফেরা নিয়ে যথেষ্ট ভোগান্তি হয়েছে যা দেখছি। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত সব ফল কিনে নিয়ে যে সুস্থ ভাবে বাড়ি আসতে পেরেছেন, এটাই তো বড় কথা।

 2 years ago 

হ্যাঁ দাদা অনেক ভোগান্তিতে পড়েছিলাম বাড়িতে আসার পথে। কিনে সুস্থ ভাবে বাড়ি আসতে পেরেছি এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে অসংখ্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু আমরা যখন গ্রাম অঞ্চলে যাই তখন দরকারের সময় কোন জিনিসই পাওয়া যায় না। টাকা থাকলেও হাজার চেষ্টা করলেও জিনিসগুলো আমরা কাজের সময় পাই না। নিজের দরকারি জিনিস যখন না পাই তখন খুবই খারাপ লাগে। আর চাইলেও শহরে গিয়ে সে জিনিস নিয়ে আসা সম্ভব হয় না।আপনার বাসা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে আপনি সবকিছু কিনতে পেরেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

সত্যি দিদি টাকা থাকলেই সব সময় সবকিছু পাওয়া যায় না।কিন্তু শহরে আবার সবকিছু ই মেটামুটি পাওয়া যায়। আপনি ফল কেনার জন্য গাইবান্ধা ও গেলেন।তারপরেও যে পেলেন এটা ই ভাগ্য।তবে ফেরার পথে দেড় ঘন্টার পথ তিন ঘন্টায় আসতে হলো।ভোগান্তির যেনো শেষ নেই।ধন্যবাদ দিদি অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু শহরে মোটামুটি সবাই পাওয়া যায়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্ত্যবের জন্য।

 2 years ago 

এইটা আমি হাড়ে হাড়ে টের পায় আপু যখন গ্রামে আসি। অনেক দরকারি জিনিস বা বাবুর খাবার গুলো আমি হাতের নাগালে পাই না। যেগুলো কিনতে আবার আমাকে শহরে যেতে হয়। গ্রামে থাকার সুবিধা যেমন আছে তেমন অসুবিধাও আছে। তারপরও গ্রামই ভালো লাগে আমার কাছে। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার ব্লগটি পড়ে। অবশেষে কেনাকাটা করে মেয়েকে নিয়ে পার্কে বসে ফুচকা এবং আইসক্রিম খেয়ে বাসায় ফিরেছিলাম।